প্রতিনিধি ৩ অক্টোবর ২০২৪ , ২:০১:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরকউয়া ইউনিয়নের কুন্ডু বাড়ি এলাকায় খাল বিল ও পুকুরের মধ্যে ‘আত্মঘাতী ড্রেজার’ বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে ধসে যাচ্ছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা এবং হুমকির মুখে পড়ছে ইউনিয়নের পরিবেশ।
স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এসব ড্রেজার দিয়ে গ্রামাঞ্চলের খাল, বিল ও পুকুর থেকে যত্রতত্র ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। ড্রেজার মালিকরা বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে আসছে এ অবৈধ কারবারটি।
আবার এসব ড্রেজার দিয়ে উত্তোলনকৃত বালুর বেশিরভাগই স্থানীয়রা কম খরচে এবং সহজ পদ্ধতিতে বালু পাওয়ায় বসতবাড়ি নির্মাণেও অনেকে পরিবেশ বিধ্বংসী এই ড্রেজার ব্যবহার করছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করলেও তা কোনো কাজে আসছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চরকাউয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এভাবে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজ চলমান রয়েছে। অবৈধ মেশিনগুলোর মালিকরা ঘুরে ঘুরে গ্রামের পরিত্যক্ত খাল, ডোবা ও পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছে।
চরকউয়া ইউনিয়নের কুন্ডু বাড়ি সংলগ্ন অন্ধির দিঘী থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় রাজিব মিরা, রিপন, লিওন, জাহাঙ্গীর ও পুুকুরের মালিক আনোয়ার সিকদার।
এ বিষয়ে রাজিব মিরা জানান, আমি এর সাথে জড়িত নই। এলাকার ভাই-ব্রাদাররা এটা চালায়। সংবাদ প্রকাশ করা দরকার নেই। আমি ওদের সাথে কথা বলে আপনাদের (সংবাদকর্মী) বিষয়টি দেখবো।
পুুকুরের মালিক আনোয়ার সিকদার বলেন- রাজিব মিরা, রিপন, লিওন, জাহাঙ্গীর আমাদের এখানের মসজিদের জমি ভরাট করার জন্য আমার পুকুরে আত্মঘাতী ড্রেজার বসিয়েছে। তারা ফুট প্রতি ৬ টাকা করে নেবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আত্মঘাতী ড্রেজার রয়েছে। ডাক পড়লেই মেশিনপত্র নিয়ে গ্রামের আনাচে-কানাছে ছুঁটে যাচ্ছে ড্রেজার মালিক-শ্রমিকরা। সম্প্রতি আত্মঘাতী ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বতসবাড়ি দেবে যাওয়ার বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান- মাটির নিচ থেকে কাদা বালু উত্তোলন করা হলে ভূমির উপরিভাগ ঠিক থাকলেও তলদেশের ব্যাপক জায়গা নিয়ে ফাঁকা হয়ে যায়। এভাবে প্রতিনিয়ত চলতে থাকলে বড় বড় স্থাপনা, রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক এলাকা দেবে যেতে পারে। এটা পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এছাড়াও কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হলে কৃষি জমিগুলো অকৃষিতে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব উল্লাহ মজুমদার জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।