স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ছ্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষার খাতায় ভুল ফলাফল প্রকাশে জিপিএ-৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছে এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীর বাবা ফলাফল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সুরাহা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত এই শিক্ষার্থীর নাম আরাফাত সিদ্দিকী অহন। সে ২০১৮ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা বোর্ড স্কুল থেকে প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
ফলাফল সংশোধন চেয়ে বার বার জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দ্বারে ঘুরলেও কেউই তোয়াক্কা করছেনা। উল্টো নানা প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। এদিকে কাঙ্খিত ফলাফল না পাওয়ায় মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষার্থী ও তার পরিবার। আরাফাত সিদ্দিকী অহনের বাবা আহসান সিদ্দিকী জানায়, তার ছেলে কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা বোর্ড স্কুল থেকে ২০১৮ সালে প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই ছাত্রের ফলাফল শীটে দেখা যায় সে বাংলাতে-৯৩, ইংরেজী-৯৬, গনিত-৯৪, বাংলাদেশ ও বিশ^ পরিচয়- ৯৪, প্রাথমিক বিজ্ঞান-৯৮ ও ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায়-৭৬ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় কাঙ্খিত রেজাল্ট না আসায় ওই খাতা পূর্ণমূল্যায়ন করে দেখা যায় নিরীক্ষকদের ভুলে ৯৬ এর ¯’লে ৭৬ লেখা হয়ছে। যে কারণে ওই শিক্ষার্থীর ফলাফলে জিপিএ-৫ পায়নি। এমনকি বৃত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে আরো জানা গেছে, প্রবেশপত্রে রোল অনুয়ায়ী তার আইডি নং ১১২০১৮২০৪০১০৩৯৩০। কিš‘ কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষের দ্বায়িত্বে অবহেলায় লেখা হয়েছে ১১২০১৮২০৪০১০৩৮৭৪। এছাড়া পৌর ওয়ার্ড নং ৩ এর ¯’লে ২ উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে ওই ছাত্রের প্রবেশপত্রে নামের বানানও ভুল লেখা হয়েছে। এ বিষয়ে ওই ছাত্রের ধর্ম খাতায় ভুল যোগ করা নিরীক্ষকের দ্বায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা পাপিয়া খাতুন ভুল হয়েছে স্বীকার করে জানান, সংশোধনীর জন্য উপজেলা প্রাথমিক অফিস ছাড়া তার কিছুই করার নেই। অপর নিরীক্ষক ফয়লা বোর্ড স্কুলের শিক্ষিকা রুবিনা খাতুনও একই কথা বলে দ্বায় এড়িয়ে যান। কিš‘ এভুল নিরিক্ষক দের এখন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার। এদিকে ওই ছাত্রের পরিক্ষার প্রবেশপত্রে আইডি, রোল ও নাম সহ একাধিক ভুলের বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর কবির হোসেন ত্রুটির কথা স্বীকার করে জানান, এমন ভুল হলেও তা পরেও সংশোধন করে দেওয়া হয়। কিন্তু‘ ফলাপল প্রকাশের পর আর কিছু করার থাকে না। ওই ছাত্রের ফলাফল সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্ণা রানী সাহা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থ্যা গ্রহনের জন্য তিনি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দ্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বানু জানান, অভিযোগের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। যেহেতু সমাপনি পরীক্ষার গেজেট প্রকাশ হয়ে গেছে, তাই এখন সংশোধনী করার সুযোগ নেই। তবে খাতা নিরীক্ষকদের অবহেলার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়ে বলে যোগ করেন।