প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২২ , ১০:২৩:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
সারা দেশের মতো বরিশাল বিভাগেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে ১৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৩৪ দশমিক ২৭।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বরিশাল প্রেক্ষাপটে সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমে অবনতি হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা পরিস্থিতিকে জটিল করে দিতে পারে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে- গত এপ্রিল ও মে মাসে বিভাগের করোনা সংক্রমণ তলানিতে নামলেও জুনের শেষে এসে তা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই দিনে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বিভাগে শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ১৪ জুন একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। শুক্রবার তা বেড়ে ৫৯ দশমিক ৭৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ বিভাগে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল। গত জানুয়ারিতে বিভাগের শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩১৭ জন। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৮৮৪ জন এবং মার্চে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৪৪ জনের। কিন্তু এপ্রিলে তা কমে হয় মাত্র ৬ জন এবং মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩ জনে। এ ছাড়া জুনে বিভাগে ১৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কোনো মৃত্যু ছিল না। বিভাগে এযাবৎ করোনায় মারা গেছেন ৬৯০ জন।
স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায় ৫২ জন। এই জেলায় ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে আর শনাক্ত হার ৮৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভোলায় ৩ জন, পটুয়াখালীতে ২ জন, পিরোজপুরে ৭ জন, ঝালকাঠিতে ৫ জন ও বরগুনায় ২ জন শনাক্ত হয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমে অবনতি হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা পরিস্থিতিকে জটিল করে দিতে পারে। এ জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে কোনো রোগীর মধ্যে এ রকম উপসর্গ থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হয়।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মাস্ক পরার ব্যাপারে এখন যেভাবে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, সেটাও আশঙ্কার বিষয়। সামনে পবিত্র কোরবানির ঈদ। এখন গরুর বাজারগুলোয় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হবে। ঈদে অনেক লোক বাসে-লঞ্চে গ্রামে ফিরবে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার ওপর জোর দিতে পরামর্শ দেন তিনি।’