প্রতিনিধি ২৯ মার্চ ২০২৩ , ৫:০৪:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীবাহি বাস সার্ভিসের নামি প্রতিষ্ঠান সাকুরা পরিবহনের স্টাফদের বিরুদ্ধে ছিনতাইকারীদের সহযোগীতার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী উত্তম কুমার রায়। তার অভিযোগ গত ২১ মার্চ আবুধাবি থেকে দেশে আসার পর বরিশালে আসার জন্য রাজধানীর আবদুল্লাহপুরে সাকুরার বাস কাউন্টারে যান। বিদেশ থেকে আসায় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার, মূল্যবান জিনিসপত্র থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে কাউন্টারে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা সাকিব হোসেনের নিকট দুটি টিকেট নিয়ে যাত্রা করার কথা বলেন।
কিন্তু সাকিব নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে তার পূর্ব পরিচিত মাসুদ এক যাত্রীর পাশের আমাকে একটি সিট ধরিয়ে দেন। আমি না নিতে চাইলেও ওই সিটটি জোরপূর্বকভাবেই আমাকে দেয়া হয়। এছাড়া কাউন্টারে থাকা সাকিব নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, মাসুদ দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের পরিবহনে যাত্রা করে আসছে। আমরা সবাই তাকে ভালোভাবেই চিনি। অনিচ্ছা সত্বেও উত্তম কুমার ওই টিকিটে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে উত্তম কুমারের পাশে থাকা মাসুদ নামের ওই লোকটি তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে আলাপচারিতা ও কুশলাদি বিনিময় করেন।
একপর্যায়ে মাসুদ নামে ওই ব্যক্তি উত্তম কুমারকে কলা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। উত্তম না খেতে চাইলেও মাসুদ কৌশলে তাকে কলা খাইয়ে দেন। কলা খাওয়ার পর উত্তম কুমার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পড়ে জ্ঞান ফিরলে উত্তম দেখেন তার সাথে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, আবুধাবির ৩০ হাজার দিরহাম, স্বর্ণালংকার ও আইফোন, ওয়ার্ক পারমিট, পাসপোর্টসহ আনুসঙ্গিক সকল কাগজপত্র কিছুই নেই এবং তার পাশে থাকা মাসুদ নামের ওই লোকটিও আর নেই। নথুল্লাবাদে উত্তমের অপেক্ষায় থাকা তার ছেলে অমিত রায় তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অমিত বলেন, বাবাকে ওই অবস্থায় দেখে আমি পাগলপ্রায় হয়ে ত্রিপল নাইনে কল দেই। কিন্তু সেখান থেকেও কোন ধরনের সহযোগীতা পাইনি। পরে আমি দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ ঘটনায় উত্তম কুমার রায় বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে যাত্রীবাহি বাসে এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একাধিক যাত্রীরা। দ্রুততার সাথে এসব ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় না আনা হলে দিন দিন ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাবে।
কামাল হোসেন নামে নিয়মিত বাসে যাত্রা করা একজন বলেন, ব্যবসার উদ্দেশ্যে প্রতি মাসে বেশ কয়েকবার আমার ঢাকা থেকে বরিশাল ও বরিশাল থেকে ঢাকায় যাত্রা করার প্রয়োজন পড়ে। ছিনাতাইয়ের ঘটনা শুনে ভয়ে আছি। পুলিশ প্রশাসনসহ পরিবহনগুলোর কর্তৃপক্ষেরও এদিকে নজর দেয়া উচিত। নয়তো দিন দিন ছিনতাইয়ের পরিমান বেড়ে যাবে।
সাকুরা বাসে যাত্রা করা অপর এক যাত্রী জানান, বাসে যদি এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে যাত্রীদের সেবার মান বিবেচনা করে অবশ্যই ওই বাস কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এছাড়া স্টাফ নিয়োগেও সর্বোচ্চ তদারকি করা প্রয়োজন। এছাড়া প্রতিটি বাস সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার দাবিও জানান তিনি। এ বিষয়ে বরিশালে সাকুরা পরিবহনের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা তদন্ত পূবর্ক প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। রাজধানীর
আবদুল্লাহপুর বাস কাউন্টারের মাস্টার আরিফ বলেন, আমরা শুনেছি ওই যাত্রীর মানিব্যাগ ও পাসপোর্ট ছিনতাই হয়েছে। আমাদের প্রতিটি স্টাফদের জামানত ও ডিটেলস আমাদের কাছে থাকে। স্টাফদের এমন কোন কিছুর সাথে জড়িত থাকার কোন সুযোগ নেই। প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতকে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।