Uncategorized

কালীগঞ্জের ৩শ জন চাষীর বিকল্প পদ্ধতিতে চাষাবাদ

  প্রতিনিধি ২৪ মার্চ ২০২০ , ৭:৩৫:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ ॥

ধান উৎপাদন করে কৃষকরা ন্যায্য মূল পাচ্ছেন না। ফলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ৩শ জন চাষীবিকল্প পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদ শুরু করেছেন। তারা স্থানীয় এনজিও সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় “পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্প এর আওতায় ধান রোপন করা জমির এক কোনায় মিনি পুকুর খনন করছেন। সেই পুকুরে বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সেখানে করছেন মাছ চাষ। পাশাপাশি পুকুরের পানি সেচ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া পুকুরের চারি পাশে রোপন করছেন লাউ, বেগুন, পেঁপে, কচু, কলা, সীম, টমেটোসহ নানা প্রজাতির শাকসবজী। পুকুরের মাছ ও শাক সবজি বিক্রি করে তারা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি জমিতে উৎপাদন হচ্ছে ধান। ধানের লোকসান পুষিয়ে উঠতে কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ও সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ২টি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রামের ৩শ জন চাষী বিকল্প এ পদ্ধতিতে চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ শুরু করেছেন। সুন্দরপুর গ্রামের কৃষক চান্দু বিশ্বাস জানান, ৪৬ শতকের এক বিঘা জমিতে চাষ দেওয়া বাবদ ৩৪শ টাকা, বীজ ও বীজতলা খরচ বাবদ ৮৫০, সেচ বাবদ ২০০০ হাজার টাকা, সার, কীটনাশক, আগাছ পরিস্কার, ধানকাটা, পরিবহন, ধানঝাড়া, শ্রমিক খরচ দিয়ে মোট খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। অবশ্য আমনে সেচ খরচ কম অর্থাৎ ১ হাজার টাকা লাগে। এক বিঘা জমিতে ধান পাওয়া যায় ৩৩ মণ। যার বাজার মূল্য ৭০০ টাকা করে পাওয়া যায় ২৩ হাজার ১০০ টাকা। উৎপাদন খবর বাদে ধান থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৩১০০ টাকা। অনেক সময় এর কমবেশি হয়ে থাকে। তাহলে ধান চাষ করে কৃষকের আর কয় টাকাই থাকে? এমনটি জানান তিনি। তাই তিনি সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্পের আওতায় জমির এক কোনায় ১ শতকের একটি মিনি পুকুর খনন করেছেন। ওই পুকুরে তিনি বৃষ্টির পানি ধরে রেখেছিলেন। সেই পানি দিয়ে জমিতে সেচ দিয়েছেন। তাতে তার সেচ খরচ ২ হাজার টাকা বেঁচে গেছে। এ ছাড়া ওই পুকুরে তিনি মাছ চাষ করেছেন। পুকুরের চারিপাশে লাগিয়েছেন, কলা, বেগুন, পেঁপে,সীম, টমেটোসহ নানা প্রজাতির শাকসবজী। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তিনি বাজারে ২ হাজার টাকার মত শাকসবজী ও ৩ হাজার টাকার মত মাছ বিক্রি করেছেন। এতে তার ৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে। আবার সেচ খরচ বেঁচে গেছে ২ হাজার টাকা। চান্দু বিশ্বাসের মত মহাদেবপুর গ্রামের নাছিম মন্ডল, বেজপাড়া গ্রামের সুফল ঘোষ, সুন্দরপুর গ্রামের বজলুর রহমান, আশাদুল ইসলাম, আবদুস সাত্তারসহ দুই ইউনিয়নের ৩শ কৃষক এ পদ্ধতিতে ধান চাষ করেছেন। সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী তোফায়েল আহমেদ বলেন, তারা বিভিন্ন এলাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছেন। তিনি আরো জানান, ২টি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রামের ৩শ জন চাষীকে ভুগর্ভস্থ পানির উত্তোলন কমিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা, বোরোর পরিবর্তে রবি শস্য লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা এবং ভেজা-শুকনা পদ্ধতিতে চাষাদের আগ্রহী করে গড়ে তোলার লক্ষে কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, কৃষকের ৩৩ শতকের বা ৪৬ শতকের এক বিঘা জমির এক কোণে এক দেড় শততে পুকুর কাটা হচ্ছে। এতে তার ফসলের খুব বেশি ক্ষতি হচ্ছে না। বরং ওই পুকুরের পানি তিনি সেচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারছেন। এতে তার ২ হাজার টাকার সেচ খরচ কমে যাচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content