প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২৪ , ১২:৩৭:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ॥ বিএনপি’র গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরিশাল জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। একই সঙ্গে শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও বিএম কলেজ শাখা ছাত্রদলেরও কমিটি ঘোষণা হচ্ছে। জেলা ও মহানগর পর্যায়ে ছাত্রদলের কর্মকাণ্ড থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদলের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এই ইউনিটগুলো আগে মহানগরের অধীনে হলেও এখন কেন্দ্রই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ইউনিট কমিটি ঘোষণা করবে। একই সঙ্গে বরিশাল মহানগরের আওতাধীন অনেক ওয়ার্ড জেলার আওতাধীন উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়েও কোনো কমিটি নেই। এ অবস্থায় বরিশাল জেলা-মহানগর ছাত্রদলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা ও ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি চালু করার জন্য নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে। নতুন নেতৃত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে সংগঠনকে শক্তিশালী করা।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, সাংগঠনিক অদক্ষতার কারণে কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল নেতৃত্বাধীন কমিটি বিলুপ্ত করে গত ১লা মার্চ রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সভাপতি এবং নাছির উদ্দীন নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে সাত সদস্যের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পরই সারা দেশে সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল জেলা-মহানগর ও বিভিন্ন ইউনিট কমিটির ওপর নজর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রদলে এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করতে চাই। এ জন্য জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ইউনিটের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এ জন্য বেশ কয়েকটি জেলা-মহানগর ইউনিট ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি ঘোষণার লক্ষ্যে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ‘শিগগিরই এর প্রতিফলন দেখা যাবে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বরিশাল জেলা ও মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক প্রতিবেদন আমরা প্রস্তুত করেছি। পাশাপাশি কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক সাংগঠনিক কর্মতৎপরতা আরও বাড়ানো যায় সেই পরিকল্পনাও নিয়েছি। ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, মামলা ছাড়া ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারপরও ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের পাওয়া যেত। এখন সেই নেতাকর্মীদের আগ্রহেও ভাটা পড়েছে। এর সঙ্গে আছে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও পছন্দ-অপছন্দ।
বরিশাল জেলা-মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো কার্যক্রম নেই। এমন প্রেক্ষাপটে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। ছাত্রদল সূত্র জানায়, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০০৩ সালে। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন বি এম কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মরহুম মশিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জিএম আতায়ে রাব্বি। এ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০১১ সালে ২২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
তবে ২২ জনের ওই আহ্বায়ক কমিটি শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। এরপর ২০১৮ সালের ১৯শে আগস্ট কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে গঠন করা হয় বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের ৫ সদস্যের ‘সুপার ফাইভ’ কমিটি। এই কমিটির সভাপতি করা হয় রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. হুমায়ূন কবিরকে। সুপার ফাইভ কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছিল। ২০২২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটি এখন পর্যন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে তারা ইউনিট কমিটি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ। তাই তাদের নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে।
২০১৮ সালে মাহাফুজুল আলম মিঠু সভাপতি, তারেক আল ইমরান সহ-সভাপতি, কামরুল আহসান সাধারণ সম্পাদক, তৌফিকুল ইসলাম ইমরান ও সোহেল রাঢ়িকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সেই কমিটির তিন বছর পর ৪৮৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ২০২১ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ৪৮৭ সদস্যবিশিষ্ট বরিশাল জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ওই কমিটির সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুকে পদ বাণিজ্যের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।