প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২১ , ২:৩৯:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক॥ নানা উন্নয়ণমূলক কার্যক্রমের জন্য সরকার বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তি মালিকানা জমিতে সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন, সেসব জমির ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করে সরকার যাকে একয়ার বা ভূমি অধিগ্রহণ বলা হয়। এসময় জমির মালিককে জমির ন্যায্য মূল্য দেয়ার পরে ওই জমির মালিক হয় সরকার। সরকার জমি অধিগ্রহণ করার পরে ওই জমিতে সরকারী কাজ ছাড়া কোন ধরনের ব্যক্তিগত কাজ করা বেআইনি। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে বরিশালে।
সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু নব থিয়েটারের জন্য বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ চর আইচা, জেএল নং-৬০ এর ১০ একর জমি একয়ার করে নেয় সরকার যার ভিরতে ৯০/৯১ দাগের জমিতে থাকা একটি ভবনও একয়ার করে নেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার ওই জমির উপরে থাকা ভবনের মূল্য হিসেবে ৭০ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় জমির মালিক জাতীয় পার্টির নেতা জয়নাল হাওলাদরকে। সরকার জমি অধিগ্রহণ করে নেওয়ার পরেও সরকারী ওই ভবনের মালামাল হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, সরকার জমি অধিগ্রহণ করে নেওয়ার পরে বিভিন্ন সময় জয়নাল হাওলাদার ওই ভবন থেকে মালামাল সরাতে থাকেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহে শ্রমিক দিয়ে ওই ভবনের বিভিন্ন স্থানে থাকা রড খুলতে শুরু করেন তিনি। পরে স্থানীয়রা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করলে বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার এএসআই সুমন ঘটনাস্থলে যায়। তবে তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই খবর পেয়ে সুচতুর জয়নাল হাওলাদর শ্রমিক নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পরে।
এব্যাপারে এএসআই সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানায়, অধিগ্রহণকৃত জমির মালামাল লুটের খবর পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি কাউকে পাইনি তবে ওই ভবনের অনেকগুলো রড আমি নিচে পড়ে থাকতে দেখেছি।
এদিকে ভবনের মালামাল হরিলুটের একটি ভিডিও গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। বিষয়টি জানতে পেয়ে মিডিয়া পাড়ায় দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির নেতা জয়নাল। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে এই প্রতিবেদককে ম্যানেজের চেষ্টা করেছেন তিনি কিন্তু সত্যের পক্ষে অটুট থেকে সঠিক সংবাদ প্রকাশের কথা জানিয়ে দেওয়া হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জয়নাল। মুঠোফেনে জয়নাল প্রথমে পুরো বিষয়টি স্বীকার করলেও পরে জানায়, আপনি যত পারেন সংবাদ প্রকাশ করেন, পারলে মামলা দেন আমাকে জেল হাজতে পাঠান আমি সরকারী কোন টাকা পাই নাই।
অপরদিকে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা সূত্রে জানা যায়, জমি এবং ভবন অধিগ্রহণ করার পরে প্রাথমিক পর্যায়ে ওই জমির মালিককে ভবনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে পর্যায়ক্রমে তিনি নিয়মঅনুযায়ী পুরো জমির টাকা পেয়ে যাবেন। বঙ্গবন্ধু নব থিয়েটারের জন্য নেয়া একয়ারকৃত সকল সম্পত্তি গণপূর্তের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় ওই সূত্র। পাশপাশি ওই জমি থেকে কোন কিছু নেওয়ার অধিকার জয়নাল হাওলাদারের নেই।
এব্যাপারে ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুল আলম লিটন, আমি বিষয়টি শুনেছি এবং একটি ভিডিও দেখেছি। মূলত সরকারী একয়ার করা জমি কিংবা ভবনে কোন কাজ অথবা মালামাল নেয়ার অধিকার কোন ব্যক্তির নেই। বিষয়টি দুঃখজনক।