প্রতিনিধি ২২ জুন ২০২৪ , ২:২২:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ কারা আসছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে? এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দলটির তৃণমূল থেকে নীতি নির্ধারণী ফোরামে। গত ১৩ জুন দিবাগত মধ্য রাতে বিলুপ্ত করা হয় মেয়াদোত্তীর্ণ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয় নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা। তবে দলটির তৃণমূল কর্মীদের প্রত্যাশা, দলের বিগত ‘আন্দোলন–সংগ্রামে’ যারা সক্রিয় ছিলেন তারাই নেতৃত্বে আসুক। একইসঙ্গে নতুন নেতৃত্ব হোক কর্মীবান্ধব। এদিকে নেতৃত্বে আসতে চাচ্ছেন এমন নেতাকর্মীরা ধর্না দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতাদের কাছে। নানাভাবে তদবির করছেন দলের হাইকমান্ডে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে বিলুপ্ত করা হয় মহানগর বিএনপির কমিটি। একইসঙ্গে যে কোনো মুহূর্তে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তাই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ নতুন নেতৃত্বের জন্য।
আলোচনায় যারা : বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আলী হায়দার বাবুল ও মনিরুজ্জামান ফারুক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার এবং ছাত্রদলের সাবেক নেতা, নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আফরোজা নাসরিন। এছাড়া আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন-বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবায়েদুল হক চান, সদ্য সাবেক মহানগর কমিটির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিনসহ সাবেক এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার ঘরানার কয়েকজন নেতা।
এদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। তিনি বরিশালের রাজনীতিতে নতুন হলেও আন্দোলন সংগ্রাম করে অল্প দিনে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। বিপদে আপদে নেতাকর্মী পাশে দাড়িয়ে আস্তা লাভ করেছেন। এছাড়া প্রায় প্রতিদিন প্রেস ক্লাব-ডিআরইউসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় তিনি। দলের দুর্দিনে ব্যাপক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার-মামলা-হামলার শিকার হয়েও পিছপা না হওয়ার প্রশংসাও রয়েছে সর্বস্তরে। তার প্রত্যক্ষ ভূমিকায় নেতাকর্মীরা উজ্জিবিত হয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও কারাবরণকারী প্রতিটি কর্মীর পাশে দাড়িয়েছেন তিনি।
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন- কেন্দ্রীয় রাজনীতি করলেও বিগত আন্দোলন সংগ্রামে বরিশালে রাজনৈতিক প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করি। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় নেতা কর্মিদের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক হয়েছে। আমি তাদেরকে ভালোবাসি। তারাও আমাকে ভালোবাসে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় যদি মনে করেন আমাকে কোন দায়িত্ব নিতে হবে তাহলে আমি চেষ্টা করবো অতিতের নেয় ভবিষ্যতেও সে দায়িত্ব পালন করতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সম্ভাবনা এ মুহূর্তে নেই। কেননা দলের হাইকমান্ড ভালো করেই জানে যে, যখন যারা পদে থাকেন তারা নিজেদের লোকজনকে কাউন্সিলর বানিয়ে রাখেন ভোট সামলাতে। তাছাড়া টাকা ছড়িয়ে কাউন্সিলর কিনে নেতা হওয়ার রেকর্ডও আছে। তাই নেতা নির্বাচন প্রশ্নে আন্দোলনকালীন ভূমিকার যেসব রেকর্ড রয়েছে সেগুলোর প্রতিই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে হাইকমান্ড।’
বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘সব তথ্যই আছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে। তাছাড়া এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফলতা। আমাদের মহাসচিব তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, যা করার আমাদেরই করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। সবকিছু বিবেচনায় মাঠের আন্দোলনে যারা সফলতা আনতে পারবেন তারাই আসবে নেতৃত্বে। এর বিকল্প দেখছি না। যা করার বুঝেশুনেই করবেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’