প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২১ , ২:৪০:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ।। বরিশালে পর্ণগ্রাফি মামলা করে বিপাকে পড়েছেন এক ভুক্তোভোগী। মামলার ৪দিন অতিবাহিত হলেও আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে এবং বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন বাদী ও তার পরিবারকে তবে পুলিশের দাবী আসামীরা পলাতক রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় মগড়া গ্রামে। ওই গ্রামের রনজিৎ মধুর স্ত্রী পর্ণা সরকার বাদী হয়ে গত ১২ অক্টোবার বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একই গ্রামের মৃত. শান্তি রঞ্জন হালদারের মেয়ে বৃষ্টি হালদারকে প্রধান আসামী করে ২০১২ সালের পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইনের ৮(৩) ধারায় একটি নালিশি অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, একই গ্রামের মৃত শান্তি রঞ্জন হালদারের ছেলে রাখাল হালদার (২৮), সতান বাড়ৈর ছেলে সিঞ্জন বাড়ৈ (৩৫), মৃত. দুঃখীরাম মন্ডলের ছেলে মঙ্গল মন্ডল (৫৮) ও মৃত. নিবারন বালার ছেলে নির্মল বালা (৪৫)।
পরে বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়।
নির্দেশের দুই দিন পর ১৪ অক্টোবর মামলাটি আগৈলঝাড়া থানায় রুজ করা হয়, যাহার মামলা নং-৭।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী পর্ণা সরকার ২০১৫ সালের ২০ শে এপ্রিল দক্ষিণ বড় মগড়া গ্রামের রনজিৎ মধুর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের বিবাহের পূর্বে ১নং আসামী ২, ৩ ও ৪নং আসামীর সহযোগীতায় রনজিৎ মধুকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। রনজিৎ মধু উক্ত প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বাদী পর্ণা সরকারকে বিবাহ করেন। এতে আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেন।
রনজিৎ মধুকে ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন ভয়ভীতিমূলক কথাবার্তা বলেন ও অশ্লিল ছবি পাঠিয়ে বিবাহ না করার কারনে আত্মহত্যার হুমকি দেয় ১নং আসামী বৃষ্টি হালদার। এতেও রনজিৎ মধুকে ঘায়েল করতে না পেরে সুচতুর বৃষ্টি হালাদার ২ ও ৪নং আসামীর কু-পরামর্শে যৌন উত্তেজকমূলক নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠাতে থাকেন। মামলা আরও উল্লেখ করা হয়, আসামীরা একদলীয় চরিত্রহীন-চম্পট প্রকৃতির লোক। সহজ-সরল ব্যক্তিকেদের সংসার ভাঙ্গা তাদের নেশা ও পেশা। তারা দেশের প্রচলিত আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। এদিকে মামলা করে বিপাকে পড়ার অভিযোগ করেছেন বাদী পর্ণা সরকার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন,‘আমাদের বিবাহের পূর্বে আমার স্বামীকে বিবাহের প্রস্তাব দেয় বৃষ্টি হালদার। আমার স্বামী তাতে রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় বৃষ্টি। আমাদের বিবাহ হওয়ার পরে বেপরোয়া হয়ে উঠেন বৃষ্টি। পরে বিভিন্নভাবে আমার স্বামীকে ঘায়েল করার চেষ্টা করেন এবং আমার স্বামীর ম্যাসেঞ্জারে অশ্লিল ভিডিও ছবি পাঠাতে থাকেন।’
পর্ণা হালাদার আরও বলেন,‘আমি এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি পরে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বৃষ্টি সহ অন্যান্য আসামীরা। তারা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি-দামকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমি এখন জীবন শঙ্কায় ভুগছি।’
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মাদ আলী হোসেন বলেন,‘আসামীরা পলাতক রয়েছেন, তাদের গ্রেফতাদের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।’ বাদীর অভিযোগ আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক প্রশ্নে তিনি বলেন,‘আসামীদের তো আমি চিনিনা, বাদী যদি দেখে সনাক্ত করে আমাদের খবর দেয় তাহলে অবশ্যই আসামী গ্রেফতার করা হবে।’