Uncategorized

বরিশালে মাদ্রাসা অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে অধ্যক্ষ হলেন মাও: নাসির!

  প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২০ , ১:৫৮:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

: দপ্তর ম্যানেজে মোটা অংকের অর্থ বিনিময়
: নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গোপন করে নিজের নামে বেআইনী আবেদন
: অনুসন্ধান টিমকে অর্থের প্রলোভন

 

তালাশ প্রতিবেদক ॥

মোটা অংকের অর্থ বিনিময় এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে অধ্যক্ষ হলেন বরিশাল সদর উপজেলার কর্ণকাঠী ইজ্জাতুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার নারী কেলেঙ্কারীর মূলহোতা মাও: নাসির। অধ্যক্ষ পদে আসন গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মোটা অংকের অর্থ বিনিময়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি নির্ধারিত পদের জন্য জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেকে অবস্থান করাতে নানান উপায় অবলম্বন করে অভিযুক্ত এই ব্যক্তি। নারী নির্যাতন ও ইভটিজিং এর মামলার প্রধান আসামী হয়েও কোন খুঁটির জোরে মাও: নাসির অধ্যক্ষ হয়েছেন এ নিয়ে হতাশ স্থানীয় সুশীল সমাজ সহ প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা।

 

অবশ্য একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য অবৈধ কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী হালিম রেজা মোফাজ্জেলের সক্রিয় ইন্ধনে বহাল তবিয়াতে রয়েছেন জামায়াত নেতা মাও: নাসির। সরাসির তার যোগসাজেশে জালিয়াাতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদটি হাত করে নিতে কোন বেগ পেতে হয়নি তার। হালিম রেজা মোফাজ্জেল ও মাও: নাসিরের বিভিন্ন হুমকীর মুখে ভয়ে কোন কথা বলতে সাহস পায়না অসহায়ত্ব দাবী করা মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরা।

 

জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার জৈনকাছী ধরানদি গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হকের পুত্র সক্রিয় জামায়াত নেতা দুই মামলার আসামী মাও: নাসির নিয়ম বর্হিভুত প্রক্রিয়া ও দপ্তর ম্যানেজে মোটা অর্থের দেন-দরবারে এমন জালিয়াতির কর্মকা- পরিচালনা করেছেন অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে। এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ হাসিল করে নিতেও অতি চতুরতার সাথে ষড়যন্ত ও মোফাজ্জেলের প্রভাব বিস্তার করেন তিনি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের দুইজন সিনিয়র ইনডেক্স প্রভাষক কে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে বিতর্কিত নাসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে বহাল থেকেই নিজেই অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। এমনকি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মাদ্রাসা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি পাওয়ার আবেদনে প্রথম পর্যায়ে প্রার্থীতা গোপন করে ও নির্দিষ্ট তথ্য পূরনের জায়গায় নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের কার্য পরিচালনা করেন মাও: নাসির।

 

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, পরবর্তীতে সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ম্যানেজের মাধ্যেমে ওয়েবসাইট থেকে আড়াল করে রাখার মিশনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এই নাসির।

 

বিশ্বস্ত একটি সূত্রে আরো জানা যায়, জালিয়াতির প্রক্রিয়াকে বৈধ বানাতে মাদ্রাসা অদিদপ্তরের মনোনীত প্রতিনিধিকে রাজকীয় আপ্যায়নে ঢাকা থেকে বিমানযোগে আনা-নেওয়া সহ পকেট ভারীর দায়িত্ব পালন করতে ভুল করেননি তিনি। যার পরিপেক্ষিতেই প্রতিষ্ঠানের সভাপতির প্রভাব, অবৈধ অর্থ ও যড়যন্ত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদ পেতে কোন কাঠখোড় পোহাতে হয়নি তার। অভিযুক্ত সক্রিয় জামায়াত নেতা মাও: নাসির এর এমন সব জালিয়াতি ধামাচাপা দিতে অভিযোগের তীর উঠেছে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালন করা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা থেকে মনোনীত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো: জিয়াউল আহসান এর বিরুদ্ধে।

 

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারির স্মারক নং- ৫৭.২৫০০০০.০০৩.০১.০৫১.১৮.৪৬ এর একটি প্রতিনিধি মনোনয়ন প্রদান ফরমের ০৮ নং ধারায় সুস্পষ্ট উল্লেখ করা আছে যে, নিয়োগযোগ্য পদ ও কমিটি নিয়ে মামলা থাকলে সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের সুপারিশ করা যাবে না। নির্ধারিত এই আদেশনামার ০৯নং ধারায় আরও উল্লেখ আছে, মহাপরিচালক, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা-এর প্রতিনিধি হিসাবে উপরিক্ত নির্দেশনাবলী পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে প্রতিপালন ব্যতিত বেসরকারি মাদ্রাসায় শিক্ষক/কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০০৬ সালে ১৬ জুন তারিখের নং শা:৪/মামলা/৮/২৩৩/২০০৬/১৯৯১ পরিপত্র মোতাবেক মনোনীত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

এদিকে অধিদপ্তরের প্রচলিত আইনী নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোন নিয়মবলে অভিযুক্ত লম্পট মাও: নাসিরকে অধ্যক্ষ পদ প্রদান করা হয়েছে তথ্য জানতে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো: জিয়াউল আহসান এর সাথে এখন অবধি যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শুধু অধ্যক্ষ পদ না, বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান থেকে স্বার্থ হাসিল করা, মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ফান্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, কোমলমতি ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, প্রভাবশালী মহলের আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপকর্মের গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে মাও: নাসিরের বিরুদ্ধে।

 

তার এমন অপকর্মের সত্যতা এবং জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে দৈনিক আজকের তালাশ এর অনুসন্ধান টিম মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হয়নি তিনি। এসময় তিনি নিজের যোগ্যতা কে প্রমান করতে মৌখিক ভাবে নানান কৌশল অবলম্বন করেন।

 

এক পর্যায়ে -বিষয়টি চেপে যান, আমরা আমরাই তো। আপনাদের ব্যাপারটা আমি দেখতাছি, আসছেন তৈল খরচ নিয়ে যান বাকিটা রাতে দেখছি বলে- অনুসন্ধান টিমকে অর্থ প্রদানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন চাটুকার এই জালিয়াতির মূলহোতা। এ সময় টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বলেন, আপনি না নিলেও আপনাদের সাংবাদিক মহলের অনেকেই আমি চিনি, আপনাদের সিনিয়রদের সাথে আমার ওঠা বসা। নিউজ মোকাবেলার সিস্টেম আমার জানা আছে। সর্বপরি এমন কর্মকান্ডে ভুক্তভোগীরা জালিয়াতির মূলহোতা অবৈধ অধ্যক্ষ মাও: নাসিরের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান।

(অভিযোগের আরো বিস্তারিত সংবাদ জানতে চোখ রাখুন দৈনিক আজকের তালাশ এর পাতায়…)

আরও খবর

Sponsered content