প্রতিনিধি ১৪ মার্চ ২০২০ , ৬:০৯:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদকঃ
বরিশালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে নতুন প্রজেক্টর রাখার খাঁচা বানাতে ভূতরে বিলের অভিযোগ।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেয়ার জন্য শ্রেনী কক্ষে প্রজেক্টর রাখার প্রতিটি খাঁচা তৈরিতে ৪ হাজার টাকা বিল নেয়া হচ্ছে বলে জানান একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ। ঐ সমস্ত খাঁচা তৈরিতে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয় বলে জানিয়েছেন খাঁচা তৈরি ওয়ার্কসপ মালিক শাহাবুদ্দিন। আর বিভিন্ন কৌশলে এ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে অভিযোগের তীর বরিশাল নগরীর বিনা পানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এইচ.এম আব্দুল হাই, একই বিদ্যালয়ের পার্থ সাহা ও ভাটিখানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পলিন্স। নগরীর বিনা পানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এইচ এম আব্দুল হাই জানিয়েছেন, আমার বিদ্যালয়েও খাঁচা বসানো হয়েছে। আর প্রজেক্টর রাখার খাঁচা তৈরিতে ৪ হাজার টাকা তিনি নিজে খরচ করেছেন দাবী করলেও পরে ভোল পাল্টে বলেন ১৫/২৫ শত টাকার মত খরচ হয় খাঁচা তৈরীতে। অপর দিকে দুজন সহকারী শিক্ষক একই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিনা পানি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পার্থ সাহা বলেন, শ্রেনীতে প্রজেক্টর রাখার বিষয় অগের প্রধান শিক্ষক এইচ এম আব্দুল হাই স্যার ভালো বলতে পারবেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রজেক্টর লাগানো বাবদ স্কুল থেকে কোন টাকা নেইনি। ওয়ার্কসপ মালিক শাহাবুদ্দিন আমার নাম কেন বললেন তা আমার জানা নেই। ভাটিখানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পলিন্স’র সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমার স্কুলে প্রজেক্টর রাখার খাঁচা তৈরিতে ৪ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে। এসকল বিষয় ওয়ার্কসপ মালিক শাহাবুদ্দিন বলেন, শিক্ষক এইচ এম আব্দুল ‘হাই স্যার, পার্থ স্যার ও পলিন্স স্যার আমার এখানে খাঁচা তৈরির অর্ডার দিয়েছেন। আমি তাদের কথা মত বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তা লাগিয়ে দিয়েছি। তবে ২৫শত টাকার খাঁচা কম লাগানো হয়েছে। ১৫শত টাকার খাঁচা বেশি লাগানো হয়েছে। ম্যামোতে কোন টাকা উঠানো নেই আমি দিতে চাই ছিলাম তখন পলিন্স স্যার উঠাতে দেননি। ঠিক ওই দুজন স্যার একই কাজ করেছেন। এদিকে অভিযোগ রয়েছে পলিন্স নিজের বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিদ্যালয় প্রজেক্টর রাখার খাঁচা থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক বিদ্যালয়ে কোন ক্যাশ মেমো দেয়া হয়নি। নাম বলতে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক জানান, আমার স্কুলে প্রজেক্টর রাখার খাঁচা তৈরিতে ৪ হাজার টাকা পলিন্সকে দেয়া হয়েছে কিন্তু কোন ক্যাশ মেমো দেননি। তাকে ফোন দিলে টালবাহানা শুরু করেন। এসকল বিষয় জানতে চাইলে পলিন্স বলেন, আমার স্কুলে প্রজেক্টর রাখার খাঁচা তৈরিতে ৪ হাজার টাকা ব্যায় করেছি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু আমার স্কুলে খাঁচা বসানো হয়েছে। আমার দেখাদেখি অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন কোথা থেকে বানানো হয়েছে ? আমি শুধু ওয়ার্কসপ মালিকের মোবাইল নাম্বার দিয়েছি। আপনি চাইলে মোবাইল নাম্বার নিতে পারেন। তিনি এও বলেন “ভাই আপনি কি বরিশালের ছেলে ? যদি বরিশালের হন তাহলে তো আমাকে আপনার চেনার কথা। তা ছাড়া আমি এক সময় বরিশাল বিএম কলেজ ছাত্রলীগ করেছি”। এ বিষয় উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাছিমা আক্তারের মুঠো ফোনে একাধীকবার ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার সেল ফোনে একটি বার্তা পাঠালেও সেখান থেকে কোন উত্তর মেলেনি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ না করায় তারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন লোকজন দিয়ে এই প্রতিবেদককে ফোন দেয়া হয়। একজন শিক্ষক যিনি মানুষ গড়ার কারিগর। তারা নিজেরাই যদি দুর্নীতি করেন তাহলে তারা শিক্ষার্থীদের কি শেখাবেন এমন অভিমত সচেতন নাগরিকদের।