প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২৩ , ৫:৫০:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ইলিয়াস শেখ, কুয়াকাটাঃ সাগরকণ্যা কুয়াকাটায় প্রতিদিন নিত্যনতুন পদ্ধতিতে বনের জমি জবর দখল হচ্ছে। কোথাও কোথাও বনভূমি কেটে পাকা দালান তৈরি করছে আবার কোথাও মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করছে। শুধু তাই নয় কুয়াকাটা যেন ভূমিদস্যুদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে পরিনত হয়েছে । ভূমিদস্যুদের অবৈধভাবে জমি দখল, বালি উত্তোলনসহ সকল অপকর্মের মোটা অংকের টাকা কুয়াকাটার বনবিভাগের বিট অফিসার সেরাজুল ইসলামের পকেটে যায় বলে অভিেযাগ উঠেছে।
দিন-রাত প্রকাশ্যে পরিবেশ ও বনজ সম্পদ বিধ্বংসী এ অপকর্ম চলতে থাকলেও রহস্যজনক কারণে নির্বিকার রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সুত্র জানায়, কুয়াকাটায় মাটি বিক্রি সিন্ডিকেট ও দখলবাজ চক্র এখন বনভূমি দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে কুয়াকাটা রেঞ্জের বিট অফিসার বনবিভাগের জায়গাঁর মাটি/বালু রাতের আঁধারে কেটে লক্ষ লক্ষ টাকায় দেদারচ্ছে বিক্রি করছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশের এই বিপন্নতা নিয়ে বন বিভাগ একেবারেই উদাসীন ভূমিকা পালন করছে। বনজমি দখলদারদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ জিরো টলারেন্সে থাকার ঘোষণা দিলেও এ ঘোষণা মানতে নারাজ ফরেস্টের বিট কর্মকর্তা সেরাজুল।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুয়াকাটা রেঞ্জের মম্বিপাড়া নজির মাঝির বাড়ির বিপরিতে বনবিভাগের জায়গা কাটতে ফরেস্টের বিট অফিসারকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। সেই বালু ভেকু মেশিনের মাধ্যমে ৭/৮ টি ট্রাকে করে চায়না প্রজেক্টের কাজে ব্যাবহার করছেন তারা। তবে সেই কাজে মাটি ব্যাবহারের কথা থাকলেও ব্যাবহার করছে বালু। অপরদিকে দিনে সেই বালু না কেটে রাতের আঁধারে কাটছেন ভূমিদস্যুরা। সারারাত এ কর্মজোগ্য পরিদর্শনে যেই আসেন তাকে ম্যানেজ করতে দেয়া হয় অর্থ। তাই শুধু রাতের আঁধারেই নয় দিনের আলোতেও চোখে দেখেনা সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
এসব তথ্য সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন মিজান মেম্বার।এরআগে এই মিজান মেম্বার সরকারি সম্পত্তির মাটি চুরি করে কাটার জন্য ইউএনও অনির্দিষ্টকালের জন্য তাকে বহিস্কার করেছেন। তবে এতেও খান্ত নন তিনি। সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে বাঁধা দিতে শুরু করেন নানা তদবির। সর্বশেষ না পেরে অর্থের বিনিময়ে সাংবাদিকদের থামানো চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয় মিজান মেম্বর।
স্থানিয় বাসিন্দা খোকন (ছদ্দনাম) জানান, আমরা আজীবন শুনেছি এটা ফরেস্ট অফিসের জায়গা। এখন বলে মালিকানা। তবে ফরেস্ট অফিসের ২০০ গজের মইদ্দে মাটি কাটা হচ্ছে। বিট অফিসার বিক্রি না করলে এতো সাহস মেম্বার পায়না।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত একজন ফরেস্টার জানান- প্রতিটি এলাকায় বনভূমি দখলকারীরা স্থানীয় বিট অফিসার, রেঞ্জ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে বনভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণসহ অবৈধ দখলে নিয়ে থাকেন। তবে এই অপকর্ম ঠেকাতে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।
ফরেস্ট অফিসের বিট অফিসার সেরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও বনবিভাগের বিট অফিসার সেরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বনবিভাগের সরকারি আকাশমনি ও কড়াই গাছ দরপত্র ছাড়াই বিক্রির অভিযোগের সংবাদ দেখতে চোখ রাখুন আগামী পর্বে…….