প্রতিনিধি ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ , ৩:২৩:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ
কালকিনি(মাদারীপুর) প্রতিনিধি :-
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষীপুর এলাকার সূর্যমনি গ্রামে স্থা,নঘাটা মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রী এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বোরহান বেপারী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনার সময় ধর্ষককে হাতে নাতে ধরলেও এলাকার মাতুব্বরেরা সালিশ মিমাংসার নামে কালক্ষেপন করে কৌশলে বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু‘ ভূক্তভোগী পরিবার উপান্তর না পেয়ে ঘটনার ১৮দিন পরে অবশেষে কালকিনি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলার খবরে গ্রাম ছেরে পলাতক রয়েছে ধর্ষক। আর মামলা তুলে নিতে এলাকার কিছু প্রভাবশালী মাতুব্বরদের দিয়ে চাঁপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এঘটনায় সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে মাতুব্বরদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালকিনি থানার ওসি তদন্ত হারুন অর রশিদ।
ভূক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী জানায়, ভূক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রী’র পিতা ২কন্যা সন্তান সহ স্ত্রীকে ছেড়ে চলেগেলে অসহায় মাতা পরিবারের খরচ যোগাতে ঢাকায় কাজ করে। আর ১৪বছরের কন্যার ঠাঁই হয় নানার বাড়িতে। অভাবের সংসারে প্রথমে তার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গলেও কয়েক বছর পরে ¯œানঘাটা মাদ্রাসায় ফের পাঠদান শুরু করা হয় । কি ন্তু মাদ্রাসায় যাওয়ার পথিমধ্যে এলাকার কালু বেপারীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী বোরহান তাকে যৌন হয়রানী করে। আর চলতি বছরের ১৬আগস্ট রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হলে কৌশলে বোরহান মাদ্রাসা ছাত্রীর ঘরে ঢুকে যায় এবং রাত দেড়টায় তাকে জোড় পূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় মাদ্রাসা ছাত্রীর মুখ চাঁপা কান্না ও ধস্তা ধস্তির শব্দে নানা নানি এসে লাইট জ্বালায় এবং ধর্ষককে আটক করে। কিন্তু‘ খবর পেয়ে এলাকার মাতুব্বরেরা এসে ন্যায় বিচারের আশ্বাসে ধর্ষককে মুক্ত করে নিয়ে যায়। কিন্তু‘ দিনের পর দিন চলে গেলেও বিষয়টির সূরাহা না করে উল্টো বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা চালায়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানায়, ধর্ষক বোরহান এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনার কারণে গ্রামের মাতুব্বরদের সাথে তার ওঠাবসা। আর সেই ক্ষমতায় সে ইতিপূর্বে বহু মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে প্রাণভয়ে চাঁপা কান্না বুকে নিয়ে বিষয়গুলো চেঁপে যায়। তবে সূর্যমনি আশ্রায়ন প্রকল্পের এক মেয়েকে ধর্ষণ করলে সেখানে তাকে জুতা পেটা ও জড়িমানা করে বাঁচিয়ে নেয় মাতুব্বরেরা। এক মেয়েকে শ্লীতাহানীর দায়ে সে জেলও খাটে। বোরহান ধর্ষণ করলে তাকে বাঁচিয়ে নেয়ার দায়িত্ব মাতুব্বরদের এই মর্মে তার সাথে মাতুব্বরদের একটি গোপন লেনদেনের চুক্তি রয়েছে যা গ্রামের সকলের জানা এবং মানা কথা। কিন্তু‘ ভয়ে বলার সাহস নাই করোর।
গ্রামটি দূর্গম এলাকায় ও থানা বহুদূরে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মাতুব্বরদের আইনই বাস্তবায়ন হয়ে আসছে এবং যারা মাতুব্বরদের হুকুম উপেক্ষা করে মামলা করে তাদের জীবনে আসে ভয়াবহতা। ফলে ধর্ষণের মতো ঘটনার শিকার হয়েও কেউ মামলা করতে সাহস পায়না।
এব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি তদন্ত হারুন অর রশীদ বলেন ‘ সময় ক্ষেপন করে হলেও যেহেতু ভূক্তভোগীরা মামলা দায়ের করেছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীকে আইনের আওতায় আনা হবে। আর কোন মাতুব্বর বাদীপক্ষকে চাঁপ প্রয়োগ করলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’