প্রতিনিধি ১ নভেম্বর ২০২৩ , ৩:২৬:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক: চলমান মা ইলিশ নিধন অভিযানে জব্দকৃত জাল প্রকাশ্যে জনসমাগম স্থানে পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণ ও মানবদেহকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান। তার এহেন কর্মকান্ডে যেমন মানবদেহের ক্ষতি হচ্ছে, অপরদিকে পরিবেশকেও ফেলছে ঝুঁকির মধ্যে। আর এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ও ঘুরতে আসা জনসাধারণ। তারা জানান, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী সদস্যরা তাদের অভিযানের জব্দকৃত জাল কীর্তনখোলা নদীর ওপারে নির্জন স্থানে পুড়ে ফেলছে। যাতে কোন প্রকার দুর্ঘটনা ও পরিবেশের বিপর্যয় না ঘটে। অথচ ইউএনও মনিরুজ্জামান একপ্রকার খামখেয়ালি করেই এই জনসমাগম স্থলে জাল পুড়িয়ে মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মা ইলিশ নিধন অভিযান শুরু থেকেই ইউএনও মনিরুজ্জামান নিজ ক্ষমতাবলে পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে ডিসিঘাট সংলগ্ন একটি জনবহুল স্থানে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে দিচ্ছেন। যাতে পরিবেশ হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ন ও ক্ষতি হচ্ছে মানবদেহের। শুধু এটুকুই নয়, এখানে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা শিশুরাও অগ্নিদগ্ধের শিকার হতে পারে এবং কাছাকাছি লাইট পোস্ট ও বৈদ্যুতিক তার থাকায় ঘটতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ডিসিঘাট সংলগ্ন জনবহুল স্থানে বিপুল পরিমান জব্দকৃত জাল ইউএনও’র নির্দেশে পেট্টোল দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। এসময় কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে আগুনে জ্বলতে থাকা জালের সুতা কেটে নিচ্ছে, আবার ছোট ছোট বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করতেছে। এতে যেকোন সময় ঘটতে পারে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা। আর পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা তো রয়েছেই। একজন আইন প্রয়োগকারী উধ্বর্তন কর্মকর্তার এমন কর্মকান্ডে স্থানীয় ও যাতায়াতকারী একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আইনের লোক হয়ে এরকম কাজ করলে আমরা কিছু বলতে পারিনা। এখানে ছোট বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করে, যদি পা স্লিপ করে জালের আগুনে পড়ে তখন এই ঘটনার দায়ভার কে নিবে? তাছাড়া এখানে জনসাধারন যাতায়াত করে, কেউ ঘুরতে আসে কিন্তু জাল পোড়ানোর গন্ধ আর ধোঁয়াতে এখানে থাকাটাই মুশকিল হয়ে যায়। এছাড়া পাশাপাশি লাইটপোস্ট ও বৈদ্যুতিক তার থাকায় যেকোন সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে ইউএনও মনিরুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং পরে কল দিবেন বলে কল কেটে দেন। পরবর্তীতে তার মোবাইলে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, জনসমাগম স্থল বা লোকালয়ে কোন প্রকার জাল পোড়ানো যাবেনা। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হয়, অপরদিকে মানবদেহেরও ক্ষতি হয়। তিনি এই জব্দকৃত জাল পোড়ানোর পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে পরামর্শ করে নেয়া এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কাউকে সঙ্গে নেয়ারও দাবি জানান।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুম্পা সিকদার বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিলোনা। তবে বিষয়টি তিনি অবশ্যই দেখবেন।