প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২১ , ১১:২৫:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
হাফিজুর রহমান টাঙ্গাইলে ॥ টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চলে বসবাসকারী গারো-কোচ সম্প্রদায়দের উচ্ছেদের প্রতিবাদে তাদের ১৩টি সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। গতকাল সোমবার ১১ টায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্বরে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, আচিকমিচিক সোসাইটি, বাগাছাস, গাসু, জিএসএফ, আজিয়া, এসিডিএফ, কোচ আদিবাসী সংগঠন, জলছত্র হরিসভা, সিবিএনসি, ইআইপিএলআর, আবিমা আদিবাসী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ, পীরগাছা থাংআনি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ সহ ১৩ টি সংগঠনের ব্যানারে গড় এলাকার সহস্রাধিক গারো কোচ নারী পুরুষ ফেস্টুন ব্যানার হাতে নিয়ে রাস্তার দু পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
তাদের দাবী বংশপরম্পরায় তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। পূর্ব পুরুষগণ এ গড়াঞ্চলে উচু চালা জমিতে জুম চাষ ও নিচু বাইদ জমিতে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। এ ভাবে তারা বংশানুক্রমে এ অঞ্চলে বসবাস করছে। তাদের দাবী সম্প্রতি বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধার সংক্রান্ত একটি নোটিশ মধুপুর গড়ের বসবাসকারী গারো কোচদের উচ্ছেদ আতংকে ফেলেছে।
এর প্রতিবাদে মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশে বাগাছাসের সভাপতি জন যেত্রার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, জিএমএডিসির সভাপতি অজয় এ মৃ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, আজিয়া সভাপতি মিঠুন হাগিদক, আচিকমিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং, জিএসএফ’র সাধারণ সম্পাদক লিয়াং রিছিল, গাসু’র সভাপতি ইব্রীয় মানখিন, কোচ নেতা গৌরাঙ্গ বর্মন, বাগাছাস’র সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ, বাগাছাস নেতা শ্যামল মানখিন ও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মধুপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ আহমেদ নাসির, শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, ফুলবাগচালা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বেনু, বেরীবাইদ ইউপি চেয়ারম্যান জুলহাস উদ্দিন, অরণখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম। সমাবেশে বক্তারা ৬ দফা দাবী জানিয়ে বলেন, আদিবাসীদের ভূমি চিহ্নিত করা হোক। যদি আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে দাবী মেনে না নেওয়া হয় তাহলে ৭২ ঘন্টা পরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অনিদিষ্ট কালের জন্য অবরোধ কর্মসূচীর ঘোষণা দেন।
মধুপুর বনাঞ্চলের সংরক্ষিত, জাতীয় উদ্যান, ইকোপার্ক ঘোষনাকে বাতিল করে তাদের সাথে অর্থপূর্ণ আলোচনার ব্যবস্থা করা। ১৯৮২ সালের আতিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিল করে তাদের রেকর্ড জমির খাজনা নেওয়া বন্ধ আবার চালু করার ব্যবস্থা করা। তাদের স্বত্বদখলীয় ভূমি সমূহ স্থায়ী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করা। বন মামলা সমূহ ভ্রাম্যমান আদালত সৃষ্টি করে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা ও সামাজিক বনায়ন বাতিল করে প্রাকৃতিক বন রক্ষার দায়িত্ব তথা কমিউনিটি ফরেষ্ট্রি বা গ্রামবন পদ্ধতি চালু করার দাবী জানান।
পরে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা’র কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন তারা।