প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০১৯ , ২:৩৬:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃমেহেদী হাসান,বরগুনা :
বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ গুদিঘাটা গ্রামের কমলকান্তি হাওলাদার (৩১)। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ তিনি।১১ মাস বয়সী একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনিতা রাণী।
বরগুনা জেলার বামনা থানায় এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কমলকান্তির স্ত্রী অনিতা রাণী (২৫)। ১১ মাস বয়সী একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অনিতা রাণী জানান, তার স্বামী কমল কান্তি হাওলাদার বামনা উপজেলার একটি ইটভাটা ‘মা ব্রিকস কম্পানির’ ব্যবস্থাপক ছিলেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই ইটভাটার কিছু মালামাল কিনতে তাঁকে ঢাকায় পাঠান মালিক মোস্তফা ফকির। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত অনিতা রানী তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এরপর থেকে আর কোনো কথা হয়নি, খোঁজও পাওয়া যায়নি তাঁর। অনেক খোঁজাখুজি করেও তাঁর কোনো হদিস মেলেনি।
অনিতা রাণী আরো জানান, তাঁর স্বামী কমলকান্তি মা ব্রিকস’র মালিক মো. মোস্তফা ফকিরের খুব বিশ্বস্ত ছিলেন। তবে মালিকের শালা বশির (৩৫), ভায়রা রফিক (৩৬) এবং মনির ও রব সর্দার যারা ইটভাটার কর্মচারী ছিলেন, তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না কমলকান্তির। মালিক মোস্তফা ফকির যেহেতু কমল কান্তিকে বেশি বিশ্বাস করতেন, তাই তারা কমলকান্তিকে আড়চোখে দেখতেন। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী যে পরিবহনে চড়ে ঢাকা যান, সেই গাড়ির নাম ‘রাফিন সাফিন’। ওই পরিবহনের একজন হেলপার জাহাঙ্গীর কমলকান্তির সঙ্গে একত্রে ঢাকা গেছেন। তাঁরা ফেরিঘাটে একত্রে ভাতও খেয়েছেন।
অনিতা রাণী আরো জানান, নিখোঁজের ছয় দিন পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর কমলকান্তির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে কমলকান্তির ছোট ভাই বিভূতিভূষণের মোবাইল নম্বরে একটি ফোন আসে। সেই ফোনে অপরিচিত একজন লোক কথা বলেন এবং কমলকান্তির মুক্তির জন্য ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তবে কমলকান্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ‘তিনি বেহুঁশ রয়েছেন’ বলে জানানো হয়। এরপর ফোনটি কেটে দেওয়া হয়।
অনিতা রাণী আরো জানান, তাঁর স্বামী নিখোঁজের পেছনে ‘রাফিন সাফিন’ পরিবহনের হেলপার জাহাঙ্গীর এবং ‘মা ব্রিকস’র কর্মচারী রফিক, বসির, মনির এবং রব সর্দার জড়িত বলে তাঁর যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।
বামনা থার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদুজ্জামান বলেন, মাওয়া ফেরিঘাটে যাওয়া পর্যন্ত যেহেতু তাঁর স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাই যাই ঘটুক না কেন তা সেখানেই ঘটেছে। তাই বামনা থানা কর্তৃপক্ষের তেমন কিছু করণীয় নেই। তার পরও আমরা বামনা থেকে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। ‘
মা ব্রিকস’র মালিক মো. মোস্তফা ফকীর বলেন, তিনিও অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন। কোথাও তাঁর সন্ধান মিলছে না। তাঁর শালা ও ভায়রার বিষয়ে অনিতা রানীর সন্দেহের কথা জানালে তিনি বলেন, যাঁর স্বামী নিখোঁজ হয়েছেন তিনি অনেক কিছুই সন্দেহ করতে পারেন। তবে তা সত্য নয়।