প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২১ , ৯:২৭:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় বিধবা ভাতা দেওয়ার কথা বলে তহমিনা বেগম (৬৫) নামে এক ভিক্ষুক নারীর ২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার বিচার দাবি করে তাহমিনা বেগম কাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তোভোগী তাহমিনা বেগম উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের কাঠেরচর গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নান হাওলাদারের স্ত্রী।
অভিযুক্ত আব্দুর রব খান উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের চরকমিশনার (কাঠেরচর) গ্রামের মৃত খাদেম খানের ছেলে
ও কাজিরচর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় পার্টির সভাপাতি।
তহমিনা বেগম অভিযোগ করেন, প্রায় ৩ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সন্তান নেই। আপনজন বলতেও তার কেউ নেই। সহায় সম্বল বলতে আছে একটি ছাপরাঘর। বয়সের কারনে ভারী কোন কাজ করতে পারেন না তিনি। তাই নির“পায় হয়ে ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে হয়েছে তাকে।
তহমিনা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বিধবা ভাতা পাওয়ার আশায় এলাকার মেম্বার ও নেতাদের পেছনে অনেক ঘুরেছেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। প্রায় বছরখানেক আগে কাজিরচর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় পার্টির সভাপাতি আব্দুর রব খান তার বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। তবে তার কাছে তখন তিন হাজার টাকা না থাকায় সময় চেয়ে নেন। গত ঈদ-উল আযহার দিন বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে ঘুরে তিনি ৪ কেজি গরুর মাংস পান। ওই মাংস বিক্রি করে আব্দুর রব খানকে ২ হাজার টাকা দেন এবং বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। টাকা হাতে পেয়ে আব্দুর রব খান তাকে দুই মাসের মধ্যে বিধবা ভাতা পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
নিঃসন্তান তহমিনা বেগম বলেন, টাকা নেওয়ার ১০ মাস অতিবাহিত হলেও রব খান তাকে বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেননি। কিছুদিন আগে তিনি টাকা ফেরৎ চাইলে রব খান তাকে গালিগালাজ করেন এবং টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি বিচার দিতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে গেলে বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হয়ে যায়।
কাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মন্টু বিশ্বাস জানান, ২০২০ সালের মার্চ মাসে বিধবা ও বয়স্ক ভাতা প্রদানের জন্য ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে মাইকিং করা হয়েছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তার মাধ্যমে অনলাইনে আবেদনের জন্য বলা হয়েছিলো। কিন্তু মনে হ”েছ তাহমিনা বেগম প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন। প্রতারককে টাকা দেয়ার কারনে বিধবা ভাতার জন্য তিনি অনলাইনে আবেদন করেননি। সম্প্রতি বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তাই তহমিনা বেগমকে বিধবা ভাতায় তালিকাভুক্তির জন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
মুলাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুভ্রা দাস জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দুঃখ জনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। টাকা নেয়ার প্রমান পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি তাহমিনা বেগম যদি বিধবা পাওয়ার উপযুক্ত হন, তাকে বিধবা ভাতায় তালিকাভুক্তি করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।