ঢাকা ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
বরিশাল অফিস :-
ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার (ইজিবাইক) নগরীতে পরিনত হয়েছে বরিশাল। ৫৮ বর্গ কিলোমিটার নগরীর সিংহভাগ সড়ক দখল করে আছে এসব অটোরিক্সা। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়কে দিব্যি চলছে ব্যাটারী চালিত হলুদ ও নীল অটোরিক্সা। আর এতে করে নগরীর জুড়েই যানজটরে নিরসনে হিমসিম খাচ্ছে বরিশাল মেট্রোপলিটন (ট্রাফিক) পুলিশের সদস্যররা।
জানা যায়, নগরীর প্রানকেন্দ্র সদর রোডে অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে ফেলায় অটোরিক্সা চলাচল শুরু হয়। গত ৩/৪ আগ থেকে তাদের অটোরিক্সার লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তির্ণ হয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এসকল ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার লাইসেন্স নবায়নের সুযোগ দিচ্ছেনা বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিকগণ।
বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বিসিসি’র দ্বিতীয় পরিষদের তৎকালিন মেয়র শওকত হোসেন হিরনের আমলে নগরীতে চালু হয় ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা।সিটি কর্পোরেশন থেকে দেড় হাজারের মত অটোরিক্সার লাইসেন্স প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে কামাল মেয়রের আমল দেশব্যাপী অটোরিক্সা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে সাবেক মেয়র কামাল নগরীতে অটোরিক্সা চলাচল অব্যাহত রাখেন। উচ্চ আদালত এবং সরকার ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা নিষিদ্ধ করলেও বিসিসি’র তৃতীয় পরিষদের মেয়র কামাল তার সময়ে অটোরিক্সার লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্স প্রদান করেন। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের তালিকাভূক্ত অটোরিক্সার সংখ্যা ২ হাজার ৬শ’ ১০টি।
বিসিসি সূত্রে আরো জানা যায়, ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সার লাইসেন্স অনুমোদন বাতিল করার সিন্ধান্ত নিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। নানা সমস্যা ও উচ্চ আদালতের আদেশ মেনেই ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সার লাইসেন্স নবায়নের উদ্যোগ নিতে অমত প্রকাশ করছেন বিসিসির যানবাহন ও লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিসিসির ২ হাজার ৬শ’ ১০টি লাইসেন্স ২০১৮/১৯ সালের নবায়ন করার অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। সেই নবায়নের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। বর্তমানে নগরী জুড়ে প্রায় ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সা নবায়ন বিহীনি চলাচল করেছে।
তবে বিসিসির বলছে, বর্তমানে ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সার লাইসেন্স সবই অবৈধ। কারন বৈদ্যুতিক সমস্যা ও উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিসিসি নতুন করে লাইসেন্স নবায়নে অগ্রসর হবেন না।
তবে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সার লাইসেন্সই এখন অবৈধ । কারন গত ৩মাস পূর্বেই প্রতিটি লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে । তাই উচ্চ আদালত থেকে অটোরিক্সা (ইজিবাইক) চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জানিয়েছেন। আদালতে সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে বিসিসি ২ হাজার ৬শ’ ১০টি অটোরিক্সার লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এবং অবৈধ এসব গাড়ি বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে হলুদ ও নীল অটোরিক্সা (ইজিবাইক) একাধীক চালক জানান, মাস ৬পূর্বে প্রায় ৪/৫শ অটোরিক্সার লাইসেন্স আটক করেছে ট্রাফিক বিভাগ। তাছাড়া নগরীতে প্রায় ৮/১০জনার একটি চক্র রয়েছে । যাদের প্রতিমাসে লাইসেন্স প্রতি ৪ হাজার ৫শ টাকা করে ভাড়া ও প্রথমে ২০হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হয় একটি লাইসেন্স নিতে হয়।
মাসুম নামে এক অটোচালক বলেন, প্রথমে ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে লাইন্সেস এনে মাসে ৪৫শ টাকা ভাড়া দি। তারপর আবার এখন ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাই। তিন মাস যাবৎ লাইসেন্স নবায়ন করেনি মালিক। তারপর ও মাসে সাড়ে ৪হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে।
তবে অবশ্য ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীল মহল জানিয়েছে, উচ্চ আদালতের দায়ের হওয়া একটি রীট এবং মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। বিশেষ করে নগরীর সদর রোড, লঞ্চঘাট, গীর্জামহল্লা, ফজলুল হক এভিনিউসহ বেশ কয়েকটি সড়কে অটোরিক্সা চলাচল করলেও। শীগ্রই এসকল রুটে অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।
এবিষয় উপ-পুলিশ কমিশনার ( ট্রাফিক) খায়রুল আলম জানান, বিষয়টি আমাদের নজরদারীতে রয়েছে। খুব শীগ্রই আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
Design and developed by Engineer BD Network