প্রতিনিধি ১৮ মার্চ ২০২০ , ১:৪৬:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ
: নিজেকে বৈধ বানাতে নানান উপায় অবলম্বন!
: মনোনীত বোর্ডের কেউ জানেন না ভারপ্রাপ্ত কে!
: মনোনীত প্রতিনিধির মনখুশীতে দফায় দফায় বৈঠক ও আপ্যায়ণ!
তালাশ প্রতিবেদক ॥
কর্ণকাঠী ইজ্জাতুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগের জালিয়াতির সংবাদ প্রকাশের পর, পদ টিকিয়ে রাখতে মাও: নাসিরের তদবির শুরু।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রত্যাশিত সুযোগের আশানুরূপ কোন ফল না পেয়ে নানান তদবিরের আশ্রয় নিচ্ছেন অবৈধ প্রক্রিয়ায় অধ্যক্ষ পদ হাসিল করা এই জামায়াত নেতা। বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহার করলেও এখন অবধি বৈধ কোন কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে সক্ষম হননি তিনি।
এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, নিজেকে বৈধ প্রমাণ করতে দৈনিক আজকের তালাশের অনুসন্ধানী টিমের সাথে আর্থিকভাবে আতাত করতে না পারায় দফায় দফায় সক্রিয় ইন্ধনদাতা কমিটির সভাপতির সাথে মিটিং করে অবৈধ কাগজপত্রাদি বৈধ করার মিশনে নেমেছে মাও: নাসির। শুধু তাই নয়, নিজের অপকর্ম ঢাকতে মাদ্রাসার নিয়োগ প্রক্রিয়ার নামমাত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দ্বারা সংবাদের অনুসন্ধানী টিম কে বিভ্রান্ত করিয়ে শেষ রক্ষা হচ্ছে না তার। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে মাও: নাসির মনোনীত নামমাত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাও: আব্দুর রহমানের দেয়া ব্যক্তিগত তথ্যে বেরিয়ে এসেছে তার জালিয়াতির এন্তেজাম।
এ যেন এক বিশাল লঙ্কাকাণ্ড!
নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের জারীকৃত কোন তথ্য সম্পর্কে অবগত নন তিনি। অধ্যক্ষ পদ নিয়ে নীতিমালার কোন ধারনাই নেই আব্দুর রহমানের কাছে। তবে সাংবাদিকদের করা প্রতিটি প্রশ্নের সাঁজানো উত্তর ছিল অধ্যক্ষ পদের মূলহোতা নাসিরের কাছে। এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা পূনরায় পদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের মহিলা প্রভাষককের করা মামলায় নিজেকে বিচারকের ভূমিকায় দাড় করান এই তীক্ষè বুদ্ধির অধিকারী নাসির।
এসময় মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রক্রিয়াধীন থাকলেও তিনি নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে জানান, আদালত মামলা খারিজ করে দিয়েছে। এদিকে তার দেয়া তথ্যের কোন সত্যতা খুঁজে পায়নি অনুসন্ধানী টিম। মামলার প্রধান আসামী মাও: নাসির সহ কমিটির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা এখনও চলমান, যা বরিশাল বিজ্ঞ সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে দেং মোং নং-২১৪/২০১৯ বিচারাধীন রয়েছে।
নামমাত্র ভারপ্রাপ্ত নিজের কোন সক্রিয় ভূমিকা না থাকার বিষয় নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- সবই তো বোঝেন আপনারা, আমি কিছু জানিনা। স্কুল কলেজের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই রকম নতুন কিছু না। ম্যানেজ করেই তো সব হয়।
এসময় আব্দুর রহমানের কাছে নিয়োগ পরীক্ষা ও ভাইবায় অংশগ্রহণ করা বাকি অন্য আবেদনকারীদের বাদ পরার কারণ জানতে চাইলে উত্তর দিতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে আবেদনকারীদের এই পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক ছিলনা বলে দায়ী করে প্রশ্নের উত্তর মেলে নাসিরের কাছে! নাসিরের পক্ষ থেকে প্রশ্নের জবাবে কিছুটা স্বত্বি ফিরে পায় আব্দুর রহমান। তবে মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
নগরীর অভিজাত হোটেল এরিনায় বিশ্রামরত থাকা মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মনোনীত প্রতিনিধির সাথে দফায় দফায় সাক্ষাত হয় আব্দুর রহমান, মাও: নাসির ও সভাপতি হালিম রেজা মোফাজ্জেলের। শুধু তাই নয় সেখানেই তৈরি হয় নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্ন। পরক্ষণেই আব্দুর রহমানের দেয়া এমন তথ্যকে ঘুরিয়ে দিতে নাসির জানান, স্যার এখানে এসে সকালে প্রশ্ন তৈরি করেছেন। তিনি শুধু সভাপতির ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চায়ের দাওয়াতে গিয়েছে। সকালে নিয়োগ পরীক্ষা ও দুপুরে ভাইবা অনুষ্ঠিত করে বিকেলেই বিমানযোগে বরিশাল ত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে গত ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় ০১৭২০-১৫৭৪.. নম্বর থেকে ফোন আসে দৈনিক আজকের তালাশের অফিসিয়াল নম্বরে। এসময় নিজেকে প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন অধ্যক্ষ পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি জানান- ভাই নিয়োগ ফেয়ার হয়েছে, কোন সমস্যা নেই, আমিও ছিলাম ইন্টারভিউ বোর্ডে।
তবে এসময় নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম পালনে দায়িত্বরত নামমাত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
আব্দুর রহমান যে ভারপ্রাপ্ত তা আমরা কেউ জানি-ই না!!!
প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তার দেয়া এমন সত্য তথ্যে ঘোরপাক পেঁচিয়ে অফিসে দেখা করার কথা বলে তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন তিনি।
(অভিযোগের আরো বিস্তারিত সংবাদ জানতে চোখ রাখুন ৩য় পর্বে…)