Uncategorized

লকডাউনে অর্থনৈতিক ক্ষতিতে বাংলাদেশ

  প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২০ , ৯:০৬:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

{"effects_tried":0,"photos_added":0,"origin":"gallery","total_effects_actions":0,"remix_data":["add_photo_directory"],"tools_used":{"tilt_shift":0,"resize":0,"adjust":0,"curves":0,"motion":0,"perspective":0,"clone":0,"crop":2,"enhance":0,"selection":0,"free_crop":0,"flip_rotate":0,"shape_crop":0,"stretch":0},"total_draw_actions":0,"total_editor_actions":{"border":0,"frame":0,"mask":0,"lensflare":0,"clipart":0,"text":0,"square_fit":0,"shape_mask":0,"callout":0},"source_sid":"06336ABB-AD1D-4C78-9624-9E7364B13AE9_1587718620088","total_editor_time":395,"total_draw_time":0,"effects_applied":0,"uid":"06336ABB-AD1D-4C78-9624-9E7364B13AE9_1587718620054","total_effects_time":0,"brushes_used":0,"height":754,"layers_used":0,"width":1242,"subsource":"done_button"}

সবুজ পৃথিবীটা যে শুধুমাত্র মনুষ্যজাতির জন্য না, এখানে যে অন্য প্রানিকুল,বৃক্ষরাজি ইত্যাদির ও যে সমান অধিকার রয়েছে আমরা তা প্রায় ভুলতেই বসেছিলাম। পুরো পৃথিবীতে নামি দেশের বড় মহৎ মানুষগুলো মেতে উঠেছিল একে অন্যের প্রতিপক্ষ হবার জন্য সেটা কখনো অর্থনৈতিক ভাবে না হয় কখনো পেশীশক্তির মাধ্যমে। এমন অবস্থায় সম্ভবত প্রকৃতির প্রতিশোধ নিতে মহামারী রূপে আসল কোভিড ১৯। থামিয়ে দিল বিশ্বকে। এর হানায় পুরো বিশ্বে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৬ লক্ষ এবং মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। গত তিন মাস ধরে প্রায় সব দেশই চলে গেছে লক ডাউনে।এই অবস্থায় বিশ্বে যে অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ যে হবে তা বলার আর অপেক্ষা রাখেনা। সাথে তৈরি হতে পারে বেকারত্ব এবং ভয়াবহ খাদ্য সংকট। WHO এর মুখপাত্র বিশ্বে প্রায় তিন কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন।
আসেন এবার বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে কিছু কথা বলি। গত একমাস ধরে চলছে অঘোষিত লকডাউন। এতে প্রতিদিন আমাদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৩৫০০ কোটি টাকা। গত একমাসের লকডাউনে এই ক্ষতির হিসেব করলে যার পরিমান দাড়ায় প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। এর ভিতরে শিল্প, কৃষি ও সেবা খাতেই ক্ষতির পরিমান টা বেশি। যাতে ভেঙে পড়বে আমাদের জিডিপি।
সরকার ইতিমধ্যে ক্ষতি পূরনের জন্য তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনার পাশাপাশি অর্থনীতি সচল রাখার জন্য ৭২৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা ব্যাবস্থা করেছে। কিন্তু প্রণোদনা দিয়ে কতদিন ? আমাদের পুরো দেশের সরকারি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীর মাসিক বেতন ভাতা আসে প্রায় ১২০০০ কোটি টাকা। লকডাউন চলতে থাকলে এই বেতন ভাতা দিতেই সরকারের হিমসিম খেতে হবে। হবেই বা না কেন সরকারের আয়ের সব উৎসই বন্ধ। সরকার তো আর নতুন টাকা ছাপিয়ে এগুলো দিবে না। সকারের আয়ের রাজস্ব আয়,আমদানি- রপ্তানি খাতের আয়,সেবা খাতের আয় সবই থমকে গেছে। সিপিডি এর নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছে প্রায় ১ লক্ষকোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশে চলমান উন্নয়ন মুলক প্রকল্প, পদ্মাসেতু -মেট্রোরেলের মত মেগা প্রজেক্ট গুলো ও বাদ যাবে না ক্ষতির হাত থেকে।
এই ক্ষতির আর্থিক গানিতিক চিত্র দেখলেই বুঝা যায় আমরা কি পরিমান সংকটের দিকে যাচ্ছি। দেশের ৪ কোটি মানুষ হচ্ছে হতদরিদ্র যারা কিনা দিন এনে দিন খায়। এরা এই লকডাউনে পরেছে খাদ্য সংকট থেকে শুরু করে অন্যান্য বিপাকে। যা সামনে চলমান থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে ।
বেশি প্রভাব পরবে ৪২ লক্ষ কর্মসংস্থানের গার্মেন্টস খাত। এরই মধ্যে বায়াররা পূর্বের অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছে, আসছে না নতুন অর্ডারও। এমতাবস্থায় মালিকরা শ্রমিকদের বেতন এবং ফ্যাক্টরি কিভাবে চালাবে তা নিয়ে পড়েছে বিপাকে । বিভিন্ন গার্মেন্টস ও বেসরকারি কর্মচারীরা চাকরি হারানোর আশংকা করছে। ব্যাবসায়িরা ব্যাবসা হারানোর সংকায় ভুগছে। এতে বেকারত্ব বাড়বে তা বুঝাই যাচ্ছে । এদিকে রেমিটেন্স এর দিক দিয়েও মহা ক্ষতিতে পরতে যাচ্ছে দেশ। বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে এসে পরতে পারে এই রেমিটেন্স যোদ্ধারা।
এই খারাপ সময়ে ধনী শ্রেণী থেকে নিম্নবিত্ত শ্রেণী সবাই সরকারের কাছে সাহায্য চাইবে। ধনীরা নিবে প্রনোদনা নামে আর নিম্নবিত্তরা নিবে ত্রান নামে। কিন্তু মধ্যবিত্তরা কি করবে? যারা নিজেদের চক্ষুলজ্জায় তাদের কষ্টের কথাগুলো বলতে পারে না বা যারা হাত পাততে পারে না। এরই মধ্যে যদি ঐ পরিবারের কর্মক্ষম ব্যাক্তিটা বেকার হইয়ে যায় তাহলে তাদের কষ্টের আর অন্তরায় থাকবে না। মধ্যবিত্তদের চোখের পানি অদেখাই রয়ে যায়।
বলাবাহুল্য এক অনিশ্চিত ভবিশ্যৎ এর দিকে আমরা যাচ্ছি। কি হবে তা বলা যাচ্ছে না। মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে যাবে সাথে সাথে মিতব্যায়ী ও হবে। অর্থনীতি যেভাবে ভেঙে পড়ছে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার না হলে এই লক ডাউন কত দিন চালিয়ে নেয়া যাবে এটা এখন ভাবনার বিষয় হয়ে গেছে। হয়ত তখন সুইডেনের মত লক ডাউন না দিয়ে অর্থনীতি সচল রাখার জন্য সব খোলা রেখে হার্ডইম্যুনিটি এন্টিবডি সিষ্টেমে চলে যাবে। তবে অবশ্যই আমাদের মানুষিক ভাবে শক্ত থেকে সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে হবে।
এবার অন্য কিছু কথা বলি । করোনার শুরুতেই মেডিকেলে টেষ্ট কিট, পিপিয়াই, মাস্ক, ল্যাব সংকট, চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যাবস্থা ইত্যাদি নানা ইস্যু নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিল দেশের সরকার। ধীরেধীরে সেটা কাটিয়েও উঠছে সরকার। কিছুটা ভাল খবর ও লেখা উচিত। তাই বলতে হচ্ছে পাশের দেশ ভারতে প্রতি করোনা টেষ্টের জন্য ৮০০০ টাকার মত লাগে।যা কিনা আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত বিনামূল্যেই করা হচ্ছে। অন্যাথায় তা হতো দেশের মানুষের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতন।
খাদ্য সংকট যাতে না হয় এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে যাতে এক খন্ড জমি ও আবাদ ছাড়া না থাকে। এখন দেখা যাক আমাদের জনগনের সচেতনতা আর সরকারের সু সিদ্ধান্ত দিয়ে কিভাবে করোনা এবং করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে পারে।আর সামলাতে না পারলে কঠিন দিনগুলো অপেক্ষা করবে !!!!!

আরও খবর

Sponsered content