প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২০ , ১:২৭:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ মাদক বিক্রি ও চাঁদাবাজিতে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান শাহিন মোল্লার সুনাম নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী একটি চক্র। যুব সমাজের মাঝে মাদকের বিস্তার রোধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষনা দেয়া উপজেলা আইন শৃংখলা রক্ষা কমিটির সভাপতি শাহিন মোল্লার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের এমন আচরণে হতাশ স্থানীয়রা।
আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ইন্ধন জুগিয়ে ব্যাক সাইড মিশনে রয়েছে একটি কুচক্রি মহল। স্থানীয় সচেতন মহলের দেয়া ভাষ্য ও সংবাদ অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে এমনই তথ্য। সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাধীন দপদপিয়া ইউনিয়নের আলী নগর এলাকায় বিভিন্ন স্পটে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করে আসছে স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকার যুব সমাজের অবক্ষয় ও মাদক ব্যবসাীয়দের প্রভাবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া সচেতন মহল এমন ঘৃনিত কর্মকা- থেকে পরিত্রান পেতে দারস্থ হন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শাহিন মোল্লার কাছে। ভাইস চেয়ারম্যান এমন ঘটনা জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে বিপাকে পড়ে যায় মাদক কারবারিতে নেতৃত্বে থাকা মাদক ও মার্ডার মামলার আসামী হায়দার।
আর যার পরিপেক্ষিতে নীল নকশা আঁকতে শুরু করেন এই চক্রের আরেক সদস্য মনির ও কিছু মাদকসেবীরা। একটি বিশ^স্থ সূত্রে জানা যায়, সেই নীল নকশা কে বাস্তবে রূপ দিতে প্রকাশ হয়েছে তাদের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকা-। জানা যায়, সম্প্রতি মাদকসেবনের টাকা জোগাড় করতে না পেরে দীর্ঘদিন যাবত ঐ এলাকার এক ট্রলার চালকের কাছে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করে আসছিল স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মনির সহ বেশ কয়েকজন মাদকসেবী।
নিরুপায় হয়ে অসহায় সেই ট্রলার চালক বিষয়টি অবগত করেন ভাইস চেয়ারম্যান শাহিন মোল্লার কাছে। এক পর্যায়ে ভাইস চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মাদকসেবীদের এমন কর্মকা- থেকে বিরত থাকার হুশিয়ারি দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় তারা। এ সময় ভাইস-চেয়ারম্যানের সাথে বাকবিতন্ডা জড়িয়ে পড়ে। মনির ও হায়দার কে আবারও সংযত হবার জন্য বলে শাহিন মোল্লা। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের সাথে থাকা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায় মাদক ব্যবসায়ী হায়দার ও মনির সহ তাদের সহযোগীরা। যা নিয়ে ঐ এলাকায় এক থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। মাদক ব্যবসা ও সেবনে বাঁধা দিতে শাহিন মোল্লার এমন ভূয়সী পদক্ষেপে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও পরিস্থিতিতে অন্য দিকে প্রভাবিত করতে ঘটনার প্রায় ৩ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরে এক নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হায়দার ও মনির।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা দৈনিক আজকের তালাশ কে জানান, হায়দার-মনির এলাকায় মাদকের আধিপত্য বিস্তার করতে নানান কৌশল অবলম্বন করে। আর তাদের এই ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে জানান তারা। শাহিন মোল্লা এমন কর্মকা-ের প্রতিবাদ করায় ঘটনাকে অন্য দিকে নিয়ে যেতে স্থানীয় কিছু মাদকসেবীদের সাথে নিয়ে তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন করতে মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। এসময় তারা আরও জানায়, সকাল থেকে গভীর রাত অবধি মাদক ব্যবসা চলমান রাখতে বিভিন্ন স্পটকে ব্যবহার করে হায়দার-মনিরের একটি সক্রিয় মাদক কারবারির দল।
স্থানীয় প্রশাসনের হাতে মাদকসহ আটকও হয়েছিলেন এই মাদক স¤্রাট হায়দার। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট হায়দার পুনরায় এ ব্যবসা পরিচালনা করলে তাতে বাঁধা দেয়াই হয়েছে চেয়ারম্যান শাহিনের অপরাধ। মাদক সেবন ও ব্যবসায় বাঁধা দেয়ার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে শাহিন মোল্লার বিরুদ্ধে কতিপয় কিছু মাদকসেবীদের নিয়ে নানান ভাবে সুনাম নষ্টের পায়তার করেন হায়দার-মনির। পরে মূল ঘটনাকে আড়াল করে সালাম বিনিময়ের মতো নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নাম কয়েকজন কে সাথে নিয়ে শাহিন মোল্লার বিরুদ্ধে মিছিল করেন তারা।
পাশাপাশি তাদের মারধরের করা হয়েছে এই মর্মে একটি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যা নিয়ে এলাকায় সচেতন-সুশীল সমাজের মধ্যে বিরাজ করছে এক ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। মাদক ব্যবাসায়ী হায়দার ও মনিরের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, “চেয়ারম্যান সাব করছে প্রতিবাদ আর হের বিরুদ্ধে আবার হইলো অভিযোগ”। তবে ভাইস-চেয়ারম্যান শাহিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান-মাদক কারবারির চক্রটি নিয়মিত মাদক ব্যবসা ও সেবনে জড়িত থাকায় এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার স্বার্থে আমি এদেরকে বিভিন্ন সময়ে হুশিয়ারী করেছি।
কিন্তু তারা এর কোন কর্ণপাত না করে একটি মনগড়া নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আমার সুনাম নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা যখন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। আমি আশা করি প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখে এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করতে অগ্রসী ভূমিকা পালন করবে।