সকল বিভাগ

কলাপাড়ায় ইউপি নির্বাচনে হামলা-সহিংসতা ও আচরন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২৩ , ৭:৪৮:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা বালিয়াতলী ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা, সস্ত্রাসী কর্মকান্ড ও আচরন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব মো. রুহুল আমিন হাওলাদারের মেয়ে মিসেস রেবেকা সুলতানা। বুধবার দুপুরে কলাপাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন বাবার প্রতিদ্বন্ধী নৌকা মার্কার প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবিরের বিভিন্ন অনিয়ম, সন্ত্রাস ও অভিযোগ তুলে ধরেন।

 

লিখিত বক্তব্যে মিসেস রেবেকা সুলতানা বলেন, আমার বাবা মো. রুহুল আমীন হাওলাদার কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আনারস মার্কার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারনায় গত ৫ মার্চ রবিবার বিকেল ৫ ঘটিকায় বালিয়াতলী ইউনিয়নে বলিপাড়া মাঝগ্রামে উঠান বৈঠক শেষে আমার বাবা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ রুহুল আমীন হাওলাদার নামাজ আদায় করতে স্থানীয় মসজিদে গিয়ে ছিলেন। এ সময় আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী এবিএম হুমায়ুন কবিরের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে আলামিন, শাহাবুদ্দিন চৌকিদার, শিমুল,রাতুল সহ ১৫/ ২০ জন সন্ত্রাসীরাা আমার বাবাকে গাল মন্দ করতে থাকে। বাবাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে আমাদেরকেও গাল মন্দ করে। এক পর্যায়ে কিছু বুঝে ওঠার আগে লাঠি সোটা নিয়ে আমাদের মারধর করতে থাকে। এতে আমার পুত্র ব্রিটিশ নাগরিক আহম্মেদ পিয়াল, স্বামী ব্রিটিশ নাগরিক মনজু আহম্মেদসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাই মোঃ ফারুক হোসেন (৫৫) সমর্থক মোঃ মোশারেফ হোসেন(৩০) আলিফ হাং (৩০) আহত হয়েছে। এ সময় আমাকেও সন্ত্রাসীরা শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছে ।

 

এ পরিস্থিতি দেখে আমার স্বামী সিনিয়র আইনজীবি ঢাকা বার এ্যাসোসিয়েশন এর আজীবন সদস্য। আওয়ামী আইনজীবি পরিষদ এর সদস্য, যুক্তরাজ্য ব্রিটিশ নাগরিক ইংল্যান্ডের স্থায়ী বাসিন্দা, ইংল্যান্ডের এন এইচ এস ট্রাস্ট কুইন হাসপাতালে সরকারী চাকরী করেন এবং একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, লেখক, সাহিত্যিক, গবেষক । বর্তমানে ইংল্যান্ডে ব্যারিষ্টার এন্ড ল এ অধ্যায়নরত। তিনি একজন গন মাধ্যম কর্মী, লন্ডনস্থ বেতার বাংলা রেডিও স্টেশনের নথীভুক্ত উপস্থাপক।

 

বাংলাদেশে টাংগাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত মেট্রো হাসপাতালের অংশীদার এবং পরিচালক। মো. মঞ্জুর আহম্মেদ এর পুত্র ব্রিটিশ নাগরিক আহম্মেদ পিয়ালকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে হঠাৎ পিছন থেকে এবিএম হুমায়ুন কবিরের ছোট ভাই আলামিন তার মাথায় রোলার দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে যায়। সন্ত্রাসীরা তাকে কিল ঘুসি লাথি এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে শরীরে রক্তাক্ত জখম করে।

 

সন্ত্রাসী হামলার পর স্থানীয়রা মঞ্জুর আহম্মেদ সহ আহতদের উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানেও এবিএম হুমায়ুন কবিরের ভাই আসলাম ও তার বোনের ছেলে রাব্বি আমাকে, বাবাকে ও আমার স্বামীকে প্রাণ নাসের হুমকি দেয়। আমার হাত থেকে মোবাইল সেট কেরে নিয়ে আছার মেরে ভেঙ্গে ফেলে। হাসপাতালের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে আছে। এক জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিজ উপজেলায় চিকিৎসা নিতে পারেনি। কারন সেখানে আমরা নিরাপদ ছিলাম না।

 

হুমকির ভয়ে পরে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ সীপাহী আঃ মোতালেব বীর বীক্রম ইপিআর, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় ভাবে সম্মূখ যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। পাক সেনাদের গুলিতে তিনি শাহাদাৎ বরণ করে তারই পুত্র রেমিটেন্সযোদ্ধা মো. মঞ্জুর আহম্মেদ স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন ভাবে পরিবার সহ নিরাপদে বসবাস করতে পারি। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন এই হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানাই। বর্তমানে বালিয়াতলী ইউনিয়নে সুষ্ঠ নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই। এজন্য নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী আগামী ১৬মার্চ বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠ, অবাধ ও শান্তিপূর্ন হয় তার জন্য বিনীত আবেদন করছি
সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আশ্রাফ আলী বলেন, একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানর যদি দেশে নিরাপত্তা না পায় তাহলে কিভাবে নির্বাচনী সুষ্ঠ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। সেই সাথে তিনি হামলার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।

 

এসময় সংবাদ সম্মেলনে মিসেস রেবেকা সুলতানার সাথে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী, শাশুরী মোসা: মাজেদা খাতুন, স্বামী মো. মনজুর আহমেদ, ছেলে আহমেদ পিয়াল, মোসা: স্বর্না আক্তার, মোসা: কারিমা, মো. মজিবর রহমান ও কলাপাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল সাংবাদিকবৃন্দ।

এব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও বালিয়াতলী ইউনিয়ন নির্বাচন রির্টানিং কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব রুহুল আমিনের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থী শোকাজ করা হয়েছে।

 

তিনি তার জবাব দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য জোড়ালো পদক্ষেপ রয়েছে। শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচন হবে ।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম জানান, তারা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।