অপরাধ

বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা পার্কে বন্ধ বাতিতে বসে মাদকের হাট!

  প্রতিনিধি ১০ জুলাই ২০২৪ , ৪:৩০:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

রাহাত রাব্বি ॥ বরিশাল শহরের কীর্তনখোলা নদীর তীরে মেরিন ওয়ার্কশপ এলাকায় ২০১০ সালে ‘মুক্তিযোদ্ধা পার্ক’ নির্মাণ করা হয়। সম্পূর্ণ পরিপাটি করে সাজানো গোছানো এ মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি প্রাথমিকভাবে নির্মাণ করতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। ২০১০ সালের ২১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

এ স্থানটিতে দুর-দূরান্ত থেকে নানা পর্যটক ঘুরতে আসেন। তবে পার্কটিতে সন্ধ্যার পর আলো না থাকায় দেখা দেয় ঘুটঘুটে অন্ধকার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘুরতে আসা উঠতি বয়সি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ও তরুণ-তরুণীরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়। পাশাপাশি রাত বাড়লেই পার্কটিতে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবনের আসর জমে ওঠে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন ‍ঘুরতে আসা আন্যান্য পর্যটকরা।

 

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়- বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের ভিড়। পার্কের লাইটপোষ্ট গুলোতে বাতি জ্বলছে না। ফলে পার্কের মধ্যে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সেই অন্ধকারের মধ্যে উঠতি বয়সি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ও তরুণ-তরুণীরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বসে মাদকের আড্ডা ও বেচাকেনা হাট। বিষয়গুলো আচ করতে পেরে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরছেন পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।

 

এ সময় কথা হয় স্থানীয় সাকিব নামের এক যুবকের সাথে। তিনি বলেন, এই পার্কের ল্যাম্পপোস্ট গুলোতে কোনে আলো জলে না। সেই সুযোগে ঘুরতে আসা যুবক-যুবতি ও তরুণ-তরুণীরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ‘মুক্তিযোদ্ধা পার্ক’ যুবক-যুবতি ও তরুণ-তরুণীদের জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

 

শান্ত নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, পার্কটি সারাদিন স্বাভাবিক থাকলেও রাতের আধাঁর নামলেই প্রায় সময়ই কিছু বখাটে যুবকদের দেখা মেলে এবং পার্ক জনশূন্য হয়ে পড়লে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবনের আসর জমে ওঠে। বর্তমানে মাদক ও অবৈধ কার্যক্রমের জন্য নিরাপদ স্পট হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কটি।

 

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সুজন বলেন- শহরের কোলাহল থেকে স্বত্তি পেতে পরিবার নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পার্কে ঘুড়তে আসলাম। কিন্তু এসে দেখলাম পার্কটিতে আগের মত সৌন্দর্য নেই, নেই কোন বৈদ্যুতিক লাইন, হয়নি সংস্কার কাজ। সন্ধ্যার পরে বৈদ্যুতিক লাইন না থাকায় কিছু সংখ্যক মানুষ অপরাধের সাথে ছড়িয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত পার্কটি সংস্কার করা দরকার না হলে শহরের একটি বিনোদন কেন্দ্র বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

 

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে পার্ক রক্ষক ও কর্তৃপক্ষের কাউকে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। তবে পার্কের পার্শ্ববর্তী বিআইডব্লিউটিএ’র রক্ষক এক আনসার সদস্য বলেন, রাত ১০ টার পর আমাদের এরিয়ার ভিতরে বহিরাগত কেউ থাকলে আমরা বের করে দেই। তবে নদীর পাশের পার্ক এরিয়াটা হচ্ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অধীনে, ওটা আমাদের এরিয়ায় না এর জন্য আমরা অশ্লীল কার্যক্রম দেখলেও কিছু বলি না।

 

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। খুব দ্রুত পার্কের ল্যাম্পপোস্ট গুলোতে আলোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ এটিএম আরিচুল হক বলেন- আমি বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যদি এমন অসামাজিক অশ্লীল কার্যকলাপ ওখানে হয়ে থাকে। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’’

আরও খবর

Sponsered content