Uncategorized

স্কুল শিক্ষিকা মায়ের উপর নির্যাতনের বিচার দাবি করে ছেলের সংবাদ সম্মেলন

  প্রতিনিধি ১৮ মার্চ ২০২০ , ১০:৪৮:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদকঃ
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় যৌতুকের দাবীতে স্কুল শিক্ষিকা মায়ের উপর বাবার নির্মম নির্যাতন ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় বাবার বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছেলে। বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিমিরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী মোঃ জিহাদ এ অভিযোগ করেন।
জিহাদ বলেন, আমি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নূরে আলম ও তিমিরকাঠী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মারুফা আক্তার পপির বড় ছেলে। গত ২০ বছর পূর্বে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার দপদপিয়া ইউনিয়নের মোঃ আইয়ুব আলী হাওলাদারের মেয়ে মোসাঃ মারুফা আক্তার পপির সাথে একই এলাকার মোঃ আবদুল ওহাব খানের ছেলে মোঃ নূরে আলমের সাথে বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত জীবনে আমি মোঃ জিহাদ ও মোঃ জিসান আমার ছোট ভাই রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ আমার বাবা মোঃ নূরে আলম মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত। ২০১৫ সালে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর হাতে ৭০০ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক হন তিনি। মাদক আইনের ওই মামলায় আমার বাবা নূরে আলমের যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করে মহামান্য আদালত। উক্ত মামলায় তিনি ১ বছরের জামিনে বের হন। জামিনে বের হওয়ার পরপরই আমার মা মারুফা আক্তার পপির কাছে ব্যবসা করার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১৩ মার্চ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় ঘুমের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার মাকে বেদরক কুপিয়ে জখম করে। পরে আশপাশের লোকজনের সহযোগীতায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, যৌতুকের বিষয়টি নলছিটি থানা পুলিশকে একাধিকবার অবহিত করেছিলেন আমার মা মারুফা আক্তার পপি। থানা পুলিশ তিনবার বিষয়টি সমাধান করে দেন। এরপর আমি নিজেও ৯৯৯ লাইনে ফোন করে অভিযোগ দেই, পরে পুলিশ এসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। আমার মাকে কুপিয়ে আহত করার পরপরই দাদী মোসাঃ রেনু বেগম নলছিটি থানায় আমার মা মারুফা আক্তার পপি ও আমার মামা মোঃ আল মামুনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন আমার মা পরকিয়া প্রেমে আসক্ত। এ নিয়ে আমার মা ও বাবার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং আমার মামা মোঃ আল মামুন আমার বাবা নূরে আলমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। যেখানে আমার মাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে, সেখানে আমার বাবা নূরে আলম কিভাবে আহত হলেন। এমনকি তিনি কোন হাসপাতালে চিকিৎসাও নেননি। বরংচ এই ঘটনায় নলছিটি থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এটি যে একটি সাজানো মামলা তা বুঝতে কারো বাকি নাই।
জিহাদ বলেন, আমার মা মারুফা আক্তার পপিকে যৌতুকের দাবীতে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় আমার নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দপদপিয়া ইউনিয়নের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আইয়ুব আলী হাওলাদার বাদী হয়ে আমার বাবা মোঃ নূরে আলমের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় গত ১৪ মার্চ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর থেকে আমার বাবার আত্মীয়-স্বজন ও তার অনুসারী মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভাবে আমাদেরকে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বেশি বারাবারি করলে জেল থেকে যেদিন ছাড়া পারে সেদিন আমাদের স্ব-পরিবারকে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমরা যাতে বাড়িতে না থাকতে পারি সেজন্য আমার বাবার অনুসারীরা বিভিন্নভাবে লোক মারফত আমাদেরকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দুই ভাই আজ অসহায় হয়ে পরেছি। আজ সন্তান হয়ে বাবার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করতে হচ্ছে। মাকে বাঁচাতে এছাড়া আমাদের সামনে আর কোন রাস্তা নেই। আমার বাবা এতটাই ছোট মনের মানুষ যে তিনি মাদক ও আর টাকা ছাড়া নিজের সন্তানকেও চেনে না। আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায় আমরা জানিনা। তারপরও আমার মাকে যেভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে তা অমানবিক। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে আমার মায়ের উপর হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই। একই সাথে আমরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারি তার জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে জিহাদের খালা লাকী আক্তার ও মায়ের বান্ধবী ফারজানা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content