প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২৪ , ২:১৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ॥ সরকারি বরিশাল কলেজ মাঠে ছয় তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, এর ফলে কলেজটি সৌন্দর্য হারাচ্ছে এবং খেলাধুলার স্থানও নষ্ট হচ্ছে।
কলেজটির শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে ক্লাসের পর বসার জায়গাও নেই, নেই বড় মাঠ। সেক্ষেত্রে মাঠের বড় অংশে ভবন নির্মাণ করা মানে কলেজের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করা এবং মাঠে খেলাধুলা বন্ধ করা। এমনকি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করাও আর এ মাঠে সম্ভব হবে না।
তারা জানান, ভবন সংকট থাকলে পুরনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরি করা যায়। অন্য জমিতে ভবন করা যায়। এ ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে কিছু গাছও কেটে ফেলা হতে পারে।
এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ না করতে পারলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলাকাবাসী ও নগরের সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করছেন। তারা কলেজের মাঠ ও এর সৌন্দর্য রক্ষার দাবি জানাচ্ছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, কলেজের মাঠে বড় গর্ত খোঁড়া হয়েছে এবং পাশেই বালুর স্তুপ করে রাখা হয়েছে। অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আলী হোসেন হাওলাদার নিশ্চিত করেছেন, ভবন নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্টও হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক শিক্ষক বলেন, ভবন সংকট হতে পারে, কিন্তু এই কলেজের আরো জমি রয়েছে সেখানে ভবন নির্মান করা যায়। ঐতিহ্যেবাহী এ কলেজের সৌন্দর্য রক্ষা করা বর্তমান কলেজে কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তায়।
বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহেদ বলেন, বরিশাল কলেজে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের স্মৃতি, কলেজে একটি তমাল গাছ আছে, যা ইতিহাস বহন করে চলছে। এখানে ভবন নির্মাণ করলে কলেজের ইতিহাস ও সৌন্দর্য নস্যাৎ করা হবে।
বরিশাল নগর উন্নয়ন ফোরামের সমন্বয়কারী কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, এ কলেজে সামনের অংশে ভবন নির্মাণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও নগরের নান্দনিকতা নষ্ট করবে। কলেজের মাঠ সংরক্ষণের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে কলেজর অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আলী হোসেন হাওলাদার বলেন, অনেক কষ্ট করে এই ভবন নির্মাণের বরাদ্দ আনতে হয়েছে। আমি সরকারের প্রতিনিধি। আমার কী করার আছে? সৌন্দর্য কেউ নষ্ট করতে চায় না। এতো বড় ভবন করার মতো কলেজের জায়গা নেই। কলেজটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে ভবনের সংকট রয়েছে এখন আমাদের শিক্ষার্থীরা কি রাস্তায় ক্লাস করবেন?
উল্লেখ্য, ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষাবিদ জয়ন্ত কুমার দাস, হোসেন আলী ও অন্যান্য শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্বদের সহযোগিতায় অশ্বিনী দত্তের বাসভবনে নাইট কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর কলেজ উন্নয়নের নামে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে কলেজ কর্তৃপক্ষ অশ্বিনী কুমার দত্তের মূল বাসভবনটি ভেঙে ফেলে। কলেজের একটি পুকুর কয়েকবার ভরাট করার চেষ্টা করেও নগরবাসীর প্রতিবাদে ভরাট করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।