প্রতিনিধি ২৪ জুন ২০২০ , ৯:০৮:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক॥ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখনো কাজ পেতেন রাজমিস্ত্রি আমির হোসেন। ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর টানা ৬০ দিন কাজ পাননি। এখন তাঁর তিন মাসের বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। স্ত্রী আর দুই সন্তানের মুখে তিনবেলা খাবার তুলে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। কাজের আশায় বাড়ি থেকে বের হলেও কাজ মেলে না। তাই বাধ্য হয়েই সপরিবার মিলে পিকআপ গাড়ি ভাড়া করে সকল মালামাল নিয়ে চলে এসেছেন গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের পক্ষিয়া গ্রামে।
আবেগতাড়িত আমির হোসেন বলেন, ‘কখনো ভাবিনি ঢাকা শহর ছেড়ে আমাকে গ্রামে ফিরে আসতে হবে। আমার খুব খারাপ লাগছে। করোনা আমার জীবনটারে একেবারে ওলট-পালট করে দিয়েছে।থ
শুধু আমির নন, এই করোনাকালে আরও বহু পেশার লোক স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে ঢাকা ছেড়ে ফিরে আসছেন গ্রামে।
গত রবিবার ঢাকার গাবতলি থেকে সপরিবার মিলে ভোলার বাপ্তা গ্রামে চলে এসেছেন রিকশা চালক সেলিম অহিদ। ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে এই রিপোর্টারের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা তার। একপর্যায়ে অশ্রুশিক্ত চোখে সেলিম জানান, লকডাউন অপেক্ষা করে শহরের অলিগলিতে কোনোমতে রিকশা চালিয়েছেন তিনি।
তবে গত ১১ মে লকডাউন অপেক্ষা করে রিকশা চালানোর অপরাধে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে স্থানীয় এক দলীয় নেতার মাধ্যমে ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে রিকশাসহ ছাড়া পান তিনি। তিনি আরও জানান, ঈদুল ফিতরে গ্রামের বাড়িতে আসতে পারিনি। এখন শুনতেছি সামনে আরও কঠোর লকডাউন ঘোষণা হতে পারে। তাই আগেভাগেই সপরিবার গ্রামে চলে এসেছি। আমার কষ্ট দেখে বাসার মালিক এক মাসের বাসা ভাড়া নেয়নি।
তবে প্রতিদিন ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট ও ভেদুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে সপরিবার মিলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে কখনো পিকআপ আবার কখনো ছোট্ট ট্রাকে করে মালামাল নিয়ে ফিরছে স্ব স্ব গ্রামে।