প্রতিনিধি ২৭ মার্চ ২০২২ , ৩:০৯:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
পবিত্র রমজানের উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয়পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার সারাদেশের ন্যায় ভর্তুকি দিয়ে বরিশালেও টিসিবির পণ্যসামগ্রী বিক্রি শুরু করেছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্’র তধ্যাবধায়নে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মাঝে টিসিবির পণ্যসামগ্রী বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি কর্তৃপক্ষ। এ মহৎ উদ্যোগকে এবং সিটি মেয়রকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বরিশালের সর্বমহলের মানুষ। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থে জড়িত কয়েকজনের বিতর্কিত দু-একটি কর্মকাণ্ডে সরকারে এ মহৎ উদ্যোগ ম্লান হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শহীদ আবদুুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব এলাকা এবং নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড গড়িয়ারপাড় সেতুবন্ধন ক্লাব এলাকার দুটি স্থানে দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মিত টিসিবি’র পণ্য বিক্রি হয়ে আসছিলো। এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবেই ঐ দুটি স্থান অধিক পরিচিতি লাভ করেছে ঐ এলাকার মানুষের কাছে। সম্প্রতি নতুন কার্যক্রমের আওতায় টিসিবির পণ্যবিক্রির তালিকায় নেই ঐ গুরুত্বপূর্ণ দুই স্থান। যে কারণে সেখানে যাচ্ছে না কোন পণ্যবাহী টিসিবির গাড়ি। ফলে টিসিবির পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাংবাদিকসহ ঐ এলাকার জণসাধারণ মানুষ। জানা গেছে, শহীদ আবদুুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সামনে টিসিবি পণ্যবাহী ট্রাক না যাওয়ায় বর্ণিত ক্লাবের সাংবাদিকগণ এবং ঐ এলাকার জণসাধারণ বর্তমানে সরকারে এই সুবিধা ভোগ করতে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও ঐসকল স্থানে যে পরিমাণ টিসিবির পণ্য বিক্রির কথা ছিলো সে পরিমাণ পণ্যসহ ট্রাক আসতো না। তৎকালীন সময় টিসিবির পণ্য নিজ হেফাজতে মজুদ রেখে বিক্রিয়কালে মনিটর্রিংসেল ও ভোক্তাঅধিকারের কর্মকর্তারা হাতেনাতে অসাধু ডিলারকে ধরার পর তাকে জরিমানা ও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঐ কর্মকাণ্ডের কারণে প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য পেতোনা ঐ এলাকার জণসাধারণরা। ফলে অনেককে ফিরতে হত খালি হাতে। আরও অভিযোগ রয়েছে, ট্রাকের সাথে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপে ব্যহত হত টিসিবির পণ্য বিক্রির সাভাবিক কার্যক্রম।
শহীদ আবদুুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব এলাকার ঐ স্থানে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে সাংবাদিকসহ অনেক নারী-পুরুষকে। বেশ কয়েকজন টিসিবির পণ্য ক্রয় ইচ্ছুক জানান, আমরা এর আগে এখানে আসা গাড়ি থেকে সাচ্ছন্দে পণ্য কিনতাম। মাঝে মাঝে গাড়ি আসতে দেরি হলেও এই ক্লাবে বসার স্থান থাকায় বসে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ ছিলো। কিন্তু এখন গাড়ি না আসায় পড়েছি ভোগান্তিতে। বর্তমানে হঠাত করেই গুরুত্বপূর্ণ এ দুই স্থানে টিসিবির পণ্যবাহী সরবরাহ বন্ধ থাকায় হতাশ হয়ে ফিরছেন অনেকেই, নানা প্রশ্ন উঠেছে জনমনেও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সাংবাদিক জানান, আমরাতো লাইনে দাড়িয়ে সকল স্থান থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারি না, সেটা সম্ভবও না। প্রেসক্লাবের সামনে গাড়ি আসলে খুব সহজেই আমরা পণ্য ক্রয় করতে পারি। এতে কষ্টও কিছুটা লাঘব হয়। একই চিত্র দেখা গেছে নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড গড়িয়ারপাড় সেতুবন্ধন ক্লাব এলাকায়। সেখানেও আগে থেকে নির্দৃষ্ট স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি হলেও অজানা কারণে সম্প্রতি সেখানে যাচ্ছে টিসিবির পণ্যবাহী কোনো গাড়ি। অথচ দু’স্থানেই রয়েছে ক্রেতাদের অপেক্ষা।
পূর্বের ন্যায় টিসিবির পণ্যবাহী গাড়ি ওই দু’স্থানে না যাবার কারণ জানতে চাইলে বরিশাল টিসিবি’র অফিস প্রধান মোঃ আল আমিন হাওলাদার বলেন, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ৫৩ জন ডিলার বরিশাল সিটি করপোরেশন’র (বিসিসি) ঘোষণাকৃত নির্ধারিত স্থান গুলোতে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করে। এ সব স্থানগুলো নির্ধারণ করে দেয় বিসিসি কর্তৃপক্ষ।
বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঢাকায় অবস্থান করায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, বিসিসির মেয়র বরাবর আবেদন করলে হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। মেয়র অনুমতি দিলেই ওই দু’স্থানে গাড়ি পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব।
উল্লেখ্য, টিসিবি ও বিসিসি সূত্রে আরও জানা যায়, ৫১০ টাকার প্রতি প্যাকেজে থাকছে চিনি ২ কেজি, ২ কেজি মশুরে ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, আড়াই কেজি করে পেঁয়াজ। টিসিবির পণ্যবাহী প্রতিটি ট্রাকে ৮শত কেজি চিনি, ৮শ কেজি মশুরে ডাল, সয়াবিন তৈল ৮শ লিটার ও পেঁয়াজ এক হাজার কেজি পণ্য থাকে। এছাড়া জেলার দশটি উপজেলায় পূর্বের বিতরণকৃত ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে এ পণ্য দেয়া হচ্ছে। এবং নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে বিসিসির নির্ধারিত ১৫টি স্পটে টিসিবি ৫৩ জন ডিলারের মাধ্যমে নগরবাসীর পণ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে।