দেশজুড়ে

ঝিনাইদহে বিপাকে পাট চাষিরা!

  প্রতিনিধি ১৮ জুলাই ২০২১ , ১০:২৯:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- দেশের প্রধান অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট অন্যতম। চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকার কারণে সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা চাহিদামত পাট চাষ করতে পারেনি। ফাল্গুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা জমিতে পাট বীজ বপন করে থাকে। কিন্তু এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় তারা এ সময় জমিতে পাটের বীজ রোপন করতে পারেনি তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় অধেক জমিতে পাট আবাদ করেছে কৃষকরা।

কিন্তু এখন এই পাট চাষ হয় দাড়িয়েছে কৃষকের গলার কাটা। পানি স্বল্পতা ও কিষান সংকট নিয়ে নাজেহাল অবস্থায় দিন পার করছে ঝিনাইদহের চারটি উপজেলার পাট চাষীরা। সরেজমিন উপজেলার ধলহরাচন্দ্র, ধাওড়া, হাটফাজিলপুর সহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, এবার আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়াতে কৃষক পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে পারছেনা। বর্ষাকালে খাল-বিল,নদী-নালা বৃষ্টির পানিতে কানায়-কানায় ভরে যায়।

কিন্তু এবার বর্ষা নামলেও তা যথেষ্ট না হওয়াতে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে কৃষক ও পাটচাষীদের। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায় চলতি এবছর উপজেলার পৌর সভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে মোট ৮ হাজার ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।ধলহরাচন্দ্র গ্রামের পাট চাষি পরিক্ষিত পোদ্দার জানান, স্যালোমেশিনে সেচ দিয়ে ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করি। পাট বীজ জমিতে বুনা থেকে শুরু করে কাটা ধুয়ে বাজারে বিক্রি করা পর্যন্ত এতে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

বর্তমানে কৃষানের দৈনিক মুজুরি ৬শ থেকে ৭শ টাকা হলেও কিষানের সংকট দেখা দিয়েছে। আবার পাট কাটার পর চাষীরা গরুর গাড়ি বা মহিষের গাড়িতে করে পানি সমৃদ্ধ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে জাগ দিয়ে পাট পঁচানোর জন্য। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন। অন্যদিকে ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৮ মণ ও ফলন খারাপ হলে ২ মণ করে পাট উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। যা বর্তমান বাজারে ২৩শ থেকে ২৪শ টাকা মণ দরে বিক্রি করে নিরাশ হচ্ছে কৃষক।উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুদ মোল্লা বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে পাঠ চাষ করেছি।

ফলন আশানুরূপ হলেও পাট বুনন থেকে শুরু করে ঘরে তুলতে যা খরচ হচ্ছে তাতে কষ্টই বৃথা। তারপর আবার বাজারে পাটের দাম কম। এইবার পাটের ভাল দাম না পেলে পরের বছর থেকে আর পাট চাষ করবো না। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, এবার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। তবে কিষান সংকটের কারণে পাট ঘরে তুলতে বেশি টাকা ব্যায় হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য পেলে এই লোকসান পুশিয়ে নিতে পারবে।

আরও খবর

Sponsered content