প্রতিনিধি ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ , ১২:৫৬:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য এক মহা কলঙ্কের দিন, শোকের দিন। এই দিন বাংলাদেশ তথা স্বাধীনতা বিরোধী স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা মৃত্যুর নেশায় বুঁদ হয়। নির্মমভাবে হত্যা করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের সদস্যদের। এই হায়ানাদের থেকে রেহাই পায় নি শিশু রাসেলও। বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। এই নির্মম ঘটনা আমরা সবাই জানি।
সেইদিনের মাত্র ৪১ দিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর জারি করা হয় “ইনডেমনিটি” বা “দায়মুক্তি” আইন অধ্যাদেশ (যদিও তৎকালীন সাংবিধানিক আইনে প্রেসিডেন্ট কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা রাখে না) যার মাধমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচারতো দূরের কথা, ঐ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘৃণিতভাবে সেই হত্যাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই অধ্যাদেশকে আরো পাকাপোক্ত করার জন্য এবং হত্যাকারীদের চিরতরে বাঁচাতে ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই জিয়াউর রহমান ৫ম সংশোধনী এনে এটাকে আইনে রূপান্তর করে।
সেই সময়ের অবৈধ সংসদের সংখ্যা গরিষ্ঠ সাংসদের দাপটে পাশ করা হয় “ইনডেমনিটি” আইন। এই আইনে আরো বৈধতা দেয়া হয় ১৫ আগস্ট , ১৯৭৫ থেকে ৯ এপ্রিল, ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত সকল অবৈধ হত্যা, গুম ও ক্ষমতার। জাতীয় চার নেতার হত্যা থেকে শুরু করে হাজারো মুক্তিযোদ্ধা, সেপাহী, আর্মি, নৌ-অফিসারদের হত্যার বিচার থেকে বঞ্চিত হয় স্বজন ও সর্বোপরি সকল বাংলাদেশি। এ দেশের এই চার বছর ১০ মাস ছিল এক অন্ধকার যুগ। একজন মানুষকে খুন করা হবে অথচ তার বিচার চাওয়া যাবে না। পক্ষান্তরে খুনীরা দম্ভভরে খুনের দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াবে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ পদমর্যাদায় ভূষিত হবে কোনো সভ্য দেশে এসব ভাবাই যায় না।
তবে আশার বিষয় এই যে, ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর এই কলঙ্কথেকে মুক্তি দিতে সংবিধানের “ইনডেমনিটি” আইন বাতিল করা হয় যা দেশ ও জাতির এক ভয়ংকর কালিমা অপনোদনের দ্বার উন্মোচন করে।
ইনডেমনিটির বিষয়টা এখনও অনেক মানুষের কাছে ভুলভাবেউপস্থাপন করা হয়। অনেকের কাছেই এখনো অজানা ইতিহাসের এইকালো অধ্যায়টি। সর্বসাধারণের কাছে সহজভাবে ইনডেমনিটিরবীভৎসতা তুলে ধরার জন্য “ওয়ান বাংলাদেশ” এর আয়োজনেবিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিটি অঞ্চলে ২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৯ থেকে নানাধরনেরকার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে যার অংশ হিসেবেসারা বাংলাদেশের ১২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৯ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টায় নাটক “ইনডেমনিটি” স্ব স্ববিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সমূহহলঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামবিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুররহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়।
মান্নান হীরা রচিত “ইনডেমনিটি” নাটকটি “Indemnity” নামকপেইজে প্রত্যকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চায়িত নাটকটি সরাসরি সম্প্রচারকরা হবে। ওয়ান বাংলাদেশ “ইনডেমনিটি” নাটকটি অন্যান্যসংগঠনের সহযোগিতায় সারা বাংলাদেশে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করবে।