প্রতিনিধি ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:৩৯:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া ।। চলতি আমন মৌসুমে সার সরবরাহ না থাকায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় সার ডিলারদের দাবি সরবারহে রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। দিনের পর দিন সারের গুদাম ঘাটে ট্রাক কিংবা ট্রলার রেখেও মিলছেনা তাদের কাঙ্খিত পরিমান সার। এর ফলে প্রতিদিন লোকশান গুনতে হচ্ছে তাদের। আর সার না পেয়ে প্রান্তিক কৃষকরা পরেছে দুশ্চিন্তায়।
কলাপাড়া কৃষি আফিস ও সার ডিলার মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি সেপ্টম্বর মাসে এ উপজেলায় সরকারীভাবে ১২’শ ২৪ মেট্রিক টন সার পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বুধবার ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৪০ টন সার বরাদ্দ পেয়েছেন ডিলাররা।
এদিকে উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সার পৌছাতে বস্তা প্রতি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া ৩৫ টাকা। আগে পটুয়াখালীতে সারের গুদাম ছিল। এখন সেই গুদাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিলারদের বরিশাল থেকে সার আনতে হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে বরাদ্দ পেতে টাকা জমা দেয়ার পরেও সঠিক সময়ে সার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন অনেক বিসিআইসি ডিলাররা।
কৃষক মাসুম বিল্লা জানান, তিনি প্রায় নয় একর জমিতে আমনের চাষ করেছেন। কিন্তু গত একমাস ধরে সারে ডিলারদেও কাছে ধর্না দিয়েও তিনি সার পায়নি। আপর এক কৃষক আব্দুল হক বলেন, দোকানে গিয়েও সার পচ্ছিনা, ফসলে আবস্থাও তেমন ভাল না। আর ক্ষেতে সার দেওয়ারও সময় চলে যাচ্ছে।
লতাচাপলী ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার রুহুল আমিন জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর টাকা জমা দিলেও বরিশাল থেকে আমরা এখনও সার পাইনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান পটুয়াখালী থেকে সার গোডাউন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলেই আমরা এমন বিপদে পরেছি।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসেসিয়োশন কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও পৌর শহরের বিসিআইসি ডিলার খাঁন ট্রেডার্সের সত্তাধিকারী মো.জাকির হোসেন জানান, সঠিক সময় সার পাচ্ছিনা। এমনকি দিনের পর দিন বরিশাল ঘাটে এসে থাকতে হচ্ছে আমাদের। এর ফলে প্রতিদিন অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। সার সরবরাহ প্রতিবন্ধকতায় প্রান্তিক চাষিসহ সাব ডিলারদের মাঝেও এর প্রভাব পরেছে।
পটুয়াখালী শাখার বাফার ব্যবস্থাপক (বানিজ্যিক) মশিউর ইসলাম জানান, লাউকাঠি গুদাম ঘরটির ছাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গুদাম ক্লোজ করা হয়েছে। তবে উর্ধ্বতন মহলে সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে নতুন করে গুদাম ঘর স্থাপন করা হবে। সেই লক্ষে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে এ উপজেলায় ১২’শ ২৪ মেট্রিকটন সার পাওয়ার কথা থকালেও আমরা এখনও তা পাইনি। এ বিষয়ে আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।
বরিশাল বাফার গুদাম ইনচার্জ আবদুর রহিম খন্দকার বলেন,পটুয়াখালী গুদাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বরিশাল থেকে সার সরবরাহ করা হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ায় শ্রমিক ম্যানেজে আমাদের একটু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিলো। তার পরেও সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা প্রতিদিন ৫’শ মেট্রিকটন সার সরবরাহ করছি। আশা করছি কলাপাড়া উপজেলায় প্রতি মাসের সার পৌছে দিতে পারবো। আমরা সেই লক্ষে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।