প্রতিনিধি ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ , ৫:০৪:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল অফিস :-
পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী) ও বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপির নির্দেশও মানছে না মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের আহমেদ জুয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ। সম্প্রতি মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে অর্থ বানিজ্যসহ না বিতর্কে জড়িয়ে পরেন সভাপতি ও সম্পাদক। তাদের এসকল অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার হাত থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা ছাত্রলীগ সুপার সেভেন কমিটির বাকি ৫ সস্য দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ¦ আবুল হাসনাত আবদুল্লহর সাথে দেখা করে অভিযোগ দেন।
তাৎক্ষনিকভাবে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর মুলাদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান তরিকুল হাসান মিঠু খানকে ফোন করে বিষয়টি মিমাংশার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশের পরে দীর্ঘ এক মাস পেরিয়ে গেলেও এর সুরহা করতে পারেনি উপজেলা চেয়ারম্যান। ফলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ উপজেলা ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সূত্রে জানাযায়, গত জুলাই মাসে মঙ্গলবার মুলাদী উপজেলার শফিপুর, নাজিরপুর, চার কালেখা ও গাছুয়া ইউনিয়নে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত ২৪ জুন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের আহম্মেদ জুয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ স্বাক্ষরিত শফিপুর ও নাজিরপুর ইউনিয়নের কমিটি ঘোষনা করা হয়।
এ কমিটি প্রকাশ পাওয়ার পর পরই পদবঞ্ছিত নেতা ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এছাড়াও সফিপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ গোপনিয়ভাবে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করেছে। এই ইউনিয়নে গঠন করা ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির বেশিরভাগ অছাত্র এবং অনুপ্রবেশকারী।
বিশেষ করে যাকে আরিফ হোসেন মুন্সি নামে যাকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে সে ছিলো ছাত্রদল নেতা। গেলো ঈদেও সে সফিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা হিসেবে নিজের ছবি সহ শুভেচ্ছা ব্যানার টানিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। মাত্র কদিনের ব্যবধানে ছাত্রদলের সেই নেতাকে ছাত্রলীগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের টাকার প্রয়োজন হলেই ডাকা হয় কর্মী সভা। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে ও উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে াকা নেতাদের পাশকাটিয়ে সভাপতি-সম্পাদক নিজেদের খেয়াখশি সংগঠনটি পরিচালনা করছেন।
নিজেদের ইচ্ছেমতো ল পরিচালনার জন্যই উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করছে না শীর্ষ এইুই নেতা। এতে ছাত্রলীগের চেইন অফ কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। উপজেলা ছাত্রলীগের ৭ সদস্য কমিটি ঘোষণার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও পূণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ না দেখায় অধিকাংশ নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাত সদস্য থাকলেও মূলত কার্য পরিচালনা করছে সভাপতি ও সম্পাদক। ফলে কমিটির বাকী পাঁচ সদস্যের মধ্যেও সভাপতি ও সম্পদকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার হাত থেকে রক্ষা পেতে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে মুলাী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ আকন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মেহেদি হাসান ইমাম, সাইফুল ইসলাম মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ মাহমুদ ও সুজন নলী পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী) ও বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপির সাথে সাখাত করে মৌখিক অভিযোগ দেন।
তাৎক্ষনিক ভাবে বরিশাল আওয়ামীলীগের অভিভাবক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ মুলাদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান তরিকুল হাসান মিঠু খানকে ফোন করে বিষয়টি মিমাংশা করতে বলেন। অভিভাবকের নির্দেশ পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের বিরোধ মিটাতে উদ্দোগ গ্রহন করেন উপজেলা চেয়ারম্যন মিঠু খান। সেই মোতাবেক গত জুলা মাসে উপজেলা ছাত্রলীগের ৭ জনকে নিয়ে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাদের অভিযোগ ও আপত্তির বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় সিন্ধান্ত গ্রহন করেন উপজেলা চেয়ারম্য তরিকুল হাসান খান মিঠু।
সে সময় উপস্থিত সভাপতি এবং সম্পাদক ছাত্রলীগের সকল নেতাদের সমন্যয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলেন এবং অমিমাংসিত বিষয় গুলো মেনে নেয়। সুচতুর সভাপতি – সম্পাদক বৈঠকে লিখিতো কোন রেজুলেশন না থাকায় পূর্বের ন্যায়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকের নির্দেশর পরেও দীর্ঘ এক মাসেও উপজেলা ছাত্রলীগের অমিমাংসিত বিষয়ে কোন সুরহা না হওয়ায় ক্ষুব্দ ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা কর্মিরা।
মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মেহেদি হাসান ইমাম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। তিনি বলেন আমরা এখন আর মিমাংসা চাই না আমরা চাই সম্মেলনের মাধম্যে কমিটি গঠন করা হোক। মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার স্বর্থে বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের জুয়েল ইতোমধ্যে ছাত্রত্ব হারিয়ে বিয়ে করে ঘর-সংসার নিয়ে ব্যাস্ত থাকার পাশাপাশি ছাত্রলীগের কমিটিতে বহাল থাকায় নেতাকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এমনকি এই নেতা ইতি মধ্যে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় উপজেলা ছাত্রলীগ ইমেজ সংকটে পরেছে।
এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ কাজীর বিরুদ্ধে জমি খল ও চাাঁ বাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তিনিও বলেন আমরা এখন আর মিমাংসা চাই না আমরা চাই সম্মেলনের মাধম্যে কমিটি গঠন করা হোক। এ বিষয় মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের আহম্মেদ জুয়েল বলেন, আমারা অভিভাবকের নির্দেশ মোতবেক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
এমনকি আমরা যে সভা করেছি তাতে যে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে আমরা সবগুলো রক্ষা করে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনটি পরিচালনা করছি। আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ-বিভাজন নাই। এ প্রসঙ্গে মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান খান মিঠু বলেন, ‘ভাই বলার পড়ে আমি ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই গ্রুপ নিয়ে বসেছিলাম।
তাদের মধ্যে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো তা মিটিয়ে দিয়েছি। আমরা জানামতে এখন তাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। তবে এখনো কেউ দ্বন্দ্বের কথা বলে থাকলে সেটা আমার জানা নেই। তাছাড়া রাজনীতিতে এমনটি হতেই পারে। এটা নতুন কিছু নয়।