প্রতিনিধি ৩ অক্টোবর ২০২৩ , ১১:৩৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক॥ বরিশাল নগরীর আলেকান্দা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আগেই দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম অতি গোপনে পছন্দের প্রার্থী তার গ্রামের বাড়ি খুলনার লোক রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপন কুমার রায়কে চাকুরি পাইয়ে দিতে একাধিকবার নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে তিন তিনবার নিয়োগ পরীক্ষা আহবান করেছেন।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত ধুরন্ধর ব্যক্তি, তিনি এরআগেও বিদ্যালয়ের অন্যান্য নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে, তিনি সুকৌশলে তার গ্রামের লোক স্বপন কুমার রায়কে নিয়োগ দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ভুলভাল বুঝিয়ে স্বপন কুমার রায়কে নিয়োগের জন্য পায়তারা করছেন বলে একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
অনৈতিক ভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে স্বপন কুমার রায়কে চাকুরি পাইয়ে দিতে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম ২০/০৫/২০২৩ তারিখ অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করা মোঃ রফিকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বলেন, আপনি প্রথম হওয়ার পরও নিয়োগ দিতে পারলাম না। কেন স্যার? জবাবে বলেন, আমার এখানে ইংরেজী শিক্ষক দরকার। পরে আবার অত্র বিদ্যালয়ে নিয়োগ আহবান করা হলে রফিকুল ইসলাম পুনরায় আবেদন করেন। তাকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য কার্ড পর্যন্ত ইস্যু করা হয়। কিন্তু ২৭ সেপ্টেম্বর ফোনে রফিকুল ইসলামকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম। প্রধান শিক্ষক বলেন, আপনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে পুনরায় প্রথম হবেন সে ক্ষেত্রে আবার আমার নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে হবে। কারণ, আমার এখানে ইংরেজী শিক্ষক দরকার। তখন শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, অন্য কেউ প্রথম হলে কি হবে? প্রধান শিক্ষক বলেন, পরীক্ষা বাতিল করব।
কিন্তু বরিশাল নগরীর একাধিক শিক্ষক বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ইংরেজী শিক্ষক বাধ্যতামূলক নয়, এটা বিধিবহির্ভূত।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছ থেকে জানা যায়, আমরা যাতে আবেদন করতে না পারি সেজন্য প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যখনই আমরা প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম স্যারের কাছে জানতে চেয়েছি, তিনি বলতেন এখনো ছাড়পত্র আনতে পারিনি, ছাড়পত্র না এনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কি ভাবে প্রকাশ করবো?
এ ব্যাপারে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের নিকট মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। আমি কোন প্রার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করি নাই।
অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন হাওলাদার জানান, আমাদের বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক নাই। এনটিআরসি’র কাছে বারবার চাহিদা পত্র পাঠালেও কোন কাজ হয়নি। তাই একাধিকবার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে বারবার পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ইংরেজি শিক্ষক বাধ্যতামূলক কিনা এবং এই নিয়ম বিধিবহির্ভূত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ম্যানেজিং কমিটির ইচ্ছা। আর প্রধান শিক্ষক কাউকে ফোনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন কিনা আমি জানিনা।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ব্যাপারটি আমি জানিনা। কারো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’’