প্রতিনিধি ৩০ মে ২০২২ , ১১:২১:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
মজিবর রহমান নাহিদ ॥ বরিশালের বিভাগের পটুয়াখালীর সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত পর্যটনকেন্দ্র সাগরকণ্যা কুয়াকাটা। ১৯৯৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কুয়াকাটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এখানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে শত শত পর্যটক আসেন এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে। আর পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় এখানে গড়ে উঠেছেন অসংখ্য হোটেল-মোটেল, ব্যংক, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান।
এই সমুদ্র সৌকতে প্রায়ই গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয় পর্যটক। আর নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কলাপাড়া উপজেলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিস এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালন করেন। কলাপাড়া কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০কিলোমিটার দূরত্ব হওয়ায় যেকোন দূর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই এসে পৌছাতে পারেনা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
সাগরে নিখোঁজ, আগুন ধরে যাওয়ার পাশাপাশি সড়ক দূর্ঘটনাসহ অন্যান্য দুর্ঘটনা ও দুর্যোগের বিশেষ সহায়ক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন কুয়াকাটায় স্থাপন অত্যন্ত জরুরী ও সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন সকলে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৌকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয় গলাচিপার এক যুবক। এর প্রায় ৪ঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের কলাপাড়ার একটি টিম। দেরিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছানোর কারনে সঠিক সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে না পারায় কয়েক ঘন্টা ধরে ওই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই যুবককে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম জানান,‘কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে অবস্থান করছেন, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যদি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে কলাপাড়া থেকে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।কুয়াকাটায় ফায়ার সার্ভিস স্থাপন খুবই প্রয়োজন।’
কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক শফিকুল ইসলাম জানান,‘কুয়াকাটা সমুদ্র সৌকতে প্রায়ই নাকি মানুষ গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়, এদের উদ্ধার করতে এখানে কোন ফায়ার সার্ভিসের ব্যবস্থা নেই যেটি খুবই দুঃখজনক। আমাদের দাবী যাতে এখানে একটি ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন স্থাপন করা হয়।’
হোটেল সমুদ্র বিলাসের প্রোপাইটর ইসমাইল শেখ জানান,‘কুয়াকাটায় অসংখ্য হোটেল রয়েছে, হোটেলে যদি কখনও আগুন লাগে আর সেজন্য যদি কলাপাড়া ফায়ার ষ্টেশনকে অবহিত করা হয় তাহলে তারা এখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আগুন পুরোটাই কব্জা করে নেয়। তখন আগুন নেভানোর আর কোন প্রয়োজনই হয় না। আমরা এর আগেও কয়েকবার ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনের দাবী জানালেও এর কোন সুফল পাই নি।’
কুয়াকাটায় ফায়ার সার্ভিস স্থাপন খুব জরুরী বলে মন্তব্য করছেন পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেনও। তিনি আজকের তালাশকে বলেন,‘পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় একটি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন খুবই জরুরী। আমি উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে বহুবার আলোচনা করেছি। মন্ত্রনালয়ে আবেদনও করেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত ষ্টেশন স্থাপনের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয় নি কর্তৃপক্ষ। সার্বিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত একটি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনা করা প্রয়োজন কুয়াকাটায়।’