অপরাধ

মেহেন্দিগঞ্জে অনুপ্রবেশকারী নেতার দাপটে বেহাল তৃণমূল আ.লীগ

  প্রতিনিধি ১১ মার্চ ২০২৩ , ১:১৯:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মেহেন্দিগঞ্জ থেকে ফিরে প্রিন্স তালুকদার ॥  এ যেন দল পাল্টানো ঐতিহ্যের রুপকথার নায়কের গল্প। বলছি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১০নং আলীমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সুযোগ সন্ধানী, পল্টিবাজ চেয়ারম্যান শেখ শহিদুল ইসলামের বার বার দল পাল্টানোর গল্প। হাইব্রিড এবং সুবিধাবাদী এই নেতার দাপটে আওয়ামী লীগের প্রকৃত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা কোনঠাসা।

একারণে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১০ নং আলীমাবাদ ইউনিয়নের তৃণমূল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতার তকমা ধারন করা সুযোগ সন্ধানী, পল্টিবাজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া, শিবির নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম জাতীয় পার্টির আমলে মাইদুল ইসলামের হাত ধরে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১০নং আলীমাবাদ ইউনিয়নের ০৮নং চরগোপালপুর ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টি পতনের পর খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের তৎকালীণ একজন প্রভাবশালী স্থাণীয় নেতার হাত ধরে আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে যান। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে তিনি এবার বিএনপি নেতা হয়ে যান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তিনি ফের আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে যান। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পরাজিত হলে তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামে যোগদান করেন। কিছুদিন না যেতেই মেহেন্দিগঞ্জের তৎকালীন সংসদ সদস্য ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী শাহ মোঃ আবুল হোসেনের পিএস জালালের মাধ্যমে ফের বিএনপিতে যোগদান করে নেতা হয়ে যান।

২০০৭ সালে বিএনপি-জামাত পতনের পর ২০০৮ সালে নির্বাচনে মাইদুল ইসলামকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষনা করে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুযোগ সন্ধানী, পল্টিবাজ শেখ শহিদুল ইসলাম ফের আওয়ামী লীগ নেতা সাজেন। নির্বাচনে মাইদুল ইসলাম হেরে যান কিন্তু তিনি আর বসে থাকেন না। তৎকালীন বিএনপির সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দীন ফরহাদের সাথে যোগাযোগ করে তার ছত্র ছায়ায় চলে যান। মেজবাহ উদ্দীন ফরহাদ বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হওয়ায় তিনি ফের আওয়ামী লীগে ফিরে যান।

২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী পংকজ দেবনাথ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার হাত ধরে পূনঃ পূনঃ আওয়ামী লীগে ফিরে বেপরওয়া রাজনীতি শুরু করে গঠন করেন আলাদা রাজনিতীর নামে সন্ত্রাসী বাহিনী। স্থাণীয়রা জানান, শহিদুল একা নয় তার ছেলে শেখ ফয়সালও অপর একটি আলাদা বাহিনী গঠন করে চাঁদাবাজি, মারধর করে জমি দখল, ঘাট দখল, মেয়েদের ইভটিজিংসহ একাধিক অপরাধ সংঘঠিত করে।

মেহেন্দিগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ হওয়ায় তিনি এমপি গ্রুপের লোক হওয়ায় তাকে বাধা দেওয়ার কেউ ছিল না। তিনি বিস্তার করেন একক আধিপত্য। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাশ্ববর্তী ভোলার পশ্চিম ইলিশায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে গিয়ে ঐ এলাকার সাধারণ নারী পুরুষের হাতে শারীরীক লাঞ্ছিত হয়েছেন।

কিছুদিন আগে সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথকে দলের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়ায় তিনি এমপির গ্রুপ ত্যাগ করে মূল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার বাসায় যোগাযোগ শুরু করেন।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১০নং আলীমাবাদ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন দুলাল, ইউপি সদস্য আজিজুল মাঝিসহ স্থাণীয় ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা বলেন, হাইব্রিড এবং সুবিধাবাদী শহিদুলের দাপটে, অপকর্মে আওয়ামী লীগের প্রকৃত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। ফলে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১০নং আলীমাবাদ ইউনিয়নের তৃণমূল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে. তাকে দল থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। এবিষয়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া, শিবির নেতা শেখ শহিদুল ইসলামের মোবাইলে (০১৭…২০) একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নাই।

আরও খবর

Sponsered content