প্রতিনিধি ১৪ মার্চ ২০২০ , ৪:৫৩:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার’ এই স্লোগানকে সামনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম বার প্রায় অনুষ্ঠানেই বলে থাকেন, পুলিশের কাছ থেকে যেন কোন সাধারন মানুষ হয়রানীর শিকার না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ৮ তারিখ রাতে বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক এলাকায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি লাউ গাছে গোড়ায় দুটি গাঁজা গাছ আছে এমন সংবাদ পায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি পুলিশের এসআই হেলালুজ্জামান ঐ লাউ গাছের মালিক স্থানীয় মোঃ নুরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে ডিবি পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আনোয়ার হোসেন ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক হেলালুজ্জামান জমির মালিক নুরুল ইসলামের কাছে জানতে চায় এই গাছের মালিক কে? তখন নুরুল ইসলাম গাছের মালিক তিনিই বলে জানান। তখন লাউ গাছের গোড়ায় থাকা ছোট্ট দুইটি গাঁজা গাছ দেখিয়ে জানতে চায় এই দুটি কি গাছ? গাছ দুইটি ফুল গাছ বলে জানান নুরুল ইসলাম। এমন সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ছুটে আসে স্থানীয় মসজিদের মুসুল্লি সহ সাধারন মানুষ। পরিস্থিতি দেখে উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন ডিবি পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক হেলালুজ্জামান। উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুরুল ইসলামকে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাবে এমন সংবাদে উত্তেজিত হয়ে উঠে মসজিদের মুসুল্লি সহ সাধারন মানুষ। এক পর্যায়ে পুলিশের অনুরোধে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আশা হয় নুরুল ইসলামকে। উপ পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জাহাঙ্গীর মল্লিক সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি ডিবি) নরেশ চন্দ্র কর্মকারকে এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করার জন্য নির্দেশ দেয়। স্থানীয় জনতা জানায় নুরুল ইসলাম ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত আদায় করেন এবং তিনি জীবনে কোনদিন পান কিংবা সিগারেট খায় নি। স্থানীয়দের জবাব উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে নুরুল ইসলামের পুত্র সাংবাদিক এইচ আর হীরার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বরিশাল ক্রাইম নিউজে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর দৃষ্টি পরে বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র। উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি মেইল বার্তা দিয়েছে ডিবি পুলিশ। এদিকে নুরুল ইসলাম জানান ‘আজ শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরের দিকে আমার বাসায় বেশ কয়েকজন লোক এসে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এরপরে আমার নিকট ৫ হাজার টাকা দাবী করে এবং দাবীকৃত টাকা না দিলে আমার সম্মানের হানি ঘটাবে বলেও তারা হুমকি প্রদান করে। আমি অপরাধী না নিরাপরাধ এটা প্রমাণ করবে প্রশাসন, আমি বা আমার পরিবারের কারো সাথে পুলিশের আর্থিক কোন লেনদেন হয় নাই। আমার বিরুদ্ধে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে আমি এই মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো। আমার অনেক সম্মান হানী করেছে এই সংবাদের মধ্যে।’ এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার জানায়, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছি, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অপরদিকে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি ডিবি) নরেশ চন্দ্র কর্মকার স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো ডিবি পুলিশের মেইল বার্তাটি হুবহু তুলে ধরা হলোঃ কতিপয় অন-লাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ সংক্রান্তে প্রতিবাদ ঃ-গত ০৮-০৩-২০২০খ্রিঃ ২২.৩০ ঘটিকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে এসআই/মোঃ হেলালুজ্জামান ও তার টিম কোতয়ালী মডেল থানাধীন ২২নং ওয়ার্ড জিয়া সড়কস্থ মদিনা মসজিদ সংলগ্ন মোঃ নূরুল ইসলাম (৫৫) এর লাউ, টমেটো ও বেগুন ক্ষেত হইতে ০২টি গাঁজার গাছ উদ্ধার করে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় জমির মালিক মোঃ নূরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে আনা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ এবং এলাকায় গোপন অনুসন্ধানে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদকের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট তথ্য প্রমান না পাওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে মোঃ নূরুল ইসলামকে তার ছেলে মোঃ নূরুজ্জামান হিরার নিকট বুঝাইয়া দেওয়া হয়। উক্ত বিষয় বরিশাল ক্রাইম নিউজসহ কতিপয় অন-লাইন পত্রিকায় ডিবি পুলিশকে হেয় প্রতিপন্ন করে মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করে। আমি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মূখপাত্র হিসেবে উক্ত বিভ্রান্তিকর ও অসত্য সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।