প্রতিনিধি ৩০ জুন ২০২১ , ১০:১৯:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ॥ হত্যা আর গুমের আতংকের কারনেই কাবিন ছাড়াই দীর্ঘদিন ঘর সংসার করেছেন মাসুমা ইয়াসমিন নামের এক নারী। স্বামী চেয়ারম্যান আগে ছিলো জামায়াত নেতা তার উপরে আবার জনগনের ভোটে চেয়ারম্যান।
তার অবৈধ অর্থ আর ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে ওই নারী। মাসুমা ইয়াসমিনের চেহারা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে নারী লোভী চেয়ারম্যান।
ওই নারীকে নানা ভাবে প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয় সে। বিধি যখন বাম একটি কাজে তার অফিসে যান মাসুমা। অফিসে সে জম্ম নিবন্ধনের কথা বলতে চাইলে তিনি তা না শুনে বসতে বলেন।
অনেকক্ষন বসার পরে এশার আযান দিলে তার অফিসের পিছনের রুমে নামাজ পড়তে যান। সেখানেই ঝাপটে ধরে ঘটে ভালোবাসার বর্হিপ্রকাশ।
এর পরে অনেক জোরাজারির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের কাছে হেরে যায় মাসুমা। ওই ঘটনার পরের দিন মাসুমার স্বামীকে তালাক দেয়ান চেয়ারম্যান।
তালাক দেয়ার পর থেকে বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে চেয়ারম্যান ও মাসুমা সংসার শুরু করে। ঘটনাটি এলাকায় প্রকাশ পেলে চাপের মুখে পরে বাগেরহাট ষাট গুম্বুজ মসজিদে গিয়ে বিয়ে করেন নারী লোভী চেয়ারম্যান।
বিবাহর পর থেকে নানা ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে যৌতুক দাবী করে। আমি দিতে অস্বীকার করিলে সে আমাকে তালাক দেয়ার হুমকি প্রদান করেন।
অসহায় মাসুমা জানান আমি বরিশাল মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্টেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলাটি আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে সমন জারী করেন আদালত।
মামলার সংবাদ পেয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে আমাকে আর আমার ছেলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করেন। তিনি আরো জানান, এই নারী লোভী চেয়ারম্যান শুধু আমাকে এক সংরক্ষিত ইউপি সদস্যা, এক এনজিও কর্মীসহ অনেক নারী জীবন নষ্ট করেছে।
এক নারীর পরিবারের সদস্যদের হাতে মার খাওয়ার পরে জামাত ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেন। এই ঘটনাটি ঘটে বরিশাল সদর উপজেলার বন্দর থানার চাঁদপুরা ইউনিয়নে।
সূত্রে জানা গেছে, অসহায় মাসুমা অত্যাচারী স্বামী চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমানের বিচার চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। মাসুমা ইয়াসমিন বলেন, আমার গর্ভের একটি সন্তান সে নষ্ট করেছে আমি আর আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। উল্লেখ্য যে, কাবিন ছাড়াই দীর্ঘদিন ঘর সংসার, অতপর চাপে পরে বিয়ে ।
পরবর্তীতে সেই অন্তঃসত্তা স্ত্রীর কাছেই যৌতুক দাবী করে নির্যাতন করেন চাঁদপুরার চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমান। ভুক্তভোগী ঐ নারী জানান, প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমান।
এর আগেও দরিদ্রদের চাল আত্মসাতসহ নানা বিতর্কে জড়ান এই চেয়ারম্যান। এর সাথে নতুন যুক্ত হল নারী কেলেঙ্কারী। জানা যায়, গত বছর শেষের দিকে খুলনা বাগেরহাট ষাট গম্ভুজ মসজিদে ঘুরতে নিয়ে সেখানেই মৌখিকভাবে ঐ নারীকে বিবাহ করেন চেয়ারম্যান আমান।
এরপর থেকে বরিশাল নগরীর হাতেম আলী চৌমাথাস্থ কেরানী বাড়ীর জাকির হোসেন এর বাড়ী ভাড়া নিয়ে একসাথে বসবাসের পাশাপাশি অবৈধভাবে মেলামেশা করে আসছিলেন তিনি।
চাঁদপুরার চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমানের নারী কেলেস্কারী ফাঁস এমন তথ্য ফাঁস করে দিলেন আমান চেয়ারম্যান এর ২য় স্ত্রী মাসুমা ইয়াসমিন নিজেই। এমতাবস্থায় মৌখিক বিয়ে বাদ দিয়ে নিকাহ্ রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে বিয়ের চাপ প্রদান করেন ভুক্তভোগি মাসুমা ইয়াসমিন।
পরে চাপে পড়ে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় গিয়ে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা কাবিন করে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী বিবাহ করেন আমান।
তবে বিয়ের পরপরই যৌতুকের জন্য অনবরত চাপ প্রয়োগ করেন বিতর্কিত চেয়ারম্যান আমান। এদিকে মাসুমা ইয়াসমিনের সুখের কথা চিন্তা করে ২ লাখ টাকা যৌতুকও দেন পরিবার।
কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত দেননি চেয়ারম্যান আমান। কিছুদিন যাবার পর আবারো ৫ লাখ টাকা দাবী করেন তিনি। এদিকে কিছুদিন পরে ওই নারী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়লে সন্তান গর্ভপাত করার পাশাপাশি যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয় তাকে।
এতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর চলে মানসিক নির্যাতন। যৌতুকের ৫ লাখ টাকা দিতে এবং সন্তান গর্ভপাত করতে অসম্মতি জানানোয় স্ত্রীকে ওই ভাড়া বাসায় রেখে পালিয়ে যায় আমান।
পরবর্তীতে আমানের স্ত্রী মাসুমা ইয়াসমিন এর ভাই ও আত্মীয়স্বজন আমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের জানান, স্ত্রী মাসুমাকে ইতোপূর্বেই তালাক দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে স্ত্রী মাসুমার দাবি, তালাক দেয়ার কোন কাগজপত্র তিনি এখনো পাননি। মাসুমা আরো বলেন, তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন তার স্বামী আমান। পাশাপাশী বিভিন্ন লোকজন দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। বর্তমানে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
মাসুমা ইয়াসমিনের ভাই মামুন অর রশিদ জানান, এ বিষয় চরমোনাই পীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এর কোন সমাধান দিতে পারেননি ।
বর্তমানে তার বোনকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছেন তিনি। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য চাঁদপুরা ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান ও মাসুমা ইয়াসমিন এর স্বামী মাওলানা আমানুল্লাহ আমান এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ইউনিয়ন দরিদ্রদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ভিজিডি’র চাল আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বরিশাল সদর উপজেলার ৮ নং চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমানুল্ল¬াহ আমান দীর্ঘদিন জেল হাজতেও ছিলেন।
২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল হাসেম কাজী বাদী হয়ে চেয়ারম্যান আমানসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
বর্তমানে মামলাটি বিচারধীন আছে। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আমানুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার ইউনিয়নে আমার জনপ্রিয়তা দেখে একটি মহল এই কাজ গুলো করছে।