Uncategorized

গোমা খেয়াঘাটে ইজারাদারের খামখেয়ালিতে অতিষ্ট সাধারন মানুষ !

  প্রতিনিধি ৬ মে ২০২১ , ৭:৪৩:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

  • তালাশ প্রতিবেদক :- সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার গোমা খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হয় যাত্রীরা এমন অভিযোগ নতুন নয়।

সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ৩ টাকা টোলের পরিবর্তে আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা করে। শুধু তাই নয় রাত হলে দু’পাড়ের মানুষকে জিম্মি করে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করে ইজারাদার। খেয়াঘাটে টোল আদায়ের চার্ট টানানোর নিয়ম থাকলেও কোথাও নেই চার্ট টানানো। প্রতিবাদ করলে ইজারাদারের পেটোয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম করে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই।

উপজেলা প্রশাসন দু একবার অনিয়মের অভিযোগে ইজারাদারকে আর্থিক জরিমানা করলেও পরবর্তিতে আরও বেপরোয়া হয়ে যায় ইজারাদার।

জানা গেছে, বাংলা চলতি সনের জন্য গোমা খেয়াঘাটের ইজারা পান উপজেলার গোমা এলাকার বাসিন্ধা ফারুক হোসেন সিকদার । সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জনপ্রতি ৩ টাকা, মোটরসাইকেল ১২ টাকা ও বাইসাইকেল ৫ টাকা করে পারাপারের কথা রয়েছে। আর এ টোল চার্ট প্রতিটি খেয়াঘাটের দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু গোমা খেয়াঘাটে টোল চার্ট টানানো নেই। পূর্বপারে একটি সাইনবোর্ড থাকলেও সেখানে কোন তালিকা লেখা নেই।প্রতিদিনই এ খেয়া দিয়ে বাউফল ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

গোমার ফারুক ঘাট ইজারা নেয়ার পরই সরকারি এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনপ্রতি ৩ টাকার পরিবর্তে দশ টাকা করে টোল আদায় করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর বিশেষ দিবস, মেলা ও ঈদে সময় জনপ্রতি ২০ টাকা করে আদায় করে।

মটরসাইকেল পারাপারে ১২ টাকার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে। আর বাইসাইকেল ৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতের মালামালেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়।

পেয়ারপুর বাজার এক ব্যবসায়ী আজকের তালাশকে জানান, গোমা খেয়া ঘাট ফারুক ইজারা নেয়ার পরই খেয়া ঘাটের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে।প্রায়ই এখানে যাত্রী সাধারনের সাথে বাক বিতন্ডা, হাতাহাতি ,মারামারি পর্যন্ত গড়ায়। তিনি বলেন, টোল আদায়ের জন্য বেশির ভাগ সময় বসেন ফারুকের পার্টনার আলম সরদার। অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হতে হয় ফারুক ও আলম বাহিনীর হাতে। উভয় পারের মানুষকে জিম্মি করে টোল আদায় করছে।

দুধলের মুন্নি বেগম বলেন, কোনো রোগী নিয়ে আসলে খেয়া দিয়ে তাড়াতাড়ি পার হওয়া যায় না। ট্রলার বোঝাই লোক না হলে খেয়া ছাড়ে না। আর ছাড়তে বললে বলে ৩শ’ টাকা দিলে খেয়া ছাড়া হবে। অনেকে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বাধ্য হয়েই তাদের মানিত টাকা দিয়ে পারাপার হয়।

চরামদ্দি এলাকার আলম মহাজন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে চাঁদা দাবির মামলা দেয়ার হুমকি দেয় তারা। এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এজন্য এখন আর মানুষ প্রতিবাদ করে না।

এ ব্যাপারে গোমা খেয়াঘাটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টোল আদায়কারী বলেন, বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছি।এছাড়া প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে হয় তাই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি। সবাই জানে আমরা বেশি টাকা নেই এর কম নিলে লোকসান হবে। আর দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট টানানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। কত টাকা দিতে হবে তাতো মুখেই বলছি-টানাতে হবে কেনো। বাকেরগঞ্জের এক সাংবাদিক ভাড়া ঠিক করে দিয়েছেন আপনাদের সমস্যা কি।কিন্তু সাংবাদিকের নাম তিনি বলতে রাজি হন্নি । বাংলাদেশের কোথাও সঠিক নিয়োমে খেয়াঘাট চলেনা আমরাও চালাইনা।সাধারন ব্যাপার নিয়ে কথা বলিয়েন না।

এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার জানান, বাকেরগঞ্জের প্রায় সব খেয়াঘাটেই অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

আরও খবর

Sponsered content