বরিশালে শোকের মাসে কাউন্সিলর জামালের শুভেচ্ছা ব্যানার!

প্রকাশিত: ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২৩

বরিশালে শোকের মাসে কাউন্সিলর জামালের শুভেচ্ছা ব্যানার!

তালাশ প্রতিবেদক: চলছে শোকের মাস আগস্ট। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তবে বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা বাতিল করে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এসে জাতীয় শোক দিবস পুনর্বহাল করে। টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি প্রতি বছর শোকের আবহে নানা আয়োজনে আগস্ট মাস পালন করে। তবে দলীয় নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে প্রতি বছরই আগস্টের ভাব গাম্ভীর্য ম্লান হয়।

আগস্টের শোক দিবসকে ঘিরে শুভেচ্ছা ব্যানার ও আনন্দ উৎসব বন্ধের চেষ্টা গত কয়েক বছর ধরেই জোরালোভাবে চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে এত বছরেও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সেটা মানাতে পারেনি দলটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার এই মাসে সাধারণত দলীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শুধু শোকের কর্মসূচি পালন করা হয় আগস্টে। এবারও পুরো মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।

শোকের মাসে সকল দলীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও, বরিশালে দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইন মানছেন না দলীয় নির্দেশনা। তার আত্মপ্রচারের মহড়ায় শুভেচ্ছা ব্যানারে ম্লান হয়েছে শোকের আবহ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ৬ নং ওয়ার্ডের এ করিম আইডিয়াল কলেজ সংলগ্ন একটি ব্যানারে কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইনের আত্মপ্রচারের মহড়া দেখা গেছে। কাউন্সিলর জামাল পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে হযরত আমানত শাহ (রঃ) জামে মসজিদের কার্যক্রমের পরিদর্শন আসার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার সাটিয়েছে। ব্যানারটি নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে তুমুল ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ নিয়ে বরিশাল শহরজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী বলেন- শোকের মাসে শুভেচ্ছা ব্যানার টানানোর মতো গর্হিত কাজ করেছেন কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইন। তিনি আওয়ামী লীগের পরিচয় দিলেও মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করতে পারেনি। এমন নামে মাত্র আওয়ামী লীগ নেতাকে ধিক্কার জানাই।

দলীয় নির্দেশ অমান্য করে আত্মপ্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইন বলেন- কোন বাইন……. বলছে, কোন খা…… পোলায় বলছে। আমার অজান্তে শুভেচ্ছা ব্যানার টানানো হয়েছিল। ওটা টানানোর আধ ঘন্টার মধ্যে নামিয়ে ফেলা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এরা দলীয় ভাব গাম্ভীর্য বোঝেনা। এরা নিজেরা যা বোঝে তাই করে। শোকের মাসে শোক পালন ছাড়া সকল অনুষ্ঠান পরিহার করে আওয়ামী লীগ। কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইন যা করেছেন তা কোনভাবেই ঠিক হয়নি।

প্রবীণ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে- দলীয় নির্দেশনা আমান্য করে কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হুসাইন শোকের মাসে শুভেচ্ছা ব্যানার দেয়ায় তার বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া উচিত। নতুবা জাতীয় শোকের ভাব গাম্ভীর্য দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ