প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২০ , ৪:৫৮:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল সদর উপজেলা সাহেবের হাটের দুলাভাই কতৃক শালী ধর্ষিত অতঃপর সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও সন্তান শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এঘটনাকে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সাংবাদিকসহ একাধীক ছাত্রলীগ নেতা। ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ভয়ভীতি ও মামলা না করা জন্য হুমকি দিয়ে আসছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগ নেতা লেলিনের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকায় কথিত ৫/৬ জন সাংবাদকর্মীকে এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য ম্যানেজ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর তৈয়ব আলীর বড় মেয়ের স্বামী চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ভেদুরিয়া নিবাসী ছালেম বয়াতী (৩৫) ছোট শালীকে জোড়পূর্বক বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানাতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় ধর্ষক দুলাভাই ছালেম বয়াতী। এদিকে ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সাহেবেরহাটের পল্লী ডাঃ জাকারিয়ার সহায়তায় বরিশাল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশ পায় ধর্ষিতা কিশোরী ৩৪ সপ্তাহের গর্ভবতী। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই কিশোরীকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করলে ওই দিন সন্ধ্যায় ৬ টার দিকে পূত্র সন্তানের জন্ম দেন।
অভিযোগে আরো জানা যায়, কিশোরী ধর্ষণও বাচ্চা প্রসবের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পরিচয়দানকারী লেলিন। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করে মুঠোফোনে প্রতিবেদকে বলেন, ভাই আমার কোন দোষ নাই। আমি ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাই নি। আমার কাছে মেয়ের বাবা এসে বিষয়টি জানান। তারপর আমি ৫/৬জন সাংবাদিক সাথে নিয়ে মানবতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঘটনাটা সমাধান করার চেষ্টা করি। মেয়েটির অনেক গরিব পরিবারের। মানবতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে এক ঘরে তো আর দুই বোনকে দেয়া যায় না। তাই বাচ্চাটা ওই দুলাভাই ছালেম বয়াতীকে দিয়ে দেয়া হবে। আর ওই ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অপরদিকে ওই এলাকার একাধীক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধর্ষণের বিচার আদালত ছাড়া কেউ করতে পারে না। দেশে আইন কাকুন ব্যবস্থা আছে। সেখানে সাংবাদিক বা ছাত্রলীগ নেতারা কি করে ধর্ষণের ঘটনা ও বাচ্চা প্রসবের ঘটনা সমাধান করেন।
এ ব্যাপারে পল্লী চিকিৎসক জাকারিয়া ঘটনা স্বিকার করে জানান, আমার কাছে সকালে মেয়ের চাচা ফোন দিয়েছে। পরে ওই কিশোরীকে দেখে সন্দেহ হলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডাক্তার দেখাই, আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানতে পারি ওই কিশোরী ৯ মাসে অন্তঃসত্ত্বা।
পরে কিশোরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাচ্চাটি শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছু জানি না।
১০নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ একে এম আবদুল আজিজ মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে ঢাকায় থাকার কারণে এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। ভূক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।