দেশজুড়ে

তবে কি লাসের নগরী হতে যাচ্ছে বাউফল !

  প্রতিনিধি ১ আগস্ট ২০২১ , ৮:৪১:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

আবু সায়েম, বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ সারাদেশে করোনা মহামারির প্রভাব বেড়েই চলছে, প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত-শত লোক। সরকারের পক্ষ থেকে করোনা মহামারি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হলেও তা কোনো ভাবেই মেনে চলছেন না সাধারন জনগন।
সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলায় করোনা অতি তীব্র মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে, জেলায় মৃত্যুর সংখ্যাটা কম হলেও আক্রান্তর সংখ্যা অনেক বেশি। জেলার সব থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বাউফল উপজেলায়।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারী -২১ থেকে এ পযর্ন্ত  কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৯৩ , আর মারা গিয়েছেন ০৩ জন।

তবে চিন্তার বিষয় হচ্ছে জানুয়ারী-২১ থেকে ৩৯৩ জন আক্রান্ত হলেও গত এক সপ্তাহেই আক্রান্ত হয়েছেন ২৬০ জন, আর মারা গিয়েছেন ২ জন ।  আক্রান্তর সংখ্যা এত বেশি হলেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মাত্র ১২ জন । আর বাকি সবাই রয়েছেন বাসা-বাড়িতে।
এ পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে জনসাধারনকে। পরিস্থিতি এত খারাপের দিকে যাচ্ছে বুজেও স্বাস্থ্য বিধি মানার কোনো চিহ্নই নেই সাধারন মানুষের ভিতরে। যে যার মত অযতা ঘোড়াঘুরি করছেন হাটঁ-বাজারে।
শনিবার (৩১ জুলাই) বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় অনেক মানুষ এসেছেন কোভিড-১৯ (করোনায়) আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা পরিক্ষা করার জন্য, প্রতিজন রুগীর সাথে করে নিয়ে এসেছেন ৩-৪ জন করে, সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছেন কথা-বার্তা বলছেন,নমুনা পরিক্ষার জন্য ডাক আসলে তখন গিয়ে নমুনা দিয়ে আসছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে বার-বার স্বাস্থ্য বিধি মেনে সবাইকে আসতে বলা হলেও তা মানতে ইচ্ছুক নয় অনেকেই।
হাসপাতালের অন্যপাশে কোভিড-১৯ টিকা নিতে যারা এসেছেন সেখানেও মানুষের উপচে পড়া ভিড়, তবে টিকাদান কেন্দ্রের ওখানে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারটা সবাই মেনে চলার চেষ্টা করছেন।
একজন কোভিড-১৯  আক্রান্ত রুগীর প্রতিদিন ঔষধ বাবদ খরচ হয় প্রায় ৬০০০(ছয় হাজার) টাকার মত, যা মধ্যবিত্ত একটা পরিবারের পক্ষে বহন করাটা খুবই কষ্ট সাধ্য বিষয়। অনেকে কোনো রকম চিকিৎসা ছাড়াই নাপা (জ্বরের ঔষুধ) খেয়েই চালাচ্ছেন চিকিৎসা।
পৌর শহরের ০৯ নং ওয়ার্ডের কোভিড-১৯  আক্রান্ত মোঃ বাহউদ্দিন(৪৮) বলেন গত ২৫ তারিখ আমার করোনা পজেটিভ আসেন, তখন থেকেই বাসায় থেকে চিকিৎসকের পরামর্শনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছি, প্রতিদিন ঔষদের পিছঁনে আমার খরচ হচ্ছে প্রায় ৫-৬ হাজার টাকার মত । টাকার সমস্যার জন্য প্রতিদিন এই ঔষুধ কিনে চিৎকিসা করা আমার জন্য খুব কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে দারিয়েছে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত প্রতিটি মানুষের অবস্থায়ই এই বাহউদ্দিনের মত। লকডাউনে সব বন্ধ থাকায় নেই কোনো আয় উর্পাজন সেখানে এত টাকা দিয়ে ঔষুধ কিনে চিকিৎসা চালানোটা তাদের জন্য সত্যিই অনেকটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
উপজেলার সুশীল সমাজের ভাষ্য মতে পরিস্থিতি এমন থাকলে এই আক্রান্ত ব্যক্তি গুলো যদি সু-চিকিৎসা না করাতে পারে বা মানুষ যদি সচেতন না হয় তবে খুব শীগ্রই মৃত্যুপুরীতে রুপ নিবে আমাদের এই বাউফল শহর। তাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাটা অতিব জরুরী।
তবে এত ভয় এবং হতাশার ভিতরেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা যায় আগামী সপ্তাহ থেকেই ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচী চালু করার কাজ চলছে, টিকা পেলে আক্রান্তর সংখ্যা যেমন কমে আসবে তেমনি আক্রান্ত হলেও মারা যাওয়ার ভয়ও অনেকটা কমে যাবে।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন “আমরা আমাদের সবোর্চ্চ দিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রুগীদের সেবা করে যাচ্ছি, যারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদেরকে ও ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, এই মহামারি মোকাবেলা করতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে”। বাসায় থেকে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের ভিতরে যাদের অবস্থা আশংকাজনক তাদেরকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আহ্বান যানান এই কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content