প্রতিনিধি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১২:৫৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ॥ মায়ের হত্যার ঘটনায় জড়িত মূলহোতাদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছেলে মোঃ লিটন। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) এর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবির কথা বলেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বংকুড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ লিটন বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রিনা বেগমের সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমার মা শুকুরন বেগম (৫৫) কে প্রক্যাশ্যে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় প্রতিপক্ষরা ভাড়াটে সন্ত্রাসীদেরও ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, মাকে হত্যার ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বয়াতী বাদী হয়ে পরেরদিন গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় গৌরনদী পৌর এলাকার নাসির কাজী, জিয়া হাওলাদার, চন্দ্রাহার গ্রামের রিয়াজ সরদার, ডায়মন্ড, সম্রাট সরদার, মারুফ, সাব্বির সরদার, রাব্বী, বাটাজোর এলাকার নয়ন, সিয়াম, বংকুড়া গ্রামের রিনা বেগম, তার ছেলে মারজান বেপারীসহ ১৫ জনকে নামধারী ও অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়। মামলা দায়েরের পর আমি জানতে পারি ঘটনাস্থলে না থাকলেও শত্রুতামূলক ভাবে এজাহারে আমার শশুড় বংকুড়া গ্রামের বাসিন্দা তৈয়ব আলী বেপারী ও তার ছেলে জুয়েল বেপারীকেও আসামী করা হয়, পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত আরও কয়েকজনকে বাদ দেয়া হয় এবং আমাকে মামলায় সাক্ষীও রাখা হয়নি। এ নিয়ে মামলার বাদী আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বেপারীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। এদিকে পুলিশ মামলার এজাহারভূক্ত উল্লেখযোগ্য আসামী ও হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত ভাড়াটিয়া আসামীদের এ পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় নতুন করে শঙ্কায় রয়েছি। যদিও তারা মামলার ১২ নম্বর আসামী মারুফকে গ্রেফতার করেছে।
যে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দিয়েছে বলে থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। মারুফের দেয়া তথ্যানুযায়ী এজাহারনামীয় ব্যতিত আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাদী আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বয়াতী টাকার লোভে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে মামলার ৩নং আসামী রিয়াজ সরদার, ৪নং আসামী জিয়া হাওলাদার, ৬নং আসামী ডায়মন্ড এর নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানতে পেরেছি। এছাড়া থানা পুলিশ ওই তিন আসামিকে চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়ার জন্য চার্জশীট প্রস্তুত করেছে বলেও শুনেছি। ফলে আমি এরইমধ্যে মামলার বাদী পরিবর্তনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করেছি। সংবাদ সম্মেলনে লিটন অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমার মায়ের হত্যাকান্ডের সাথে প্রকৃত জড়িত সকল আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদীর ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এ বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, এ মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে, এখনও আদালতে চার্জশীট দোখিল করা হয়নি। অপরদিকে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, চার্জশীট দেয়া হয়নি যেখানে, সেখানে এজাহারভূক্ত কোন আসামী বাদ গেছে বা কে সংযুক্ত হয়েছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করাটাই ঠিক হবে না। তদন্তে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় যাদের নাম বেড়িয়ে আসবে তাদের বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। আর মামলা দায়েরের সময় নিহতের ছেলে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি জানিয়ে বলেন, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি শশুড় ও শশুড়বাড়ির লোকজন এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে চলে আসায় ঘটনার সময় লিটন (নিহতের ছেলে) তখন মামলা দিতে চায়নি। তাই নিয়মানুযায়ী তথ্যদাতাই মামলার বাদী হয়েছেন। তবে তিনি চাইলে মামলার বাদী পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারেন।