প্রতিনিধি ৩০ জুলাই ২০১৯ , ৫:১৫:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি,
এক ঝুড়ি লাউ। কিছু কাঁচা কলা ও পেপে নিয়ে পৌরশহরের মদন মোহন সেবাশ্রমে যাওয়ার সড়কটিতে বসেছেন এক কৃষক কাম বিক্রেতা। খাজনা আদায়কারীর ভয়ে নাম লিখতে মানা করলেন। জানালেন, খাজনা ২০০ টাকা। এছাড়াও ঝাড়–দার পাঁচ টাকা। পাহারাদার ১০টাকা। হিজড়া ১০টাকা। শহরে ভ্যান ঢোকাতে ৫০ টাকা। শ্রমিক ইউনিয়নের ২০ টাকা দিতে হয়। এরপরে ব্যবসা। যা দিয়ে কোনমতে সংসার সামাল দেন। কলাপাড়া পৌরশহরের কাঁচামাল বিক্রির জন্য এখন গ্রাম থেকে আসা সবজি-শাকসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী কৃষকদের লঞ্চঘাটের পশ্চিম প্রান্ত থেকে মদনমোহন সেবাশ্রমের সামনের গলিতে বসতে হয়। অন্তত ৫০-৭০ বিক্রেতার এমন দশা। যেসব মুদি-মনোহরি দোকানের সামনে বসতে হয়। তাদের কাউকে কাউকে বাড়তি টাকা দিতে হয়। কেউ আবার গালাগাল দেয়। কৃষক হাইলা-কামলা শ্রেণির এসব শাক-সবজি উৎপাদনকারী মানুষ উৎপাদিত পণ্য খুচরা বাজারে বিক্রি করতে এসে ঝক্কি-ঝামেলা আর চাঁদাবাজির শিকারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। রাস্তা আটকে বসায় ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়ছেন। জামাকাপড় নষ্ট হয় ময়লা পানিতে। ধাক্কাধাক্কি করে চলতে হয়। নারী ক্রেতারা বিব্রতকর পরি¯ি’তির শিকার হন। পৌরসভার নির্দিষ্ট একটি বিরাট টলশেড রয়েছে। অন্তত ৫০ দোকিানি এখানে বসতে পারেন। সেটি খালি পড়ে আছে। আবার কোন কোন দোকানি টলশেড দখল করে আলুসহ বিভিন্ন মালামাল রেখেছে। গ্রাম থেকে আসা খুচরা বিক্রেতারা এ টলশেডটি ব্যবহারের সুযোগ পেলে রাস্তা আটকে চরম দুরাব¯’ায় দোকান করতে হতোনা বলে তাদের দাবি। আর ক্রেতাদেরও ভোগান্তি লাঘব হতো। পৌরসভার বাজার ইজারাদার এসব ছোট ছোট বাজারগুলো সাবলিজ দিয়েছে। একদিকে খাঁজনা আদায়ের নামে নানা খাতে চলছে ফ্রি-স্টাইলে চাঁদাবাজি। শহরের কোথাও নেই ইজারাদারের কোন টোল রেট। অপরদিকে রাস্তাঘাটে দোকান বসাতে গিয়ে বিক্রেতারা হয়রানির শিকার হন। খুচরা শাক-সবজি বিক্রেতারা টলশেড ব্যবহারে পৌরসভাসহ উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। খুচরা ছাড়াও মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর রাস্তাঘাট দখল করে কাঁচামালের দোকান বসানো হলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রয়েছে নির্বিকার। মাছ মাংসের বাজারও বসছে রাস্তায়। একদিকে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে খাজনা আদায়ের নামে চাঁদাবাজি অপরদিকে রাস্তায় দোকানপাট। যেন নৈরাজ্য চলছে। পৌরকর্তৃপক্ষ বহুদফা বিষয়টি নিরসনের কথা বলেছেন, কিš‘ কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাই ভোগান্তি ও অনিয়ম বন্ধ হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান জানান, বিষয়টি দেখে পরবর্তি ব্যবস্থা নিবেন।