প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ১২:১৭:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক॥ বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে সাদেকুর রহমান খলিল নামের এক ব্যাক্তিকে আটক করে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এই সাদেকুর রহমান খলিলের বিরুদ্ধে কামাল আহমেদ নামের এক ব্যাক্তিকে মারধর ও খুনের হুমকির অভিযোগসহ বন্দর থানায় প্রায় হাফ ডজন সাধারন ডায়েরি রয়েছে। খলিলের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৩ জানুয়ারি বিচারের দাবিতে চরআইচা গ্রামের পোলের হাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছিলেন এলাকাবাসী।
কামাল আহমেদ ও তার ছোট ভাই ফেরদাউসের অভিযোগ- সাদেকুর রহমান খলিলের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মানববন্ধনের পর গত রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে তাকে আটক করে বন্দর থানা পুলিশ। খলিলকে আটকের খবর পেয়ে বিকেল ৪ টার দিকে থানায় যাই আমরা। থানায় গেলে ওসি (অপারেশন) ফিরোজ স্যার খলিলের বিরুদ্ধে এজাহার দিতে বলেন। তার কথা অনুযায়ী রাত ৯ টা দিকে এজাহার প্রস্তুত করে দিলে ফিরোজ স্যার আমাদের দুই ঘন্টা বসিয়ে রেখে পরের দিন যেতে বলেন। পরের দিন দুপুর দুই টায় আমরা থানায় গেলে ফিরোজ স্যার আমাদের সামনে এজাহারের কাগজটির ছবি তুলে ওসি মুকুল স্যারকে পাঠান। এর কিছুক্ষণ পর আমাদের এজাহারের কাগজটি রেখে দেন ফিরোজ স্যার। আমরা চলে আসার পর জানতে পারি ৪ টার দিকে খলিলকে ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কামাল আহমেদের দাবি- খলিলের বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ ও এজাহার দেয়ার পরেও তাকে আটক করে কিভাবে ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানো হলো? তা আমার বোধগম্য নয়। তবে এ নিয়ে বড় একটি বাণিজ্য হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: সাইদুল ইসলাম লিটন বলেন- খালেদ খান ওরফে রবিন, সাদেকুর রহমান খলিল, মিজানুর রহমান মনির, প্রিন্স মাহমুদ, রাকিব সরদার, ইমন আকন ও রাজিবুল আকন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে বিচারের দাবিতে মানববন্ধনও করেছে। এরপরেও এদের মধ্যে খলিলকে আটক করে কিভাবে ৮১ ধারায় আদালতে পাঠালো, সেটা বুঝে আসেনা। পুলিশের এমন কর্মকাণ্ড আমাদের ঝুঁকিতে ফেলেছে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরছে আর হুমকি দিচ্ছে।
ওসি (অপারেশন) ফিরোজ আহমেদ বলেন- আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। ওসি স্যার খলিলকে ডেকে এনে আটক করিয়েছে। এএসআই ফারুককে দিয়ে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে পাঠিয়েছে। এর বাইরে আমি আর কিছুই জানিনা।
এএসআই ফারুক বলেন- ওসি স্যার বলছে, তাই খলিলকে ৮১ ধারায় আদালত পাঠাই। এছাড়া আমি খলিলকে চিনিও না।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.আর মুকুল বলেন, মারধর ও হুমকির ঘটনায় জিডি করেছিলেন। জিডিতে তো আর আটক করা যায় না। খলিলকে আটকের পর তারা এজাহার দিয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব। তদন্ত না করেতো তাকে আটক করতে পারি না। তবে তাকে কেন আটক করা হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- এলাকাবসী মানববন্ধন করার কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। এর বাইরে কোন কথা থাকলে আপনি (প্রতিবেদক) ওসি (অপারেশন) ফিরোজের সাথে কথা বলেন।
উল্লেখ্য- গত ৪ জানুয়ারি বিকেলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কামাল আহমেদকে চরআইচা মেরিন একাডেমির সামনে মারধর করে ও খুনের ভয়ভীতি দেখায় সন্ত্রাসীরা। এ নিয়ে ১৩ জানুয়ারী শনিবার বিচারের দাবিতে চরআইচা গ্রামের পোলের হাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেছিলেন, খালেদ খান ওরফে রবিন, সাদেকুর রহমান খলিল, মিজানুর রহমান মনির, প্রিন্স মাহমুদ, রাকিব সরদার, ইমন আকন ও রাজিবুল আকনের জিম্মি দশা থেকে বাচতে থানায় ছয় থেকে সাতটি সাধারণ ডায়েরী ও ৪ জানুয়রির ঘটনায় বন্দর থানায় অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী একজোট হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।