প্রতিনিধি ২১ জুলাই ২০২০ , ৮:১৩:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
করোনা সংক্রমণের ভয়ে রোগী শূন্য ভোলা হাসপাতাল। দু’একজন রোগী থাকলেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ তারা। নেই চিকিৎসকসহ পর্যাপ্ত সেবাদানকারিরা। পুরো হাসপাতাল জুড়ে বিরাজ করছে ভূতুড়ে পরিবেশ।
শুধু সদর হাসপাতাল নয়। জেলার ৭ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও রয়েছে এমন ভূতুড়ে পরিবেশ ও নিরবতা। হাসপাতালের বাহিরে ও ভিতরে নেই রোগী ও স্বজনদের ছোটাছুটি। কমেছে বহিঃবিভাগের রোগীর সংখ্যাও।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডের বিছানাগুলো খালি পড়ে আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরুষ ওয়ার্ডের এক নার্স বলেন, এই ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯০-১২০ জন রোগী ভর্তি থাকত। করোনাভাইরাসের কারণে এখন হাসপাতালে কোন রোগী ভর্তি থাকতে চায় না।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন টহলে নেমেছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে তারা প্রচার করছেন, করোনা থেকে মুক্তি পেতে বাড়ি থেকে বের হবেন না, বাসায় থাকবেন। এসব শুনে মানুষ সচেতন হচ্ছেন। এখন যেন মারামারিও কমে গেছে। ফলে আহত হয়েও রোগী আসে না।
একই চিত্র দেখা যায় মহিলা, প্রসূতি, শিশু, নবজাতক ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। মহিলা ওয়ার্ডের নার্স পারভীন বলেন, ‘আগে ওয়ার্ডে জায়গা দেয়া যেত না, বারান্দায় শুয়ে সেবা নিতো রোগীরা। এখন কি অবস্থা শুরু হলো, ওয়ার্ডে বিছানা খালি পড়ে আছে।থ তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আতঙ্কে মানুষ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এ কারণেও এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
তবে এমন পরিস্থিতে অনেক রোগীই চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া শামীম নামে রোগীর এক স্বজন জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার রাকিব নামে তার এক ছোট ভাইকে পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে রাকিবের সঠিক চিকিৎসা ও সেবা করছেন না সেবাদানকারীরা। জরুরি রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগী ভর্তি নিচ্ছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটাই অভিযোগ শামীমসহ আরো কয়েকজন রোগীর। হাসপাতাল কন্ট্রোল রুম জানায়, করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচারে মানুষ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে আসছেন না। এ কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ দিন দিন কমে যাচ্ছে। হাসপাতালে গড়ে রোগী ভর্তি থাকত তিনশোরও বেশি জন। বহিঃবিভাগে রোগী আসত প্রায় ৫০০ জন। কয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যাও কমছে।
ভোলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ওয়াজেদ আলী বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ হাসপাতালে আসছেন না। যারা আসেন তারা বেশি সময় হাসপাতালে অবস্থান করেন না। এ কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেকটা কমেছে।