প্রতিনিধি ২৮ মে ২০২৪ , ২:৩০:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ ১৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ নেই বরিশাল শহরে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে মানুষজনকে। তবে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করতে গিয়ে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে।
বরিশাল নগরের দক্ষিণ আলেকান্দার বাসিন্দা আলী হায়দার জানান, বিদ্যুৎ না আসায় সন্ধ্যার আগে দোকানে মোমবাতি কিনতে গিয়ে দেখেন ৫ টাকার মোমবাতি ১০ টাকায় আর ১০ টাকার মোমবাতি ২০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। আর সেই মোমবাতি কিনতেও দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। তাই দেরি না করে ১০ টাকা দামের মোমবাতি ২০ টাকা করে কিনে নিয়েছেন তিনি।
এদিকে হঠাৎ চাহিদার কারণে পাড়ামহল্লার দোকানগুলোতে মোমবাতির সংকট দেখা দিয়েছে। দোকানি মিঠু খান জানান, যে কয়েকটি মোমবাতি ছিল তা মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। এখন নিজের দোকানে জ্বালোনোর মতো মোমবাতি নেই। বাধ্য হয়ে বান্দরোড থেকে ১৫ টাকা দিয়ে ১০ টাকা দামের একটি মোমবাতি কিনে এনেছেন বলে জানান তিনি।
রাকিব হাওলাদর নামে এক ব্যক্তি জানান, মেডিকেল কলেজ লেন, নুরিয়া স্কুলের সামনের দোকানগুলোতে মোমবাতি না পেয়ে ৬০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে আমতলার মোড় থেকে দুটি মোমবাতি কিনে নিয়ে এসেছেন। যা দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ছেলে-মেয়েরা আলোতে থাকবে। তবে এরপরও বিদ্যুৎ না এলে কী হবে জানি না। তিনি আরও জানান, বিদ্যুতের অভাবে সকাল থেকে বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছে নগরবাসী। তারওপর মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। মোবাইল ও আইপিএস থেকে শুরু করে কোনো কিছুতেই চার্জ নেই। ফলে কারও সাথে যোগাযোগও করতে পারছেন না। যাদের জেনারেটর আছে তারাও তো একসাথে দীর্ঘসময় জেনারেটর চালাতে পারছেন না জানিয়ে স্কুল শিক্ষক পপি আক্তার বলেন, গত রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে আলেকান্দা এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। দীর্ঘ সময় জেনারেটর চালিয়ে এখন সেটাও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
মেডিকেল কলেজের ছাত্র ইমরান জানিয়েছেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসেও গত রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। ক্যাম্পাসের সর্বত্র পানি উঠে গেছে। দুপুরের খাবার কোনোভাবে রান্না হয়েছে। সহপাঠীরা আশপাশের হোটেলে গিয়েছিল নাস্তা আনতে। সেখান থেকে ৫ টাকার পুড়ি ১০ টাকায় কিনতে হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বরিশালজুড়ে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। দমকা হাওয়ার সাথে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের বাসাবাড়ির ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। গাছপালা পড়ে বাসাবাড়ির ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি দেয়াল ধসে ও গাছের ডাল পরে জেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।