বরিশাল

কীর্তনখোলা গিলে খাচ্ছে আওয়ামী-বিএনপি!

  প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১০:০৭:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

এম শাহাদাত ॥ দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যবসার নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বরিশাল সদর উপজেলায়। বহুদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করা আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি এবার তাদের সাথে যোগ দিয়েছে নামধারী বিএনপি নেতারা। এ যেন মিলেমিশে হরিলুটের মহাযজ্ঞ। তাদের এমন অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে পড়েছে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরি গ্রাম এবং চরমোনাই ইউনিয়ন।

 

স্থানীয়দের দাবি অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ইতিমধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তাদের নদীর তীরবর্তী স্থানগুলো। যা তীব্র ভাঙ্গনে রূপ নিয়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে আর বেশী দিন লাগবে না।

 

স্থানীয়দের দেয়া তথ্য ও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য। দীর্ঘদিন ধরে এই বালু উত্তোলনে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে চলছে দেনদরবার। সরকার পতন হওয়ার সাথে সাথে কোণঠাসা হয়ে পড়া আওয়ামী নেতাদের স্থানীয় এক শক্তি বিরাজ থাকায় বিএনপি নেতারা তাদের সাথে দেনদরবার করেই চলছে এই ব্যবসা। শুধু তাই নয় বালু উত্তোলনের জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে- কে কোথা থেকে নিয়ন্ত্রণ করবে।

 

জানা গেছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রেখে প্রশাসন সহ বরিশাল নিয়ন্ত্রণ করা রাজনৈতিক হর্তাকর্তাদের নিয়মিত মাসয়ারা বেশ কিছু বন্ধ থাকলে, পুনরায় তাদের কাছ থেকে এই ব্যবসার গ্রিণ সিগন্যাল পেতে পাঁয়তার করছে সংঘবদ্ধ এই চক্র। তাদের এমন নিয়ন্ত্রনহীন বালু উত্তোলনে নদীর তীরবর্তী ভাঙ্গন প্রতিরোধের প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গন আতংকে কাটছে এই এলাকার মানুষের জীবন। অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, প্রশাসনের চোঁখ আড়াল করতে দিনের থেকে রাতের সময়টাই বেশি ব্যবহার করছে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা।

 

রাত ১১ টা থেকে ভোর পর্যন্ত চরমোনাই লঞ্চঘাটের নদীর অপর পাশের চরটি অনবিরত ৬ টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। এসব বালু চলে যাচ্ছে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এলাকার সুশীল সমাজের অভিযোগ সারা বছর অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলনের কারনে ভাঙনের শিকার হচ্ছে শতশত হেক্টর আবাদি জমি, নদী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন কয়েক হাজার অসহায় পরিবার।

 

তারা আরো জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন চক্রের এই অব্যহত কার্যক্রমে সরকারের প্রায় দু’শ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত কীর্তনখোলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প আর কোন কাজে আসবে না।

 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চরমোনাই ইউনিয়ন, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন, বিসিসি ৪নং ওয়ার্ড সহ অত্র এলাকার বেশ কয়েকজন চিহ্নিত আওয়ামী নেতা এবং চরবাড়িয়া ইউনিয়ন, বিসিসি ৫নং ওয়ার্ডের চিহ্নিত বিএনপি নেতা এই অবৈধ ড্রেজার পরিচালনা করে আসছে। তবে একটি বিশস্ত সূত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর সোনালী আইসক্রীম মোড়ের বিএনপি’র এক প্রভাবশালী নেতা এদের কে নিয়ন্ত্রণ করছে।

 

এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার জানান, এধরনের কার্যক্রম কোন ভাবেই হতে দেয়া যাবেনা। বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি এবং অচিরেই এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাদের নাম ও পরিচয় নিয়ে পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আজকের তালাশ পত্রিকার পাতায়।

 

 

 

 

 

আরও খবর

Sponsered content