Uncategorized

মহিপুর নৌ পুলিশের  নাকের ডগায় প্রকাশ্যে বিক্রিয় হচ্ছে শত শত মন জাটকা ইলিশ !

  প্রতিনিধি ১৫ নভেম্বর ২০২০ , ৮:৪৮:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

শামীম ওসমান হীরা : – পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন সব কয়টি মৎস বাজার গুলোতে নৌ পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে নিধন করা হচ্ছে শত শত মন জাটকা ইলিশ। প্রতি বসর ১ লা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ১০ ইঞ্চি সাইজের ইলিশ ( জাটকা) ধরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এ সময়ের মধ্যে জাটকা ধরা, বিক্রি, মজুদ ও পরিবহন সম্পূর্ন বেআইনি। যার শাস্তি সার্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন মৎস বাজারে নিষিদ্ধ এই সময়ে জাটকা নিধন বন্ধ নেই।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পটুযাখালীর মহিপুর থানাধীন সকল মৎস বাজারে নৌ-পুলিশ সহ দ্বায়িত্বে থাকা সকল কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় প্রতিদিন ক্রয় বিক্রিয় হচ্ছে শত শত মন জাটকা ইলিশ। নৌ পুলিশ ও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এই নিরবতা ও তাদের আইনের প্রয়োগ সত্যি খুবই রহস্যজনক। জানা যায, মহিপুর ও আলীপুর মৎস বন্দরে জাটকা সেন্টিগ্রেড নামে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে অবৈধ অলেখিত চুক্তিতে বাধা পরে আছে দ্বায়িত্বে থাকা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। যার ফলে মহিপুর মৎস বন্দরে গত ৯ বসরের অধিক সময় এই সেন্টিগ্রেডের মাধ্যমে এভাবেই নিধন করা হচ্ছে শত শত টন জাটকা ইলিশ। আর এদিকে রাতারাতি ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে কিছু আসাধু সেন্টিগ্রেড ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। এক শ্রেণীর মৎস শিকারি ট্রলার নিয়ে নেমে পড়েছে সাগরে এবং শত শত মন জাটকা ধরে বাজারে বিক্রি করছে এই সেন্টিগ্রেডের কাছে।

 

কেউ কেউ আবার জাটকার পরিচয় লুকাতে এগুলোকে চাপিলা মাছ বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই অবৈধভাবে জাটকা নিধন যদি এখনই বন্ধ করা না যায়, তাহলে আগামী মৌসুমে ইলিশের ব্যাপক উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেবে। অপরিণত এসব জাটকা ধরে বিক্রি করায় একদিকে যেমন ইলিশ উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছেন, তেমনি ক্রেতাদের সাথে চাপিলা মাছ নামে বিক্রি করে করা হচ্ছে প্রতারণা। এতে জাটকা নিধনকারীরা সাময়িকভাবে লাভবান হলেও ভবিষ্যতের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের অর্থভাণ্ডার। বিগত কয়েক বছরে জাটকা নিধন বন্ধে আইনের সঠিক আরোপ করায় দেশে ব্যাপক ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে। সূত্রমতে, আমাদের দেশে বিগত কয়েক বছর ধরে গড়ে প্রায় ২৫ হাজার টন ইলিশ উৎপাদিত হয়, যা মোট চাহিদার চেয়েও বেশি। বিশেষজ্ঞরা চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ইলিশের রফতানির বাজার সৃষ্টি করার তাকিদ দিয়ে আসছেন। মাঝে মাঝে পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গে রফতানি করা হচ্ছে জাতীয় মাছ ইলিশ।

 

বর্তমানে করোনা মাহামারি বিশ্বের এই ক্রান্তিকালে মৎস্য চাহিদা পূরণে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ধরে রাখার বিকল্প নেই। যেহেতু আশা করা হচ্ছে, প্রকৃত অনুকূলে থাকায় এবার ইলিশ উৎপাদনেও নতুন রেকর্ড হবে, তাই যারা জাটকা নিধন ও সহায়তা করছে তাদের কঠোরভাবে দমন করা দরকার। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া উচিৎ হবে না বলে ধারনা সচেতন মহলের । ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত করে যারা সাময়িক লাভের জন্য শত শত টন জাটকা নিধন করে এবং যারা এই জাটকা নিধনে সহোযগীতা করতে নিজ কর্তব্য ভুলে আছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ সাধারন মানুষের।

আরও খবর

Sponsered content