প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২০ , ১০:৩৬:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
নাঈম ইসলাম:
কোন প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই পুরো বিশ্বকে আজ অচল করে দিয়েছে করোনা নামক একটি ভাইরাস ।কেউ কেউ আবার ৩য় বিশ্বযুদ্ধের থেকেও বড় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন। তবে এই ভাইরাসটির প্রতিকার না মিললে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাসহ অনেক প্রাণহানির আশংকাই যেন তারিয়ে বেরাচ্ছে সকলকে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৬৪৭৮৫ মানুষ মারা গেছে ।চীনের উহান শহর থেকে বিস্তার লাভ করা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির মহামারী ব্যাধী থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও।বাংলাদেশে এপর্যন্ত মোট ৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৯ জন মারা গেছে। দেশকে করোনা থেকে মুক্ত রাখার জন্য দেশের সকল সরকারি -বেসরকারি অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণাসহ অঘোষিত লক ডাউন করে সবাইকে নিরাপদে নিজ গৃহে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছেন সরকার।এতে করে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুরসহ নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো।তবে সরকারিভাবে এদের অনুদান বা ত্রান দেয়ার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন অসহায় এ মানুষগুলোর পাশে।হয়তো একমুঠো আহারের জন্য অসহায় এ মানুষগুলো ত্রান নিতে ছুটছেন ত্রানের পিছু পিছু। তবে আফসোস এই করোনা মহামারীতে ত্রান বিতরণ নিয়েও হচ্ছে লোক দেখানোর প্রতিযোগিতা।কে কতজনকে সাহায্য করছে বা করছেনা তা নিয়ে সোস্যালমিডিয়া চলছে প্রাচার প্রচারণা।কেউ আবার ত্রানের নামে সেলফি ফটোশুটেও ব্যস্ত সময় পার করে ফেইসবুকের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন সে বড় একজন দান বীর। অথচ এই মহামারীতে কোন অসহায় ব্যক্তিকে গোপনে সাহায্য করাটা হতে পারতো আত্মতৃপ্তির মূলমন্ত্র। তাহলেই মুক্তি পেত মানবতা,বোঝা যেত মানুষ মানুষের জন্য।তবে আফসোস যখন আপনি আমি কেউকে সাহায্য করে জানান দিচ্ছি আমি সাহায্য করতেছি।আর অসহায় ব্যক্তি বা পরিবারটিকে সাহায্য দিয়ে নিজের কৃতিত্ব হাজির করতেছি,এটাকে তো অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ানো বা সাহায্য করা নয়।বরং আপনি আমি ওই অসহায় পরিবারটিকে ছোট করে নিজের দানকে লোকসমাজে দাম্ভিকতার সাথে দেখিয়ে বেড়াচ্ছি। আবার অনেক স্থানেই দেখা গেছে ত্রাণদানকারী দু-চারজনকে ত্রাণ দিয়ে ফফটোশুট করেই লাপাত্তা অথচ ত্রাণ নিতে ওখানে উপস্থিত ছিলো পঞ্চাশ জনের মতো।তাহলে ত্রান দেয়ার নামে কেন এই বেহায়াপানা ! আসুন সবকিছু বাদ দিয়ে এই মহামারীতে অসহায়দের পাশে মন থেকে দাঁড়িয়ে সুষ্ঠ বন্টণের মধ্য দিয়ে তাদের মুখে তুলে দেই দুমুঠো খাবার,যাতে অন্তত কেউকে না খেয়ে মরতে না হয়।তাহলেই ফিরে পাবে দানের আত্মতৃপ্তি,ফিরে পাবে মানবতার মুক্তি।