প্রতিনিধি ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১২:০২:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে একদিকে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে বিনাশ হচ্ছে ফসলি জমি। কমছে ফসলি জমির পরিমাণও। এছাড়া উঁচু জমি গর্তে পরিণত হওয়ায় সেচ কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষকরা পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে একাধিক বার। কিন্তু এরপরও কোনো সুরাহা মিলছে না।
সম্প্রতি ওই ইউনিয়নের ইনা ব্রিকস্’র পূর্ব দিকে স্থানীয় নুর মোহাম্মদ চৌকিদারের ছেলে বশির চৌকিদার ৪০ শতাংশ ফসলি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে মাছের ঘেড় তৈরীর কাজ শুরু করেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে গভীর মাছের ঘেড় তৈরী করছেন বশির চৌকিদার। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের ম্যানেজের চেষ্টা চালায় বশির। উপস্থিত সংবাদকর্মীরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল মতিন খানকে অবহিত করেন। এরপরেও বেশ কয়েক দফায় সংবাদকর্মীদের ম্যানেজের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এভাবে পুকুর খনন চলতে থাকলে আবাদি জমি আশঙ্কাজনক হারে কমবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, একের পর এক খনন করা পুকুরে গিলে খাচ্ছে ফসলি জমি। আর অধিকাংশ মাটি ট্রলির মাধ্যমে স্থানীয় ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবারহ করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বাড়ে জনদুর্ভোগ।
কৃষকদের অভিযোগ, নানাভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে এসব পুকুর খনন কাজ। এক শ্রেণির দালালচক্র কৃষকদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ৮-১০ বছরের জন্য পুকুর খননের কাজে জমি ইজারা নিচ্ছেন। আবার ইজারা দিতে না চাইলে জমির মালিকদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। রাজি না হলে জোর করে রাতারাতি পুকুর খনন করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। বারবার অভিযোগ জানালেও প্রশাসন নির্বিকার।
কৃষক আদম আলী জানান, যে হারে পুকুর খনন হচ্ছে তাতে ফসলি মাঠ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমার ফসলি জমির পাশে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে পানি নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জমির উর্বরতা হারাচ্ছে।
জানতে চাইলে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উত্তম ভৌমিক বলেন, কৃষি জমি সুরক্ষায় আইন আছে। তবে শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করা যাবে না। পুকুর খনন বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। না হলে অচিরেই এই উপজেলার খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল মতিন খান বলেন, অনুমতি ছাড়া কেউ বন্দোবস্ত জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবে না। পুকুর খনন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’