প্রতিনিধি ৮ জুলাই ২০২৪ , ১১:৪৮:২১ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ায় চারটি মামলার আসামী হয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুড়ছেন স্বামী মোঃ সোলায়মান হাওলাদার। সংবাদটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়ায়। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই নিজেদের আড়াল করতে মিডিয়া ম্যানেজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেই পরকীয়া প্রেমিক আতিকুর রহমান ও স্কুল শিক্ষিকা তানিয়া আক্তার। ইতোমধ্যে মিডিয়া ম্যানেজ করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা। গত ৩ জুলাই বরিশালের স্থানীয় শীর্ষ বেশ কিছু পত্রিকায় ‘বাবুগঞ্জে স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের বাধা দেওয়াই কাল হলো স্বামী সোলায়মানে’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই ব্যাপক আলোচনার ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সূত্রে জানা গেছে, অসহায় চাকরি হারানো স্বামী মোঃ সোলায়মান হাওলাদারের জমানো ১৩ লাখ টাকা পরকীয়া প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়েছেন স্ত্রী তানিয়া আক্তার। এদিকে স্ত্রীকে ফিরে পেতে ও মামলা চালাতে গিয়ে হারিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি এনজিওর চাকরি। অন্যদিকে পরকীয়া প্রেমিককে বাঁচাতে ও তার সাথে থাকার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে সোলায়মানকে হয়রানি করছে তানিয়া আক্তার ও পরকীয়া প্রেমিক আতিকুর রহমান খান।
সোলায়মান বলেন, ২০০৭ সালের জুন মাসে পারিবারিক ভাবে বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়ার গ্রামের আশ্রাফ আলী সরদারের মেয়ে তানিয়া আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ে পর থেকে ভালই চলছিল তাদের সংসার। তানিয়াকে নিজের সংসারে রেখে পড়াশুনা করিয়ে ১৯ নং দক্ষিণ ভূতেরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন স্বামী। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া তাদের ১৪ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। হঠাৎ আগরপুর গ্রামের মৃত. মনিরুজ্জামান খান ওরফে কবির খানের ছেলে ও বাহেরচর মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এফপিআই আতিকুর রহমান খানের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন তানিয়া আক্তার। গত ২৩ মার্চ সকাল ১০ টার দিকে সোলায়মান বাবুগঞ্জ বাজারে যায়। এই সুযোগে পরকীয়া প্রেমিক আতিকের সঙ্গে পালিয়ে যায় তানিয়া আক্তার। বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে যায়।
বাবুগঞ্জ বাজার থেকে বেলা ১২টার দিকে বাড়ীতে আসেন সোলায়মান, এসে স্ত্রী তানিয়াকে না পেয়ে একাধিকবার কল দিতে থাকে তার মোবাইল নাম্বারে।
পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে প্রেমিক আতিকের সঙ্গে চলে গেছেন তানিয়া। এরপর থেকে তানিয়াকে ফিরে পেতে বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাপ শুরু করেন তিনি । কিন্তু কিছুতেই ফিরতে রাজি হননি তানিয়া। এক পর্যায়ে তানিয়া তাকে কল করে বলেন- বাচ্চার দিকে খেয়াল রেখো, আমি আর ফিরবো না, আমাকে তুমি আর ফিরে পাবে না, আমি আতিকের সাথে থাকবো। নিরুপায় হয়ে তানিয়াকে ফিরে পেতে সোলায়মান বাবুগঞ্জ থানা একটি সাধারন ডায়েরি করেন। যার নং- ৯৪৬ (তাং- ২৪-৩-২০২৪ ইং)। বিষয়টি তানিয়ার মা-বাবা ও আত্মীয়দের জানালে তারা তানিয়াকে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সোলায়মানকে মামলা করার পরামর্শ দেয়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী গত ২৮ মার্চ মোকাম বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে তানিয়া ও আতিকুর রহমানকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যা নং- (সিআর ১০৯/২০২৪)।
তবে মামলার করার পরে প্রকাশ্যে আসে তানিয়া ও আতিক। সুলায়মানের নামে দিতে থাকে একের পর এক মিথ্যা মামলা। তারা দুজনেই সরকারি কর্মচারী হয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া, নিজেদের রক্ষার্থে ঝোকেন মামলায়। বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতে থাকেন অসহায় স্বামী সোলায়মানকে।
এদিকে আতিক-তানিয়ার পরকীয়া প্রেমের কাহিনী শুনে নিমিষেই খেই হারান আতিকের স্ত্রী সুমাইয়া ইসলাম নাদিরা। কারণ তাদের সংসারে রয়েছে ৪ টি পুত্র সন্তান। নিজের সংসার টিকাতে আতিকের পরকীয়ায় বাঁধা দেন নাদিরা। তবে নাদিরার কথায় কর্নপাত না করে তাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন আতিক। নিরুপায় হয়ে আদালতের দারস্থ হন নাদিরা। আতিক-তানিয়াকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আতিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রোমাঞ্চ আহমেদ বলেন, তানিয়া আক্তারের কারনে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমি বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছি। খুব শীঘ্রই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মোঃ আকতারুজ্জামান বলেন, সহকারী স্কুল শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের নামে তার স্বামী মোঃ সোলায়মান হাওলাদার বেশ কিছু ডকুমেন্টসহ অভিযোগ করেছে। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।